ডেস্ক রির্পোট : আতঙ্কে রয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। তাদের অভিযোগ, বিজিবি, পুলিশ ,র্যাব থাকতেও আবারো হামলা! তাহলে এর পেছনে কারা জড়িত! প্রশ্ন উঠেছে মৎস্য ও পানি সম্পদমন্ত্রী অ্যাডভোকেট ছায়েদুলের বক্তব্য নিয়ে। ইতোমধ্যে তার পদত্যাগ এবং তার গ্রেফতারের দাবি তুলেছে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ। তাদের অভিযোগ, প্রতিমন্ত্রী ছায়েদুলের উস্কানিমূলক বক্তব্যের ফলে ফের হামলার ঘটনা ঘটে।
এদিকে, উস্কানিমূলক লিফলেট বিতরণ করে এখনও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর ও আশপাশের এলাকায় ধর্মীয় অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে একটি বিশেষ মহল। ওই লিফলেটে বলা হয়েছে, ‘মুসলিম সব এক হও, অপমানের জবাব দাও’। লিফলেটে কাবা শরিফের ওপর অন্য ধর্মের একটি বস্তু বসানো ছবি সংযুক্ত করে উস্কানিমূলক স্লোগান দেয়া হয়েছে। নাসিরনগর ও সরাইল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিতরণ হওয়া ওই লিফলেটটি ঢাকার সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে রসরাজ দাসের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে দেয়া হয় বলে স্থানীয় মানুষের মুখে মুখে প্রচার রয়েছে। অথচ রসরাজ দাস পড়ালেখা জানে না, ফেসবুকের ব্যবহারও বুঝেন না।
নাসিরনগরের স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত রোববার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, মন্দির ও মানুষের ওপর হামলা, ভাঙচুর ও সম্পদ লুটপাটের আগে ওইদিন উপজেলার আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ‘তৌহিদী জনতা’র ব্যানারে একটি জঙ্গি জমাবেশ হয়। ওই সমাবেশে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী সুরুজ মিয়া হিন্দুধর্ম সম্পর্কে উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখেন। (তিনি মন্ত্রী ছায়েদুলের লোক বলে এলাকায় পরিচিত) এতে তৌহিদী জনতার ব্যানারে জড়ো হওয়া খারিজি মাদ্রাসা ও স্থানীয় হেফাজত নেতাকর্মী এবং আহলে সুন্নাতের সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে তান্ডব চালায়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চৌধুরী মোয়াজ্জেম আহমদ ‘জনতা’কে সমাবেশের অনুমোদন দিয়েছিলেন। নাসিরনগর উপজেলা হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামে জগন্নাথ দাসের ছেলে রসরাজ দাসকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে নিয়ে আসে স্থানীয় একদল লোক। যদিও রসরাজ দাস বলছে সে অশিক্ষিত, ফেসবুক চালাতে পারে না। সে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। রসরাজকে আটক করার খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় শনিবার রাতেই রসরাজের বিরুদ্ধে নাসিরনগর থানায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলা দায়ের করা হয়। এ ঘটনায় রোববার উত্তেজিত জনতা উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ করে প্রায় শতাধিক হিন্দু বাড়িঘর এবং দত্তবাড়ি মন্দির, জগন্নাথ বাড়ি মন্দিরসহ ৮টি মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুর করে। হামলাকারীরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শতাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটতরাজ করে। পরে পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব সদস্যরা বিকাল ৩টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আমাদের সময়.কম