অনলাইন থেকে ভুলেও কিনবেন না এই ১০টি জিনিস!
অনলাইন কেনাকাটার অনেক সুবিধা। বাড়িতে বসেই দেখে নেওয়া যায় কী কী কেনা দরকার, কত দাম এরপর বাড়িতে বসেই পণ্য পাওয়া যায় হাতের মুঠোয়। কিন্তু সবকিছুরই একটি ভালো দিক এবং একটি খারাপ দিক রয়েছে। অনলাইনে কিছু পণ্য কিনতে গেলে আপনার উপকারের চেয়ে ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশি। এ পণ্যগুলো হলো-
১) আসবাবপত্র
আপনি কি ধরণের আসবাব চান, তা দেখতে পারেন একটি দোকানের ওয়েবসাইটে। কিন্তু কেনাকাটার কাজটি সারুন তাদের শোরুমে গিয়েই। কেন? ধরুন আপনি একটি সোফা কিনবেন। অনলাইনে দোকানের একটি সোফা পছন্দ হয়ে গেল। এরপর শোরুমে গেলে আপনি নিজের চোখের দেখতে পাবেন সোফায় কাঠের কারুকাজ আসলেই সুন্দর কিনা, বা এর কুশনগুলো আসলেই নরম নাকি অস্বস্তিকর। এছাড়া শোরুমে আপনি দামাদামি করারও একটি সুযোগ পাবেন।
২) বিছানার তোশক বা ম্যাট্রেস
তোশক নিয়ে অনেকেই মাথা ঘামান না। ভাবেন তোশক একরকম হলেই হলো। কিন্তু দিনের অন্তত আটটি ঘণ্টা এই তোশকে কাটানো হয়। সুতরাং এর পেছনে কিছুটা মনোযোগ দেওয়া তো জরুরি। আসবাবের মতোই অনলাইনে প্রথমে দেখুন কোনটি আপনার পছন্দ হয় এবং দামে মানায়। এরপর সেই দোকানে গিয়ে দেখুন তা আপনার মনের মতো কিনা। তা কি খুব নরম? খুব বেশি শক্ত? এসব দেখেশুনে কেনাই ভালো।
৩) অপরিচিত প্রসাধনী
আগে কখনো ব্যবহার করেননি, এমন প্রসাধনী অনলাইন থেকে কেনা উচিৎ নয়। হ্যাঁ, অনেকদিন ধরেই একই ব্র্যান্ডের মাসকারা ব্যবহার করছেন, তা অনলাইন থেকে কিনতেই পারেন। কিন্তু নতুন একটি ব্র্যান্ডের ফেসপাউডার, আইশ্যাডো অনলাইন থেকে কেনার আগে ভাবুন। হয়তো ডেলিভারির পর দেখবেন আপনি যে রং চাচ্ছিলেন, আসলে তা মোটেই সে রং নয়। এ ধরণের প্রসাধনী দোকানে গিয়ে কিনুন।
৪) পোশাক ও জুতো
অপরিচিত কোনো ব্র্যান্ড থেকে পোশাক কিনলেন অনলাইনে, পোশাকটা ঠিক ফিট হলো না, এরপর তা আপনি ফেরত দিতেও পারবেন না। একই কথা জুতোর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। বিশেষ করে জুতো পায়ে ফিট না হলে আপনি ব্যথা পেতে পারেন, দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। এ কারণে পরিচিত ব্র্যান্ড না হলে পোশাক অনলাইন থেকে কেনা উচিৎ নয়। জুতোটা দোকানে গিয়েই কিনুন।
৫) ব্যবহৃত গাড়ি
অনলাইনে একটি গাড়ির ব্যাপারে অনেক সুন্দর করে বর্ণনা লেখা থাকতে পারে। কিন্তু তা চোখে না দেখে এবং চালিয়ে না দেখলে আপনি কখনোই বুঝবেন না তা আসলে ভালো অবস্থায় আছে নাকি ঝরঝরে হয়ে গেছে। অনলাইনে কেনার আগে অবশ্যই গাড়ি ভালো করে খুঁটিয়ে দেখে, চালিয়ে এবং একজন মেকানিক দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিৎ।
৬) ফ্রিজ-টিভি
ফ্রিজ, টিভি, এসি, ওয়াশিং মেশিন, ওভেন- এসব ঘরোয়া পণ্যের পেছনে প্রচুর খরচ হয়। এ কারণে অনলাইন হোক বা শোরুম, কেনার সময়ে চিন্তাভাবনা করে নিন। অনেক সময়ে অনলাইনে কিনলে তার ডেলিভারি খরচ অতিরিক্ত হতে পারে। এমনকি আপনি যা আশা করছিলেন, তার মান তেমন ভালো নাও হতে পারে। এ কারণে শোরুম থেকে দেখেশুনে নেওয়াই ভালো।
৭) বাদ্যযন্ত্র ও সাউন্ড সিস্টেম
আপনার সন্তানের শখ মেটাতে অনলাইন থেকে সস্তা একটা গিটার কিনে দিতেই পারেন। এতে দোষের কিছু নেই। কিন্তু আপনি যদি ভালো মানের বাদ্যযন্ত্র কিনতে চান, তার পেছনে বেশ খরচ হবে। এমন দামি একটি পণ্য অনলাইন থেকে কেনা ঠিক নয়। বেশিরভাগ বাদ্যযন্ত্রই হাতে তৈরি হয়। এগুলো কেনার আগে বাজিয়ে না নিলে আপনি ঠকে যেতে পারেন। সাউন্ড সিস্টেমের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। এর শব্দ আপনার পছন্দ হচ্ছে কিনা, আপনি যেমন গান বাজাতে চান তার সাথে যায় কিনা তা দেখে কিনুন।
৮) কাঁচা বাজার
প্যাকেটজাত খাবার যেমন চকলেট, বিস্কুট, নুডলস, এসব অনলাইন বা দোকান সবজায়গায় কমবেশি একই মানের পাবেন। কিন্তু অনলাইনে কাঁচা বাজার কিনতে গেলে ঠকার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তারা আপনাকে পচা বা ফাটা সবজি, বাসি মাছ-মাংস, শুকনো ফলমূল পাঠিয়ে দিতে পারে। এরচেয়ে বাজারে বা সুপার শপে গিয়ে নিজের হাতে বেছে কেনাই ভালো।
৯) হীরা
কমদামি গহনা অনলাইনে প্রচুর কেনাবেচা হয়। কিন্তু হীরা যথেষ্ট দামী এবং বিলাসবহুল পণ্য। অনলাইনে দেখে চট করে তা কিনে ফেলাটা মোটেই উচিৎ নয়। আপনি নিজের জন্য কিনুন বা প্রিয়জনের জন্য, তা শোরুমে গিয়ে যাচাই করে কেনাই ভালো। বিশেষ করে হীরার আংটি অবশ্যই যাচাই করে, হাতে পরে দেখে নিন কেনার আগে। এছাড়া নকল এড়াতে স্বনামধন্য শোরুম থেকে কেনাও বুদ্ধিমানের কাজ।
১০) ছোট বা কম পরিমাণের জিনিস
অনলাইনে অনেক সময়েই বিভিন্ন পণ্যের ওপরে সেল দেওয়া হয়। এতে প্রভাবিত হয়ে অনেকেই টুকিটাকি জিনিস কেনেন অনলাইনে। যেমন, এক গোছা চুল বাঁধার রাবার ব্যান্ড, এক প্যাকেট ওয়েট টিস্যু ইত্যাদি। কিন্তু সেলের পর দাম যতই কম হোক না কেন, দেখা যায় ডেলিভারি চার্জ মিলিয়ে আপনার খরচ আদতে অতিরিক্ত হয়ে যায়। এসব ছোট ছোট জিনিস দোকান থেকেই কিনুন।
ছবি: রিডার্স ডাইজেস্ট