সংলাপে কী হলো জানালেন ওবায়দুল কাদের
গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোট ও ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দ্বিতীয় দফা সংলাপ শেষে বাইরে বেরিয়ে এসে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, এখন যে সংলাপ আজকে ১১টা থেকে এ পর্যন্ত হলো প্রায় ৩ ঘণ্টা। এই সংলাপ দ্বিতীয় দফা সংলাপ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে দলনেতা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে। তারা এসেছেন, আলোচনা হয়েছে। তারাও মন খুলে আলোচনা করেছেন, আমরাও করেছি।’
‘আজকে তারা যে দাবি নিয়ে এসেছেন, নির্বাচনের শিডিউল ডিগলারের আগেই তারা কিছু বিষয়ে নিশ্চয়তা চান বা কিছু বিষয়ে ঐক্যমত্য চান। এর মধ্য মূল কথা হচ্ছে তারা আসলে সংবিধান সম্মতভাবে ২৮ জানুয়ারি থেকে আগে এদিকে যে ৯০ দিন বিদায়ী সংসদ যেদিন বসছে সেদিন থেকে যে সংসদ ৫ বছর- এর আগের ৩ মাসের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে এটা হচ্ছে সংবিধান। কিন্তু তারা চাইছেন সংসদ ভেঙে দিয়ে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার জন্য। এটা হচ্ছে মূল কথা।’
‘এ ছাড়া লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, বিদেশি পর্যবেক্ষক, রাজবন্দিদের মুক্তি এসব বিষয়ে…আমাদের নেত্রী, আমাদের দলনেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তিনি বলেছেন, এসব দাবি মেনে নিতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। শিডিউল ডিগলারের পর নির্বাচন কমিশন এগুলো করবে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ব্যাপারেও আমরা সম্মত।’
‘আমাদের মন্ত্রীরা নিজের এলাকায় জাতীয় পতাকা ব্যবহার করবে না। সরকারি সুযোগ সুবিধা নেবে না। সার্কিট হাউজ ব্যবহার করবে না। সরকারি গাড়ি ব্যবহার করবে না। কোনো প্রকার সরকারি ফেসিলিটিস আমরা এনজয় করবো না। অন্যান্য এমপিদেরও কোনো পাওয়ার থাকবে না। যদি ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থিতা দেয়, তাদের প্রার্থীরা বা অন্যান্য প্রার্থীরা যে সুযোগ সুবিধা পাবে আওয়ামী লীগের মনোনীয়ত প্রার্থীরা বা মহাজোটের মনোনীত প্রার্থীরা একই সুবিধা এনজয় করবে। এর অতিরিক্ত কিছু হবে না এবং ইলেকশন কমিশন বিষয়টি দেখবে।’
‘আরেকটা বিসয় হচ্ছে সেনাবাহিনীর মেজিস্ট্রেসি পাওয়ার নিয়ে তারা যে কথা বলেছেন এটা আমাদের দেশে হয় না, পৃথিবীর কোনো গণতান্ত্রিক দেশে এ ধরনের নিয়ম চালু নেই। তবে সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকবে। তারা যেখানেই প্রয়োজন লোকাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের সহয়তায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নিয়োজিত থাকবে।’
‘এখন তারা যে ৭ দফা দাবি দিয়েছে। এই ৭ দফার কিন্তু বেশির ভাগই আমাদের নেত্রী দলনেতা শেখ হাসিনা সম্মত হয়েছেন। কিন্তু তারা আজকে এমন কিছু বিষয় নিয়ে এসেছেন, যে এটাকে পরবর্তী ৯০ দিনে নিয়ে যাওয়ার জন্য, হয়তো তাদের অনেকেরই সদিচ্ছা আছে। কিন্তু এটা আসলে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার একটা বাহানা। এবং এই পিছিয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে ফাঁকফোকর হয়তো খুলে দেওয়া হচ্ছে যেখান দিয়ে তৃতীয় কোনো অপশক্তি এসে ওয়ান ইলেভেনের মতো আমাদের ইতিহাসের সেই অনভিপ্রেত ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারে। আমরা সেটাই মনে করছি।’
তারা বেগম জিয়ার মুক্তি ওইভাবে চাননি, জামিন চেয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা বলেছি- তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০৭ সালে এ মামলা করেছে। এটি আগেই নিষ্পত্তি করা যেত, কিন্তু তারা দেরি করেছেন। এখন আদালত তাকে দণ্ড দিয়েছেন।
‘তারা আদালতের কাছে জামিন চাইতে পারেন, আদালত যদি তাদের জামিনে মুক্তি দেয়, তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’
সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল