নিউজ ডেস্ক : আধুনিক সীমান্ত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আলোকিত সীমান্ত গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি। এরই অংশ হিসেবে সীমান্তে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়েছেন সংস্থাটির নতুন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন। তিনি জানান, প্রথমবারের মতো সীমান্তে থার্মাল ইমেজার বসানো হবে। এর মাধ্যমে গভীর রাতেও কেউ সীমান্ত অবৈধভাবে অতিক্রম করতে চাইলে ধরা পড়বে।
গত রবিবার বিজিবি সদরদপ্তর পিলখানায় ঢাকাটাইমসের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানান বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন।
গত ১৬ নভেম্বর আবুল হোসেন বিজিবির ডিজির দায়িত্ব নেন। এর আগে তিনি রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব ছিলেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৯৮১ ব্যাচের ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলাদেশের সীমান্তকে শতভাগ সুরক্ষা এবং আলোকিত সীমান্ত গড়াই আমার প্রধান লক্ষ্য। এজন্য আধুনিক সীমান্ত ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রথমবারের মতো সীমান্তে থার্মাল ইমেজার বসানো হবে। এর মাধ্যমে রাতের আঁধারেও কেউ সীমান্ত অবৈধভাবে অতিক্রম করলে তা ধরা পড়বে। মানুষসহ শরীরে তাপ আছে এমন কোনো প্রাণি সীমান্ত অতিক্রম করলে থার্মাল ইমেজারের মাধ্যমে অবস্থান নিরূপণ করা যায়। ভারত ও পাকিস্তান অনেক আগে থেকেই তাদের সীমান্তে থার্মাল ইমেজারসহ অত্যাধুনিক অনেক সরঞ্জাম বসিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে এ ধরনের সরঞ্জাম রয়েছে অনেক আগে থেকেই। এছাড়া সীমান্ত সুরক্ষিত করতে বিশেষ ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে নজরদারি হচ্ছে।’
বিজিবি প্রধান বলেন, ‘উন্নত দেশে যেভাবে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা করা হয়, আমরা সেভাবে করার চেষ্টা করছি। এতে সীমান্ত সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে। আমি বলবো না সমস্যা একে বারে থাকবে না। কারণ যুক্তরাষ্ট্রসহ পৃথিবীর যেসব দেশ অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সীমান্তে ব্যবহার করছে সেসব দেশেও কিন্তু সীমান্তে সমস্যা আছে। তবে এটা বলা যায় সমস্যা অনেকাংশে কেটে যাবে।’
আবুল হোসেন বলেন, ‘সীমান্ত সড়ক নির্মাণ এবং সব সীমান্ত নজরদারির মধ্যে আনাই আমার প্রধান চ্যালেঞ্জ। ভারত ও মিয়ানমারের সীমান্ত সড়ক রয়েছে। আমরা তা এখনও করতে পারিনি। এটি আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। অনেকভাবেই সীমান্তে নজরদারি করা যায়। ওয়াচ টাওয়ার, স্যাটেলাইট, থার্মাল ইমেজার, নাইটভিশন ব্যবহার করে সীমান্ত এলাকায় নজরদারি করা যায়। আধুনিক সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় যেসব সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয় সেগুলো আমরা ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছি। প্রথম দিকে যেসব ‘ক্রিটিক্যাল’ জায়গা রয়েছে, সেখানে আমরা এসব সরঞ্জাম ব্যবহার করবো। হিলিতে সম্প্রতি কিছু ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এটাও সীমান্ত ব্যবস্থাপনার অংশ।’
সীমান্ত অপরাধ কমাতে পরিকল্পনার কথা জানিয়ে আবুল হোসেন বলেন, ‘মানুষের পেটে যখন ভাত থাকে না তখনই সে বৈধ হোক অবৈধ হোক যেকোনো পন্থায় অর্থ উপার্জনের জন্য নেমে পড়ে। সেজন্য আমরা সীমান্ত ব্যাংকের মাধ্যমে কিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি যাতে সীমান্ত কর্মসংস্থান করা যায়। সীমান্ত এলাকায় সড়ক নির্মাণ হলে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যাবে। পেটে ভাত থাকলে মানুষ আর অবৈধ কাজে জড়াবে না। সীমান্ত আলোকিত করার চেষ্টা চলছে। সীমান্ত ব্যাংকের মাধ্যমে সীমান্ত এলাকার লোকজনকে সহযোগিতা করলে অপরাধ কমবে।’ ঢাকাটাইমস