বাঁচার সুযোগ পেলেও মা-বাবার সঙ্গেই পুড়ে মরলেন তিনজন
---
আগুনে পুড়ছে ভবন। একে একে গ্রাস করছে সবকিছু। এখনই বাড়ি না ছাড়লে মৃত্যু নিশ্চিত। কিন্তু সঙ্গে রয়েছে বৃদ্ধ বাবা-মা। তাই তিন সন্তান সিদ্ধান্ত নিলেন, মরলে মরবেন; কিন্তু বাবা-মাকে ছাড়বেন না তাঁরা। ফলে শেষ পর্যন্ত বাবা-মাসহ পাঁচজনেরই মৃত্যু হলো অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে।
বাংলাদেশি ওই পরিবারটি বাস করত লন্ডনে সম্প্রতি পুড়ে যাওয়া গ্রেনফেল টাওয়ারে। আগুন লাগার পর হুসনা বেগম (২২), হানিফ (২৬) ও হামিদ (২৯) ফোনে কথা বলে তাঁদের আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে। ফোনে জ্বলন্ত ভবনে বাবা-মার সঙ্গে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান তাঁরা। এদের মধ্যে খুব শিগগিরই বিয়ের পিড়িতে বসার কথা ছিল হুসনার।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ওই তিন ভাই-বোন জানান, মা রাবেয়া বেগম (৬০) ও বাবা কামরু মিয়ার (৮২) সঙ্গে ‘আরো ভালো স্থানে যাচ্ছেন’ তাঁরা।
গ্রেনফেল টাওয়ারে আগুন লাগে রাত ১২টা ৫০ মিনিটে। এরপর তাঁদের হাতে প্রায় এক ঘণ্টা সময় ছিল ভবনটি ত্যাগ করার। কিন্তু তারা ভবনেই থেকে যান। রাত ৩টা ১০ মিনিট পর্যন্ত তাঁরা টেলিফোনে সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন।
সামির আহমেদ নামে তাঁদের এক আত্মীয় সংবাদমাধ্যম টাইমসকে জানান, কামরু মিয়া বলতে গেলে হাঁটতে পারতেন না। তিনি বলেন, ‘এ অবস্থায় কী করতেন তাঁরা? তাঁকে ছেড়ে চলে যেতেন? বাবা-মাকে ছেড়ে যাওয়ার ইচ্ছে থাকলে তাঁরা রাত ১টা ৪৫ মিনিটের আগেই ভবন ত্যাগ করতে পারতেন। কিন্তু তাঁরা করেননি।’
সামির আরো বলেন, ‘আমার চাচির সঙ্গে হানিফের কথা হয়। তিনি খুব শান্ত ছিলেন। তিনি বলেন, তাঁর সময় চলে এসেছে। তিনি তাঁর জন্য শোক করতে নিষেধ করে এবং খুশি থাকতে বলেন। কারণ তাঁরা আরো ভালো স্থানে যাচ্ছেন।’