সালাহ মিসরের আনন্দ ও কান্না!
স্পোর্টস ডেস্ক: মোহাম্মদ সালাহর ইনজুরিতে পুরো মিসর যেন এখন কাঁদছে! রং হারিয়ে ফেলা নীল নদের পানি যেন হয়ে আবারও উঠেছে নীল! পুরো দেশটির মধ্যমণি হয়ে ওঠা সালাহকে বিশ্বকাপে দেখা যাবে কি না এ নিয়ে ধোঁয়াশা। নায়কই যদি না থাকে, তাহলে আর মিসরীয়দের জন্য কিসের বিশ্বকাপ! এক সালাহই যাদের জন্য হয়ে উঠেছিল উৎসবের উপলক্ষ, সেই সালাহই এখন দুঃখের নাম। কেনই-বা হবে না?
সালাহ মিসরকে কি না দিয়েছেন! ২০১১ সালে আরব বসন্তর ভয়াবহতা কমে আসলেও পুরো দেশটি এখনো অস্থিরতা মধ্য দিয়ে চলছে। অর্থনৈতিক মন্দা গিলে খাচ্ছে দেশটিকে। সামরিক শাসনের জাঁতাকলে বিদ্ধ দেশের সাধারণ জনগণ। আনন্দ কী, তা তো দেশটির মানুষ ভুলেই গিয়েছিল। সেই হাসি ফিরিয়ে এনেছেন সালাহ। তাঁর হাতে কোনো জাদু নেই, পায়ের জাদুতে মিসরীয়দের সব দুঃখ ভুলিয়ে দিয়েছেন। ২৮ বছর পর দেশকে নিয়ে গিয়েছেন বিশ্বকাপে। এ ছাড়া আর্থিক অনুদান হিসেবে দেশকে দিয়েছেন পাঁচ মিলিয়ন মিসরীয় পাউন্ড। এর পর থেকেই সালাহ মানে মিসরীয়দের কাছে ‘শান্তির এক বার্তা’।
আরও : ঈদের প্রস্তুতি
সালাহ লিভারপুলের জার্সিতে মাঠে নামলে পুরো দেশটি যেন থেমে যায়। লিভারপুলের লাল জার্সিতে মিশরই যেন হয়ে ওঠে অলরেডদের ঘরের মাঠ অ্যানফিল্ড। টিভির পর্দায় চোখ আটকে থাকে সবার। সালাহ যতক্ষণ মাঠে থাকে ততক্ষণ থমকে থাকে পিরামিডের দেশ। তাঁদের আনন্দ ও উৎসব একজনকে ঘিরেই, সালাহ।
দেশটির ইতিহাসের সেরা ফুটবলারের জনপ্রিয়তা এতটাই তুঙ্গে যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে না দাঁড়িয়েও ১০ লাখ ভোট পেয়েছেন তিনি। ব্যালট পেপারে থাকা দুই প্রার্থীর নাম কেটে দিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে লিভারপুলের উইঙ্গারের নাম লিখে ভোট দিয়েছেন ভোটাররা। এ ছাড়া দেশটির একটি মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান সালাহর প্রতি গোলের জন্য বিনা মূল্যে ১১ মিনিট কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছিল শেষ দিকে। ৪ কোটিরও বেশি গ্রাহকের একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য বেশ বড় এক সিদ্ধান্ত!
লিভারপুলের জার্সিতে এ মৌসুমে ৪৪ গোল করা সালাহকে নিয়েই বিশ্বকাপে স্বপ্ন বুনছিলেন মিসরীয়রা। কিন্তু সেই সালাহই যদি এখন না থাকে তাহলে তো মিসরের জন্য চিন্তার বিষয়ই। চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে সার্জিও রামোসের করা ট্যাকলে কাঁধে চোট নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন তিনি। ফলে বিশ্বকাপে সালাহকে পাওয়া নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধোঁয়াশা। পুরো মিশরই যেন সালাহর জন্য কাঁদছে। চলছে প্রার্থনা, ‘সালাহকে সুস্থ করে দাও।’