আকতার হোসেন ভুইয়া,নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)সংবাদদাতা ॥ নাসিরনগর উপজেলা সদরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান,বাড়ি ঘর ও মন্দিরে হামলা,ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় পরিদর্শন করেছে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির একটি প্রতিনিধি দল। আজ শনিবার বিকালে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির ও উপদেষ্ঠা বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের নেতৃত্বে ২০ সদস্যের একটি দল হরিপুর ও নাসিরনগর গৌর মন্দির,দত্তবাড়িসহ বিভিন্ন বাড়িঘর পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে স্থানীয় গৌর মন্দিরে সাংবাদিকদের বলেন ২০১২ সালে রামুতে জামাত-শিবিরের এক ছেলের মাধ্যমে যেভাবে উত্তম বড়–য়াকে ফেসবুকে ছবি ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিল ঠিক একই রকমভাবে পুরনো ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়ে ধর্মীয় উন্মাদনা তৈরি করেছে পরিকল্পিতভাবে রামুর ঘটনারই পুনরাবৃত্তি ঘটেছে নাসিরনগরে।রামুর ঘটনায় সরকারকে যেভাবে তৎপর আমরা দেখেছি,নাসিরনগরে সেভাবে তৎপরতা দেখিনি। এসময় তার সাথে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।এদিকে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ পরিদর্শনকালে ক্ষতিগ্রস্থ হিন্দু পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলেন। এছাড়াও চট্রগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ রুহুল আমিন ও চট্রগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মোঃ শফিকুল ইসলাম শুক্রবার রাতে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেন।
অন্যদিকে নাসিরনগরের এঘটনায় এপযর্ন্ত ৪৪জনকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ৩৩ জনকে আটক করা হয়। এর আগে গত ছয়দিনে ১১জনকে আটক করা হয়েছিল। নাসিরনগর থানার নবাগত ওসি মোঃ আবু জাফর আটকের কথা স্বীকার করেছে। এঘটনায় কাজল জ্যোতি দত্ত ও নির্মল চৌধুরী বাদি হয়ে সহ¯্রাধিক অজ্ঞাতনামাকে আসামী করে থানায় পৃথক দু‘টি মামলা দায়ের করেন।
উল্লেখ্য,ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি পোস্ট করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে শনিবার উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের জগন্নাথ দাসের ছেলে রসরাজ দাসকে (৩০) আটক করে এলাকাবাসি ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় রাতেই রসরাজের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলা করা হয়। এ ঘটনার জের ধরে রবিবার সকালে উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের পাশাপাশি একদল লোক বের হয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘর ও মন্দিরে হামলা ও ভাংচুর করে। এসময় হামলাকারীরা ব্যাপক লুটপাটও করে। তাদের হামলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বেশ কয়েক জন আহত হয়।খবর পেয়ে পুলিশ,বিজিবি ও র্যাব সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।