g কথিত পীর সম্পর্কে আরো যা জানা গেল | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

মঙ্গলবার, ৮ই আগস্ট, ২০১৭ ইং ২৪শে শ্রাবণ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

কথিত পীর সম্পর্কে আরো যা জানা গেল

AmaderBrahmanbaria.COM
আগস্ট ৫, ২০১৭

---

নিউজ ডেস্ক : পর্নো ভিডিও ধারণ করে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার কথিত পীর আহসান হাবিব পেয়ার সম্পর্কে প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দারা কথা বলেছেন। আজ শুক্রবার রাজধানীর খিলগাঁও থানা এলাকার তিলপাপাড়ার ২২ নম্বর রোডের ৮১৯/এ বাড়ির ফ্ল্যাটে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৭০ লাখ টাকায় বছরতিনেক আগে ফ্ল্যাটটি কিনেছিলেন আহসান হাবিব।

বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী জিয়াউর রহমান জানান, আহসান হাবিরের দুটি গাড়ি গ্যারেজে রাখা হয় : একটি প্রাইভেটকার, অন্যটি নোয়া ব্র্যান্ডের মাইক্রোবাস। ভবনের সব ফ্ল্যাট ব্যক্তি মালিকানাধীন। এখানে কেউ ভাড়া থাকেন না। হাসিনা বেগম ও মাহমুদা নামের দুই ধর্মবোন, তাঁদের বোনজামাই, মা এখানে বসবাস করতেন। তবে তাঁদের আপন ভাইবোন হিসেবেই জানত সবাই। গত মঙ্গলবার পেয়ারকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাওয়ার পর কেউ বাসায় ফেরেননি।

নিরাপত্তাকর্মী আরো বলেন, আহসান হাবিব পেয়ার সব সময় লম্বা পাঞ্জাবি, টুপি পরে চলাফেরা করতেন। তার হাতে সব সময় একটা টেলিভিশনের বুম থাকত। আর একজন ক্যামেরাম্যান তাঁর বাসায় যাতায়াত করতেন। সবাই এ জন্য তাঁকে সাংবাদিক পীর নামেই চেনেন। তিনি সাধারণত বাসা থেকে বের হতেন না। অনেকেই তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য ওই বাসায় আসত। আর আহসান হাবিব পেয়ার নাকি সৌদি আরব থেকে পড়াশোনা করে এসেছেন বলে তিনি শুনেছেন।

বাড়ির পাশেই একটি চায়ের দোকান। পেয়ার সম্পর্কে জানতে চাইলে দোকানি মো. মমতাজ আলী বলেন, পেয়ারের চেহারা দেখতে অনেক সুন্দর। দোকানের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তাঁকে সালাম দিতেন তিনি। মমতাজ বলেন, ‘পীরসাহেব শুনছি নাকি সাংবাদিক। আমার দোকানের সামনে আইস্যা একদিন একজনরে বলতাছে, আমি এই সব দোকানে চা খামু না।’

বাড়ির পাশের গলিতে রয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মামা টেলিকম। স্থানীয়রা জানায়, আহসান হাবিব পেয়ার সেখানে অনেক সময় বসে থাকতেন। প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী মো. নাইমুল ইসলাম বলেন, আহসান হাবিব তাঁর দোকানে মোবাইল ফোনে রিচার্জ করতে আসতেন। এ ছাড়া তাঁর মোবাইল ফোন থেকে ইউটিউব চ্যানেলের গান, অনুষ্ঠান দেখাতেন তাঁদের। বিকাশে তাঁর মোবাইল ফোন থেকে টাকা ক্যাশ আউট করতেন।

গত মঙ্গলবার খিলগাঁও থেকে জিন ও ভূত তাড়ানোর নামে তরুণীদের সঙ্গে পর্নো ভিডিও ধারণ করে প্রতারণার অভিযোগে আহসান হাবিব পেয়ারকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিটের সাইবার সিকিউরিটি ও ক্রাইম বিভাগ। এ বিষয়ে ওই দিনই খিলগাঁও থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, প্রতারণার ফাঁদে ফেলে কিছু মেয়ের পর্নো ভিডিও তৈরি করে তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন এক ব্যক্তি। এমন সংবাদের ভিত্তিতেই ১ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, প্রতারণার মাধ্যমে আহসান হাবিব নিজের মোবাইলের ক্যামেরা দিয়ে অনেক মেয়ের পর্নো ভিডিও তৈরি করেন এবং তা তাঁর কম্পিউটারে সেভ করে রাখেন। কিছু দিন আগে দুই নারীর কাছে থেকে পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, ইসলামের অপব্যাখা দিয়ে জিন তাড়ানোর নামে তিনি মেয়েদের ফাঁদে ফেলে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করতেন। তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পর্যালোচনা থেকে দেখা যায় যে তাঁর পেজে এএইচপি টিভি নামের একটি ভুয়া চ্যানেল খুলে এবং নিজেকে ভুয়া সাংবাদিক পরিচয়ে মেয়েদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলেন তিনি।

গ্রেপ্তারের পরের দিন তথ্যপ্রযুক্তি ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে গ্রেপ্তার আহসান হাবিবকে দুদিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার ঢাকার মহানগর হাকিম এ কে এম মঈন উদ্দিন সিদ্দিকী এ আদেশ দেন।

এ জাতীয় আরও খবর