বুধবার, ১২ই জুলাই, ২০১৭ ইং ২৮শে আষাঢ়, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

‘ওরাল সেক্সে’ বিপদজনক হয়ে উঠছে গনোরিয়া: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

AmaderBrahmanbaria.COM
জুলাই ৯, ২০১৭
news-image

---

স্বাস্থ্য ডেস্ক : যৌনাঙ্গবাহিত রোগ গনোরিয়ার জীবাণুকে এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী করে তুলছে ওরাল সেক্স। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এই বলছে কনডম ব্যবহার না করায় এই রোগ ছড়িয়ে পড়লেও এর নিরাময়কে কোন কোন ক্ষেত্রে অসম্ভব করে তুলছে ওরাল সেক্স।

ডব্লিউএইচওর বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। সংবাদমাধ্যমটি বলছে গনোরিয়ার জীবাণু খুব দ্রুত অ্যান্টোবায়োটিকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করছে। এখন পর্যন্ত কার্যকর নতুন কোন অ্যান্টোবায়োটিক উদ্ভাবন করতে না পারায় পরিস্থিতি ‘মোটমুটি গুরুতর’ আকার ধারণ করেছে।

গনোরিয়া মুলত একটি যৌন রোগ। জীবাণুর মাধ্যমে যৌনাঙ্গ, মলদ্বার বা গলার ভেতরে সংক্রমণ ঘটায় এই রোগ। এই রোগে আক্রান্ত হলে পুঁজ পড়া, প্রসাবে জ্বালাপোড়া, যোনিপথ ও মূত্রনালিতে জ্বালাপোড়া, হলুদ স্রাব, তলপেটে ব্যথা ও ঋতুস্রাবে জটিলতা দেখা দিতে পারে।

৭৭টি দেশের তথ্য বিশ্লেষণ করে ডব্লিউএইচও দেখেছে প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় সাত কোটি ৮০ লাখ মানুষ এ রোগের শিকার হচ্ছেন। অনেকক্ষেত্রেই তা সন্তান জন্মদানে অক্ষমতার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ তা বোঝা যায় ডব্লিউএইচওর বিশেষজ্ঞ থিওডোরা উয়ির কথায়। বিবিসিকে তিনি বলেন, যতবারই নতুন অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে এই জীবাণুর চিকিৎসার চেষ্টা করা হয়েছে ততবারই তা প্রতিরোধের ক্ষমতা অর্জন করছে। জাপান, ফ্রান্স ও স্পেনে অন্তত তিনটি ক্ষেত্রে অনিরাময়যোগ্য গনোরিয়ার সন্ধান পেয়েছেন তিনি।

এই বিশেষজ্ঞের মতে, গনোরিয়ার জীবাণু সাধারণত যৌনাঙ্গ, মলদ্বার বা গলার ভেতরে সংক্রমণ ঘটালেও সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে গলার সংক্রমণ। নেইসেরিয়া প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া গলার সংক্রমণের জন্য দায়ী।

সাধারণ অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহারে প্রতিরোধী ক্ষমতা অর্জন করছে বিশেষ প্রজাতির এই ব্যাকটেরিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের সমকামী পুরুষদের মধ্যে এই ব্যাকটেরিয়ার প্রতিরোধী হয়ে ওঠার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের অধ্যাপক রিচার্ড স্ট্যাবলার বিবিসিকে বলেন, ‘গনোরিয়ার জীবাণু নতুন এন্টিবায়োটিকেও এত বেশি প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে যে গত ১৫ বছরে তারা তিন দফা চিকিৎসা পদ্ধতি বদলাতে বাধ্য হয়েছেন। তবে তাতেও ব্যর্থ হওয়ার তথ্য পাওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি।

গনোরিয়ার এই বিপদজনক হয়ে ওঠার প্রবণতা রুখতে গবেষণায় বিনিয়োগ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।