২৩ বছর ধরে বিনামূল্যে কুরআন বাইন্ডিং করছেন ওমর
আলজেরিয়ার ৮৬ বছরের বৃদ্ধ হাজি ওমর বুলকাফুফ ১৯৯৫ সালে ‘আল-বেলায়া’ প্রেস থেক অবসর নেন। অবসরের পর থেকে তিনি ব্যাটেনা শহরে তার নিজ ঘরে বিনামূল্যে পবিত্র কুরআনের পুরনো পাণ্ডুলিপি সংস্কার এবং বাইন্ডিং করে আসছেন।
হাজি ওমর বুলকাফুফ ১৯৫৭ সালে ‘বুনা’ প্রেসে চাকরি নেন এবং সেখানে তিনি বাইন্ডিং-এর কাজ শেখেনে। এরপর তিনি শায়বানী এবং পরবর্তীতে আল-বেলায়ায় চাকরি করেন। বর্তমানে তিনি তার অভিজ্ঞতাকে পবিত্র কুরআনের পুরনো পাণ্ডুলিপি সংস্কার এবং বাইন্ডিং-এর কাজে ব্যবহার করছেন।
হাজি ওমর বলেন, আল-বেলায়া প্রেস থেক অবসর গ্রহণ করার পর আমি ব্যাটেনা শহরের আল-নুর, আল-রহমাত, ওমর এবং আল-তাকওয়াসহ অন্যান্য মসজিদ থেকে পবিত্র কুরআনের পুরনো পাণ্ডুলিপি সংগ্রহণ করে কোন মজুরি ছাড়াই সেগুলো সংস্কার এবং বাইন্ডিং করি। এই কাজ শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করছি।
বাইন্ডিংয়ের কাজে তিনি দীর্ঘ দিন ছিলেন। আর এজন্য মসজিদের পেশ ইমাম এমনকি প্রকাশনা শিল্পেরে ব্যবসায়ীদের নিকটে তিনি অতি পরিচিত লাভ করেছেন। পবিত্র কুরআনের প্রাচীন পাণ্ডুলিপি সংস্কারের জন্য তারা বিনামূল্যে কাঁচামাল সরবরাহ করেন।
অত্র এলাকায় বই বাইন্ডিংয়ের কাজ শুধুমাত্র হাজি ওমর বুলকাফুফ পারেন। তিনি তার বয়সের প্রতি দৃষ্টিপাত করে পবিত্র কুরআন সংস্কার এবং বাইন্ডিংয়ের কাজ শেখানোর জন্য যুবকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। যাতে করে তার মারা যাওয়ার পর যুবকদের মাঝে এই কাজ অব্যাহত থাকে।
তিনি শুধুমাত্র কুরআন সংস্কার ও বাইন্ডিং করেন না। বরং শহরে যেকোনো ব্যক্তি যদি তার নিকটে পবিত্র কুরআনের প্রাচীন পাণ্ডুলিপি নিয়ে যায় তাহলে তিনি সেই পাণ্ডুলিপি কোন মজুরি ছাড়াই বাইন্ডিং করে দেন।
মুবারক ইন্সটিটিউটের ক্রীড়া কোচ সালেহ নামের তার একজন বলেন, অবসর গ্রহণের পর কোম্পানি থেকে তিনি সীমিত বেতন পান। এ সত্ত্বেও আমার ওস্তাদ দুই বার হজ্বে গিয়েছেন এবং ওমরা পালন করেছেন। মসজিদের প্রাচীন পাণ্ডুলিপি সংস্কার এবং বাইন্ডিংয়ের জন্য তিনি কোন অর্থ নেন না। তিনি শুধু বলেন, সকলে যেন তার জন্য দোয়া করেন।
সালেহ আরো বলেন, ওস্তাদ হাজি ওমর বুলকাফুফ আমাকে বলেছেন, প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজের জন্য তাকে মসজিদে নিয়ে যেতে এবং মসজিদের প্রাচীন পাণ্ডুলিপিগুলো তার বাসায় নিয়ে আসতে, যাতে করে তিনি ওই পাণ্ডুলিপিগুলো সংস্কার এবং বাইন্ডিং করতে পারেন।