রাত পোহালেই ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন
---
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :সোমবার ভারতের ১৪তম রাষ্ট্রপতি পদের জন্য নির্বাচন হতে চলেছে। সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ পর্ব। ভারতের দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলসহ ৩২টি রাজ্যের বিধানসভা ও দিল্লির সংসদ ভবনে ভোট নেয়া হবে।
দেশটির রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন-১৯৫২ অনুসারে, এই ভোটে প্রতিটি রাজ্যের নির্বাচিত বিধায়ক ও সংসদের দুই কক্ষের নির্বাচিত সদস্যরাই অংশ নেবেন। তবে মনোনীত সাংসদ (শচীন তেন্ডুলকর) বা রাজ্যগুলোর বিধানসভায় মনোনীত বিধায়কদের এখানে কোনো ভোটাধিকার নেই।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য দেশটির মোট ৪১২০ জন বিধায়ক এবং ৭৭৬ জন সাংসদ মিলিয়ে ইলেক্টোরাল কলেজের মোট ভোট সংখ্যা ১০ লাখ ৯৮ হাজার ৮৮২। বিধায়ক ও সংসদ সদস্যের মোট ভোটমূল্যের অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ পাঁচ লাখ ৪৯ হাজার ৪৪২টি ভোট পেলেই রাইসিনা হিলসে প্রবেশাধিকার মিলবে। এই নির্বাচনে কোনো প্রতীক থাকে না। আসন্ন নির্বাচনের ব্যালটে দু’টি নাম রয়েছে। এক নম্বরে রয়েছে মীরা কুমারের নাম, দুই নম্বরে রামনাথ কোবিন্দের।
বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ শিবিরের প্রার্থী হলেন দলিত সম্প্রদায়ের রামনাথ কোবিন্দ। অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন বিরোধী শিবিরের আরেক দলিত প্রার্থী হলেন মীরা কুমার।
তবে পরিসংখ্যান বলছে, বিরোধী প্রার্থীর চেয়ে কিছুটা হলেও এগিয়ে কোবিন্দ। সূত্রমতে, ৪১০ জন সাংসদ (রাজ্যসভা ও লোকসভা) এবং ১৬৯১ জন বিধায়ক নিয়ে কেন্দ্রের শাসকদলের কাছে নিজস্ব ভোট রয়েছে পাঁচ লাখ ৩২ হাজার ১৯টি। জিততে দরকার আরো ১৭ হাজার ৪২৩টি ভোট। কোবিন্দকে সমর্থনের কথা জানিয়েছে শিবসেনা, জনতা দল ইউনাইটেড, তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি, এআইএডিএমকে, ওয়াই.এস.আর কংগ্রেস’এর মতো দলগুলো। তাদের সমর্থন পেলেই বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের প্রার্থী জয়ী হয়ে যাবে বলে দাবি করছে বিজেপি।
তবে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করছেন বিরোধী প্রার্থী মীরা কুমারও। অঙ্কের হিসাবে শাসক শিবিরের প্রার্থীর চেয়ে বেশকিছুটা পিছিয়ে তিনি। তাই সুকৌশলে বিবেক ভোটের ডাক দিয়েছেন তিনি। রাষ্ট্রপ্রতি নির্বাচনকে সামনে রেখেই এনডিএ শিবিরে ফাটল ধরানোর উদ্দেশ্যেই এই কৌশল নেয়া হয়েছে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিবেক ভোটের কৌশলে প্রথম বাজিমাত করেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। ১৯৬৯ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কংগ্রেসের নীলম সঞ্জিব রেড্ডির বিরুদ্ধে ভি.ভি.গিরিকে দাঁড় করিয়েছিল ‘ইন্দিরা কংগ্রেস’ দল। অঙ্কের হিসাবে গিরি পিছিয়ে থাকলেও সেবার বিবেক ভোটের কৌশলে গিরিকে জিতিয়ে আনতে পেরেছিলেন ইন্দিরা। কিন্তু এবার কি সেই কৌশল কাজে লাগিয়ে আদৌ বাজিমাত করতে পারবেন ইন্দিরার পূত্রবধু সোনিয়া গান্ধী? উত্তর পাওয়া যাবে আগামী ২০ জুলাই, ওইদিনই ভোটগণনা। ২৪ জুলাই শপথ নেবেন নতুন রাষ্ট্রপতি।