বুলবুল আহমেদের মেয়ে হিসেবে আমি গর্বিত : ঐন্দ্রিলা
বিনোদন প্রতিবেদক : দশ বছর পর অভিনয়ে ফিরেছেন প্রয়াত অভিনেতা বুলবুল আহমেদের মেয়ে ঐন্দ্রিলা আহমেদ। ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে নির্মিত ‘বিলাভড’ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে গত নভেম্বরে ক্যামেরার সামনে আসেন।
সংখ্যায় ‘১০ বছর পরে’ গণমাধ্যম হিসেব করলেও তিনি বলছেন- কাজের মধ্যেই ছিলেন। কীভাবে?
ফের নিশ্চই ব্যস্ততা বেড়েছে?
হ্যাঁ কিছুটা তো বটেই। এই তো কিছু কিছু কাজ করছি। মাবরুর রশীদ বান্না’র ‘সাংসারিক ভালোবাসা’র কাজ শেষ করলাম। ‘বিলাভড’ নাটকে আমার বিপরীতে অপূর্ব ভাই ছিলেন। ‘সাংসারিক ভালোবাসা’ নাটকেও তিনি রয়েছেন। এছাড়াও রয়েছেন আনন্দ খালেদ। নতুন করে কাজ শুরু করলাম। আপাতত এই দুটো কাজ করা হলো।
জানুয়ারিতে আরও কয়েকটি রয়েছে। ডিসেম্বরে আরেকটি নাটকের শুটিং হবার কথা থাকলেও সেটাও জানুয়ারিতে শুরু হবে।
তাহলে শুরু হলো পুরোদমে?
অনেকগুলো কাজ নিলাম আর করে গেলাম তা করলে তো হবে না। মার্জিত পরীশিলিত কাজ করবো। নির্মাতা হিসেবেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার ইচ্ছে আছে। ইতোমধ্যে ‘একজন জীবন্ত কিংবদন্তীর কথা’ নামে প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছি। আমি তো ফিল্ম এন্ড মিডিয়ায় কাজ করেছি। মূলত ফিল্ম মেকিং নিয়েই আমার কাজ। মেকিং তো করবো স্ক্রিপ্ট করেছি। এছাড়াও ২০১৩ সালে বাবাকে নিয়ে বায়োগ্রাফি ‘একজন মহানায়কের কথা’ প্রকাশ করেছি। বাংলা একাডেমি থেকে ফের যোগাযোগ করা হয়েছে আমার সঙ্গে। দেখি কি হয়! তবে নিয়মিত কাজ করার ইচ্ছা আছে। কাজ করবো, তবে সৃজনশীল কাজ।
আরও : ঈদের প্রস্তুতি
নির্মাতা হিসেবে তাহলে আনুষ্ঠানিক যাত্রা হচ্ছে?
বলতে গেলে আজকেও আমি দুটা বড় কাজের প্রস্তাব পেয়েছি। চাইলে আমি নির্মাণে নামতে পারি। আগেই বলেছি আমার পড়াশোনা এই পথেই। অনেকগুলো স্ক্রিপ্ট রেডি রয়েছে। লেখালেখিটাও আমার ভালো লাগে। কিন্তু এখন বলতে পারছি না। তবে আমি আসছি, ইনশাল্লাহ।
বাবাকে মনে পড়ে যখন-
বাবাকে আমার সবসময় মনে পড়ে। বাবাকে নিয়ে আমার অনেক স্মৃতি রয়েছে। তাঁকে নিয়ে বেশকিছু কাজ করেছি, করছি। আগেই বলেছি- তাঁকে নিয়ে বায়োগ্রাফি লিখেছি। বাবার নামে ‘বুলবুল আহমেদ ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট’ গঠন করেছি। এই ট্রাস্ট থেকে আমরা দু;স্থ শিল্পীদের সহায়তা, শীতার্ত, বন্যার্তদের সহায়তা করি। এখানে এখনও বাইরের কেউ নেই। আমি আমার পরিবারের সদস্যদের সহায়তায় ট্রাস্ট চলছে। বাইরের কোনো সাহায্য এখনো নেইনি।
বাবাকে নিয়ে আমাদের মাথায় ঘোরে অনেক পরিকল্পিনা। আপনারা মনে করছেন আমি অনেকদিন পর কাজে ফিরেছি। আসলে তা না। আমি কাজেই ছিলাম। ১৫ সালে ব্লুবেরি হোটেলে ‘মহানায়কের দিনগুলি’ নামে একটি গানের অনুষ্ঠান করেছি। যেখানে শুধু বাবার পারফর্ম করা গানগুলো গেয়েছি। বাবাকে নিয়ে একটি আর্কাইভ করছি। এখনো কাজ বাকি রয়েছে, চলছে। আমার সমস্ত কাজ ও গবেষণার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে ২০১৫ সালে আমাকে ‘গবেষক’ হিসেবে সম্মাননা দিয়েছে। এটা আমার জন্য বড়প্রাপ্তি। মনে হয়েছে যে আমি বাবার জন্য কিছু করতে পেরেছি।
তারমানে বাবা আপনাকে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করে?
হ্যাঁ ভীষণভাবে। বাবার জন্যই আমি আজ অভিনয়ে বলতে পারেন। বাবাকে নিয়ে কাজ করতে গিয়ে খুব গভীরভাবে তিনি আমাকে স্পর্শ করেছেন। তাকে নিয়ে কাজ গুলোই খেয়াল করেন-দেখেন তিনি কীভাবে আমাকে অনুপ্রাণিত করেন। তার ব্যক্তিত্ব আমাকে আকৃষ্ট করে। আমার বাবা বেঁচে থাকার সময় বিভিন্নভাবে বলেছিলেন- আমি মরে গেলে আমার মেয়ে আমাকে ধরে রাখবে। সে চেষ্টা এখনও অব্যাহত। বুলবুল আহমেদের মেয়ে হিসেবে আমি গর্বিত।
আপনাকে চলচ্চিত্রে দেখার সম্ভাবনা রয়েছে?
আমি বাবার সিনেমাতে ছোট ছোট চরিত্রে কাজ করেছি। তাঁর সিনেমাতে আমি গানও গেয়েছি। সিনেমা আমার মনেপ্রাণে রয়েছে। কিন্তু ফের সিনেমায় আসবো কি না এটা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। তবে এটা নিশ্চিত নিয়মিত বাণিজ্যিক সিনেমায় আমাকে দেখা যাবে। তবে দর্শক যদি হলমুখী হয়। আর সেই ধরনের সিনেমা তৈরি হয় তাহলে হয়তো অভিনয়ের সুযোগ পেলে সেটা মিস করবো না।