নিউজ ডেস্ক : দেশের কারাগারগুলোতে বন্দি থাকা জঙ্গিদের ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার মাধ্যমে বিশেষ নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে। বর্তমানে ফাঁসির দণ্ড নিয়ে কারাগারের কনডেম সেলে ২০ জঙ্গি রয়েছে। আর দেশের কারাগারগুলোতে জঙ্গি বন্দি রয়েছে ৭৭৮ জন। ওসব বন্দিকে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রাখা হচ্ছে। তবে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানিগঞ্জে স্থানান্তরের পর এখনো সেখানে কোনো জঙ্গি বন্দি রাখা হয়নি। যদিও সেখানে নিরাপত্তাব্যবস্থা আধুনিক করার লক্ষ্যে ক্লোডজ সার্কিট ক্যামেরা বসানো হচ্ছে এবং এখন অর্ধশত ক্যামেরা বসানো হয়েছে। কারা অধিদফতর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর ধারাবাহিক অভিযানে দেশে জঙ্গি কর্মকাণ্ড অনেকটাই কমে এসেছে। কিন্তু তারপরও কারাবন্দি কোনো জঙ্গি যাতে বাইরের কারোর সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে না পারে সেজন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সে লক্ষ্যে বন্দি জঙ্গিদের ওপর নজরদারির জন্য ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। কাশিমপুর কারাগারসহ বিভিন্ন কারাগারে কারা অধিদপ্তরের নিজস্ব অর্থায়নেই ওসব সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। পাশাপাশি কারা কর্তৃপক্ষও জঙ্গিদের ব্যাপারে বিশেষ সতর্ক রয়েছে। তারা যাতে সাধারণ বন্দিদের যাতে প্রভাবিত করতে না পারে সেজন্য জঙ্গিদের আলাদা সেলে রাখা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশের ৬৮টি কারাগারে বন্দি রয়েছে ৮২ হাজার ৩৫৫ জন। তার মধ্যে ৭৭৮ জন জঙ্গি। আর ফাঁসির দ-প্রাপ্ত ২০ জঙ্গিকে রাখা হয়েছে কনডেম সেলে। জঙ্গিদের সেলগুলো বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে। বিগত ২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বও জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) জঙ্গিদের আত্মঘাতী বোমা হামলায় ঝালকাঠির দুই বিচারক নিহত হন। পরে ৭ জনকে ফাঁসিতে ঝোলানোর আদেশ দেয়া হয়। তাদেরই একজন আসাদুল ইসলাম ওরফে আরিফ।
তাছাড়া ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলো জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই, শায়খের ভাই আতাউর রহমান সানি ও জামাতা আবদুল আউয়াল, ইফতেখার হোসেন মামুন ও খালেদ সাইফুল্লাহ ওরফে ফারুক। ওই ছয়জনের ফাঁসির রায় ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ কার্যকর করা হয়। তবে আরিফ পলাতক ছিল। ২০০৭ সালের ১০ জুলাই তাকে ময়মনসিংহ থেকে গ্রেফতার করা হয়। তারপর আইনি প্রক্রিয়া শেষে গত ১৬ অক্টোবর রাতে তার ফাঁসি খুলনা কারাগারে কার্যকর করা হয়।
সূত্র আরো জানায়, কারাগারে বন্দি সব জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর করা হলে অন্য জঙ্গিদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাদের সাহসে চিড় ধরবে। এই পরিস্থিতিতে বন্দি জঙ্গিদের নিরাপদে রাখার পাশাপাশি তারা অন্য কোনো জঙ্গির সাথে যোগাযোগ রাখছে না তা দেখার জন্য বাড়তি নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। কারারক্ষীরা ঘুষ নিয়ে জঙ্গিদের কোনো সুবিধা দিচ্ছে কিনা তাও দেখছে কারা কর্তৃপক্ষ। জঙ্গিদের সেলে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে এআইজি প্রিজন্স আবদুল্লা আল মামুন জানান, জঙ্গিদের বিষয়ে সব সময়ই আলাদা গুরুত্ব দেয়া হয়।