সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলে কী হবে : প্রধান বিচারপতি
---
আদালত প্রতিবেদক : ষোড়শ সংশোধনী অনুসারে কোনো বিচারকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠলে তাকে অপসারণের জন্য সংসদে প্রয়োজনীয় দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলে তখন কী হবে বলে প্রশ্ন রেখেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।
বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে ন্যস্ত করে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল শুনানিতে বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বেঞ্চে আজ সপ্তম দিনের মতো শুনানি হচ্ছে।
আজকের শুনানিতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ তার লিখিত বক্তব্য দেন। শুনানির একপর্যায়ে সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকার প্রসঙ্গ ওঠে।
শুনানিকালে সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, ‘শাসনতন্ত্রের সবচেয়ে পবিত্র আইন তারা সংরক্ষণ করেন। এখানে এমন কিছু সন্নিবেশিত করা হলো, যাতে শূন্যতা সৃষ্টির সুযোগ আছে! কারও (বিচারক) বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠলে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা (সংসদে) না থাকলে তখন কী হবে (বিচার বিভাগের)!’
অ্যামিকাস কিউরি রোকন উদ্দিন মাহমুদও তার লিখিত বক্তব্যে এই ধরনের শূন্যতার প্রসঙ্গ তোলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সংসদে কোনো রাজনৈতিক দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকতে পারে। আবার এই সংখ্যাগরিষ্ঠতা নাও থাকতে পারে। তখন কী হবে!’
বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস হয়। ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয়জন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বছরের ৫ মে হাইকোর্টের তিন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের ওপর চলতি মাসের ৮ তারিখে শুনানি শুরু হয়।