৬ বছরেও শেষ হয়নি ছয় ছাত্র হত্যার বিচার
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : ছয় বছর পার হলেও শেষ হয়নি সাভারের আমিনবাজারে ছয় ছাত্রকে ডাকাত সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা মামলার বিচার। আদালতে মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীরা হাজির না হওয়ায় ঝুলে রয়েছে আলোচিত মামলাটি।
মামলার বিচার কার্যক্রম নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছে নিহতদের পরিবারগুলো। তাদের দাবি, রাষ্ট্রপক্ষ মামলার সাক্ষী আনার বিষয়ে উদাসীন। তাই মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ হচ্ছে না।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শাকিলা জিয়াসমিন মিতু জাগো নিউজকে বলেন, ছয় ছাত্র হত্যা মামলাটির গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীরা আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসছেন না। তারা সাক্ষ্য দিলে মামলাটি দ্রুত শেষ করতে পারব।
তিনি আরও বলেন, গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের মধ্যে রয়েছেন এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুই চিকিৎসক শেফালি ভৌমিক ও আব্দুল আজিজ। তারা সাক্ষ্য দিলে পরবর্তীতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে মামলাটি শেষ করা সম্ভব।
আসামিপক্ষের আইনজীবী লিয়াকত আলী লিটনও একই কথা বলেন। সাক্ষীরা নিয়মিত আসলে মামলাটি দ্রুত শেষ করা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নির্মম ওই হত্যাকাণ্ডের শিকার শেখ মোহাম্মদ টিপুর মা নাজমা আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, আদালতে মামলার সাক্ষীরা হাজির হচ্ছেন না। রাষ্ট্রপক্ষ মামলার সাক্ষীদের আদালতে আনার বিষয়ে উদাসীন।
নিহত ইব্রাহীম খলিলের মা বিউটি আক্তার বলেন, ছয় বছরেও মামলাটির বিচার শেষ না হওয়ায় আমরা হতাশ। জীবদ্দশায় আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার দেখে যেতে চাই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ছয় বছর অতিবাহিত হলেও মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন নিহত সামছ রহিমের বাবা অ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান চন্দ্রনও। তার একমাত্র দাবি, দ্রুত মামলাটি নিষ্পত্তি হোক। তিনি যেন তার সন্তান হত্যার ন্যায়বিচার পান।
বর্তমানে মামলাটি ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রফিকুল ইসলাম আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৪ আগস্ট দিন ধার্য রয়েছে। মামলায় ৯২ সাক্ষীর মধ্যে বিভিন্ন সময় ৪৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ১৭ জুলাই শবেবরাতের রাতে আমিনবাজারের বড়দেশি গ্রামের কেবলার চরে ডাকাত সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয় ছয় ছাত্রকে। ঘটনার পর নিহতদের বিরুদ্ধেই ডাকাতির অভিযোগ এনে গ্রামবাসীর পক্ষে সাভার মডেল থানায় মামলা করেন আব্দুল মালেক নামে এক বালু ব্যবসায়ী।
অন্যদিকে ছয় কলেজছাত্র হত্যাকাণ্ডে ৬০০ গ্রামবাসীকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন।
২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি র্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ উদ্দিন আহমেদ ৬০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ওই বছরের ৮ জুলাই মামলার ৬০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. হেলালউদ্দিন।