g এ গ্রহের যে ১০ স্থানে সাধারণের ‘প্রবেশ নিষেধ’! | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

বৃহস্পতিবার, ২৬শে অক্টোবর, ২০১৭ ইং ১১ই কার্তিক, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

এ গ্রহের যে ১০ স্থানে সাধারণের ‘প্রবেশ নিষেধ’!

AmaderBrahmanbaria.COM
অক্টোবর ২৪, ২০১৭
news-image

---

অনলাইন ডেস্ক : ভ্রমণ বিষয়ে বিভিন্ন স্থানের সন্ধান আজ নয়। বরং উল্টো পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

অর্থাৎ, এখানে আজ যেসব স্থানের কথা বলা হবে সেখানে যাওয়ার চিন্তা স্বপ্নেও করবেন না। আর ইচ্ছা থাকলেও কোনদিন যেতেও পারবেন না। কারণে, সেখানে প্রবেশ নিষেধ। এ পৃথিবীতে রহস্যঘেরা স্থানের আসলে অভাব নেই। এমনও স্থান আছে যেগুলো গোপন করে রাখা হয়েছে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। সেখানে যাওয়া বা ঘুরে দেখা সাধারণ মানুষের পক্ষে অসম্ভব! এমনকি এ স্থানগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যও প্রকাশ পায়নি। এখানে জেনে সেই তেমনই ১০টি স্থান সম্পর্কে, যাদের সম্পর্কে মানুষের ব্যাপক কৌতুলহ কখনই মেটেনি।

কোকা-কোলা ভল্ট 
এই ভল্টটি তৈরি করা হয় ১৮৯১ সালে। প্রথমে আমেরিকার সান ট্রাস্ট ব্যাংকে রাখা হলেও পরে এটিকে ২০১১ সালে জর্জিয়ায় স্থানান্তর করা হয়।

বর্তমানে ভল্টটি সেখানেই রয়েছে। ভল্টটি তৈরি করা হয়েছিল কোকা-কোলার প্রচার, মার্কেটিং ও মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে। সেই ভল্টে সংরক্ষিত আছে কোকা-কোলার প্রস্তুতপ্রণালী। জানা যায়, এর প্রস্তুত প্রণালীর বিভিন্ন ধাপ এত জটিল যে শুধু বাইরে থেকে দেখে দেখে কারো পক্ষে পুরো প্রক্রিয়াটি বোঝা অসম্ভব। যদি কোকা-কোলার ভল্টটি বিস্ময়কর নিরাপত্তায় সংরক্ষিত। পৃথিবীতে মাত্র দুজন ব্যক্তি আছে যারা সেখানে যেতে পারেন।

নর্থ সেন্টিনাল অ্যাইল্যান্ড 
এটার অবস্থান বঙ্গোপসাগরে। আন্দামান দীপপুঞ্জের একটি দ্বীপ নর্থ সেন্টিনাল। এটি ‘সেন্টিনালিস’ নামক এক প্রাচীন উপজাতিদের আবাসস্থল। তাদের কাছে ওই ২০ বর্গমাইলের দ্বীপটিই পৃথিবী। এর অধিবাসী ৫০-৪০০ জন যারা কখনো এ দ্বীপের বাইরে যায়নি। দ্বীপটি বিপজ্জনক সব প্রবালপ্রাচীর দিয়ে ঘেরা এবং সেখানে কোন প্রাকৃতিক বন্দর বা পোতাশ্রয় নেই। দ্বীপের অধিবাসীরা কাউকে সেখানে প্রবেশ করতে দেয় না। ১৯৭০ সালে ন্যাশনাল জিওগ্রাফির একজন চিত্রগ্রাহককে তারা তীর ছুড়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। তখন থেকেই সেখানে কারও প্রবেশাধিকার নেই। ১৯৯১ সালে ভারত সরকার পুনরায় তাদের সাথে সন্ধি করার চেষ্টা করে। কিন্তু ১৯৯৬ সালে তারা জানিয়ে দেয় যে তারা বাইরের পৃথিবীর কারও সাথে যোগাযোগ রাখতে চায় না।

ব্রিটিশ রানির শয়নকক্ষ 
ইংল্যান্ডের রানি থাকেন ব্যকিংহাম প্যালেসে। তাকে নিয়ে মানুষের কৌতুহলের অভাব নেই। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শয়নকক্ষ কিন্তু দারুণভাবে সংরক্ষিত। বছরের নির্দিষ্ট কিছু সময় এ প্রাসাদের বিভিন্ন অংশ সাধারণ মানুষের দেখার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। তার শোবার ঘরে আপনজন ও দু’একজন চাকর ছাড়া আর কারও প্রবেশাধিকার নেই। ১৯৮২ সালে ম্যাইকেল ফ্যাগান নামক একজন ব্যক্তি নিরাপত্তা ভেঙে ঢুকে পড়েছিলেন রানির ঘরে। সেটিই ছিল সম্ভবত ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অঘটন। এর পর থেকে সেখানকার নিরাপত্তা আরও নিশ্ছিদ্র করা হয়, যাতে এ ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

কক্ষ ৩৯ 

গুগল আর্থের মাধ্যমে সেই কক্ষ ৩৯ এর এই ছবিটাই কেবল দেখা যায়

এর অবস্থান উত্তর কোরিয়ায়। উত্তর কোরিয়ারও খুব কম লোকই সেখানে প্রবেশাধিকার পেয়েছেন। অফিসিয়ালি এটা কোরিয়ান ওয়ার্কার্স পার্টির ‘সেন্ট্রাল কমিটি ব্যুরো ৩৯’ নামে পরিচিত। এই কক্ষটিকে বলা হয় সেদেশের সকল অবৈধ কাজকর্মের কেন্দ্র। অনেকের মতে, যে সংস্থা এটা পরিচালনা করে তারা জাল টাকা, ইন্সুরেন্স জালিয়াতি এবং পৃথিবীব্যাপী মাদক বিক্রি করে ৫০০ মিলিয়ন ডলার থেকে ১০০০ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত আয় করে থাকেন। আর সেই অর্থ দিয়েই তারা উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক শক্তি বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক মহলে ঘুষ দেওয়ার কাজে ব্যবহার করে।

দ্য ল্যাসকক্স কেভ 
ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিমের ডোর্ডেন অঞ্চলের একটি প্রাচীন গুহা ‘দ্য ল্যাসকুয়েক্স কেভ’। ১৭ হাজার ৩০০ বছর আগে এই গুহায় মানুষের বাস ছিল বলে ধারণা করা হয়। ১৯৪০ সালে এক কিশোর বালক এই গুহা আবিস্কার করে এবং গুহার দেয়ালে সে কিছু হাতে আঁকা কৌতুহলোদ্দীপক চিত্র দেখতে পায়। পরে প্রত্ত্বতত্ত্ববিদদের গবেষণায় দেখা যায় যে, এগুলো পুরনো প্রস্তর যুগের আঁকা ছবি। শুরুতে এই গুহা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত ছিল। কিন্তু এতে চিত্রগুলোর মারাত্মক ক্ষতি হতে থাকে। ফলে, ১৯৬৩ সাল থেকে সংরক্ষণের প্রয়োজনে এই গুহায় সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। বর্তমানে শুধু একজন কিউরেটর সপ্তাহে একদিন মাত্র ২০ মিনিটের জন্য সেখানে প্রবেশ করতে পারেন।

স্নেক আইল্যান্ড

নানা প্রজাতির বিষধর সব সাপে পরিপূর্ণ এই দ্বীপ!

এ দ্বীপটিতে কোন মানুষের প্রবেশাধিকার নেই। অবশ্য কাউকে সুযোগ দিলেও তিনি যেতেন কিনা সন্দেহ আছে। জীবন বাজি কে যেতে চায় সাপদের দুনিয়ায়? স্নেক আইল্যান্ডের আসল নাম ‘ইলহা দ্য কুইম্যাডে গ্রান্ডে’। এ দ্বীপটি ব্রাজিলের উপকূলে অবস্থিত এবং সরকারি নৌঘাঁটি থেকে খুব কাছেই এর অবস্থান। সেখানে আছে সুশু সাপ আর সাপ! অবশ্য ওদের সংরক্ষণের ব্যবস্থান নিয়েছে সরকার।

মেজগোরাই 
রাশিয়ার প্রত্যন্ত এলাকার ইউরাল পর্বতের ঢাল থেকে দেখতে পাওয়া যায় ইয়ামানতু পর্বত। সেখানে একটি ফলকে মেজগোরাই লেখাটি খোদিত আছে। কথিত আছে, এই জায়গায় ৪০০ মাইল এলাকাজুড়ে মাটির নিচে ‘আন্ডারগ্রাউন্ড ফ্যাসিলিটি’ আছে। অবশ্য এর কোন প্রমাণ নেই কারও কাছে, তাই আসলেই আছে না তা জানা যায় না। ১৯৯২ সাল থেকে আমেরিকান সরকারের বিশ্বাস এখানে সেটা আছে এবং এখানে মাঝে মাঝে নির্মাণ শ্রমিকদেরও দেখতে পাওয়া গিয়েছে। ধারণা করা হয়, এটি নির্মাণের জন্য ১০ হাজার শ্রমিককে কাজে লাগানো হয়েছে। কিন্তু রাশিয়ান সরকার কখনোই এর বিষয়ে মুখ খোলোনি।

আইস গ্রান্ট শ্রাইন বা মন্দির 
দেবী অ্যামাটেরাস্ক ওমিকামির মন্দির এটি। দেবীর পূজারী বা যাজক ব্যতীত অন্য কেউ এই মন্দিরে প্রবেশ করতে পারে না। যে এই মন্দিরে প্রবেশ করবে তাকে অবশ্যই জাপানের রাজকীয় পরিবারের সদস্য হতে হবে। কেননা, তা না হলে কেউ এ মন্দিরের যাজক হতে পারে না। চার খিস্টপূর্বাব্দ থেকে এখন অবধি জাপানের এই মন্দির টিকে আছে। কথিত আছে দেবী ওমিকামি স্বয়ং নিজের জন্য এই মন্দির পছন্দ করেছিলেন। মন্দিরের বাইরের দেয়ালটি প্রতি ২০ বছর পর পর ভেঙে ফেলে আবার নতুন করে নির্মাণ করা হয়। জাপানীরা ভাঙা-গড়ার এই চক্রকে মৃত্যু এবং পুনরুত্থান চক্রের প্রতীক বলে বিশ্বাস করে।

চিন শি হুয়াং এর সমাধিস্তম্ভ 
চীনের জিয়েন সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ও অখণ্ড চীনের সম্রাট চিন শি হুয়াং মারা যান ২১০ খিস্টপূর্বাব্দে। ইনি চীনের সেই শাসক যাকে পুরো একটা পোড়ামাটির সেনাবাহিনীর সাথে কবর দেওয়া হয়। যে নেতা প্রথম অবিভক্ত চীন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তিনি যেন কোনদিন বিস্তৃত হয়ে না যান, তা নিশ্চিত করার জন্য তার অনুসারীরা খুব আয়োজন করে তাকে সমাহিত করেছিলেন। সেখানে উচ্চমাত্রার পারদের সন্ধান পাওয়া গেছে, যা মানবস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তা ছাড়া, চীন সরকার তার দেশের মহান এ নেতা যে স্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন সেই স্থানে কোন গোলযোগ চাননি। তাই এই স্থান কখনো খনন করা হয়নি, কখনো হবে এ সম্ভাবনাও কম।

হিয়ার্ড আইল্যান্ড 
এই দ্বীপটি দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে অবস্থিত হলেও সে এলাকার অন্য জায়গার তুলনায় এ জায়গা বেশি শীতল। অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ থেকে এ দ্বীপের দূরত্ব মাত্র ১৭০০ কিলোমিটার। হিয়ার্ড আইল্যান্ড ও ম্যাকডোনাল্ড আইল্যান্ড অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের একমাত্র জায়গা সেখানে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি দেখতে পাওয়া যায়। এর থেকেও ভয়ঙ্কর ব্যাপার হলো, হিয়ার্ড আইল্যান্ড এর বিগ বেন নামক আগ্নেয়গিরি এখনো লাভা উৎগিরণ করে যাচ্ছে। যার অর্থ হলো কোন মানুষ বা অন্য কোন প্রাণীর জন্য এ দ্বীপ নিরাপদ নয়। এ ছাড়াও সেখানে ৪১টি হিমবাহ রয়েছে এবং আবহাওয়া খুবই চরমভাবাপন্ন। তাই সেখানে সবার প্রবেশ নিষেধ।
সূত্র : ইন্টারনেট

এ জাতীয় আরও খবর