রবিবার, ৩রা জুন, ২০১৮ ইং ২০শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

নির্বাচন পর্যন্ত খালেদা জিয়াকে কারাগার আটক রাখতে চাই সরকার: ফখরুল

আগামী নির্বাচন পর্যন্ত খালেদা জিয়াকে সরকার কারাগার আটক রাখতে চাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম।

তিনি বলেছেন, মূল মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন হয়ে গেছে। সেই জামিন ঠেকানোর জন্য সর্বোচ্চ আদালতে গেছে। তারপর জামিন পাওয়ার পর একটার পর একটা মিথ্যা মামলা সামনে নিয়ে আসছে। তিনি যেন বেরোতে না পারেন, সেই ব্যবস্থা তারা নিশ্চিত করতে চাইছে। আগামী নির্বাচন পর্যন্ত খালেদা জিয়াকে সরকার কারাগার। আটক রাখতে চাচ্ছে।

বুধবার (৩০মে) দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।

ফখরুল বলেন,বেগম খালেদা জিয়াকে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরোনো যে কারাগারে রাখা হয়েছে, সেখানে গুমোট আবহাওয়া বিশুদ্ধ পানির অভাব ও নিয়মিত বিদ্যুৎহীনতা, অনুন্নত খাবার সহ নানা কারণে ক্রমাগত অসুস্থতা দিকে ঠেলে দিচ্ছে। খালেদা জিয়ার শ্বাসকষ্ট ও জ্বর লেগেই আছে। প্রতি রাতেই জ্বর আসছে, জ্বর আর যাচ্ছে না।

মির্জা ফখরুলের অভিযোগ, বিদ্যুৎ চলে গেলে খালেদা জিয়ার কক্ষে বিকল্প হিসেবে মোমবাতি ও হাতপাখা দিয়ে কাজ চালাতে হয়। এই যে অমানবিকতা, এই যে হৃদয়হীনতা,এর তুলনা নেই।

তিনি বলেন,কারাগারে এখন কোনো জেনারেটর নেই। আমরা যখন ছিলাম, তখন শক্তিশালী জেনারেটর ছিল। তখন দেখতাম, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে কখনো বিদ্যুৎ যায় না। এখন জেনারেটর নেই। প্রায়ই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে।

মহাসচিব বলেন, আমরা বারবার বলেছি, সাধারণ যে নিয়ম আছে, যারা শ্রেণিপ্রাপ্ত, তারা নিজের খরচে অনেক কিছুই নিয়ে আসতে পারে। এটা আমরাও ভোগ করেছি। কিন্তু খালেদা জিয়াকে কোনো সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। এই সুযোগগুলো না দেওয়ার কারণে তিনি সারা জীবনে যেটায় অভ্যস্ত, মিনিমামটুকু সেখানে পাচ্ছেন না।’

কারাগারে এখন রান্নার মানও খুব খারাপ হয়ে গেছে বলে দাবি করে বিএনপি নেতা ফখরুল বলেন, এখন বাইরে থেকে কোনো খাবার পরিবারের সদস্যের নিতে দেওয়া হচ্ছে না। ন্যূনতম মানবিক আচরণ তাঁর সঙ্গে করা হচ্ছে না। প্রথম শ্রেণির বন্দী হিসেবে যা তাঁর প্রাপ্য, সেটাও তিনি পাচ্ছেন না।

খালেদা জিয়ার স্বজনেরা গতকাল তার সঙ্গে দেখা করেছেন জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, স্বজনেরা দেখেছেন, খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ, এই অসুস্থতা এমন পর্যায়ে গেছে যে তিনি ঠিকমতো হাঁটতে পারছেন না। আমরা আগে জানিয়েছিলাম, ওনার বাঁ হাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিউরো প্রবলেম আগের চেয়ে অনেক গুণ বেড়ে গেছে। আগে থেকেই তিনি নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। ২০ বছর আগে তাঁর দুই হাঁটু প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। দুই চোখে অপারেশন করা হয়েছে। এসব সমস্যার মধ্যে কারাগারে গিয়ে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের সেবা থেকে তিনি বঞ্চিত হচ্ছেন। এ ছাড়া চিকিৎসকেরা তাঁকে যে পিজিওথেরাপির পরামর্শ দিয়েছেন, তা তিনি পাচ্ছেন না।

Print Friendly, PDF & Email