শুক্রবার, ৯ই নভেম্বর, ২০১৮ ইং ২৫শে কার্তিক, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

মানুষের প্রস্রাবই ‘তরল সোনা’

মানুষের প্রস্রাবের নানা গুণ নিয়ে চর্চা হয়েছে প্রচুর। এবার দক্ষিণ আফ্রিকার ইউনিভার্সিটি অব কেপ টাউনের গবেষকেরা মানুষের বর্জ্য থেকে নতুন জিনিস তৈরি করে চমকে দিলেন।প্রস্রাব থেকে তারা তৈরি করলেন ইট। হ্যাঁ, বাড়ি তৈরির ইট তৈরি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পোস্ট গ্র্যজুয়েট পড়ুয়া সুজান ল্যাম্বার্ট। যে ব্যাক্টেরিয়ার মাধ্যমে ‘ইউরেজ’ নামক এনজাইম তৈরি হয়, সেই ব্যাক্টেরিয়াই বালিকে জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। এক জটিল রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় প্রস্রাব থেকে ইউরিয়ার কণা ভেঙে দেয় ইউরেজ। একই সঙ্গে ক্যালসিয়াম কার্বোনেট তৈরি করে এটি।

এই প্রক্রিয়াতেই প্রস্রাব থেকে বালি জমাট বাঁধিয়ে তৈরি হয় ইট। যদি কেউ লাইমস্টোন ইটের থেকে ৪০ শতাংশ বেশি শক্ত করতে চায় এই ইটকে, তা হলে আরও একটু বেশি সময় দিতে হবে জমাট বাঁধার প্রক্রিয়াকে।
এই পদ্ধতির থেকে আলাদা করে নাইট্রোজেন ও পটাসিয়াম তৈরি হয়। যেগুলি ব্যবসায়িক সার তৈরির কাজে লাগে।
”গত দেড় বছর ধরে এই প্রকল্প আমার জীবনের একটি বড় অংশ হয়ে ছিল। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে ইট তৈরি করা যাবে সাধারণের ব্যবহারের জন্যও,” বলছেন ল্যাম্বার্ট।

কয়েক বছর আগে আমেরিকাতে ইউরিয়া থেকে ইট তৈরির কাজ চলছিল। তবে সেটি সিন্থেটিক ইউরিয়ার মাধ্যমে করা হচ্ছিল। ল্যাম্বার্ট প্রথম মানুষের প্রস্রাব ব্যবহার করে ইট তৈরি করলেন বলে দাবি করেছে কেপ টাউন বিশ্ববিদ্যালয়।সুজানের সুপারভাইজর ডিলোঁ র‌্যান্ডাল জানাচ্ছেন এক সুইস ছাত্রও চার মাস এই নিয়ে কাজ করেছিলেন ২০১৭ সালে। তার পরে সেই গবেষণা এগিয়ে নিয়ে যান ল্যাম্বার্ট।

তিনি জানাচ্ছেন, রাসায়নিকভাবে মানুষের প্রস্রাব ‘তরল সোনা’। প্রস্রাবের জলে নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাসিয়াম থাকে।মানুষের প্রস্রাবকে পুরোপুরি কাজে লাগানো যায়। এই বর্জ্যের কোনও অংশই ফেলা যায় না বলে দাবি গবেষকদের।পরিবেশের পক্ষেও এই বায়ো-ইট একটি সুখবর। কারণ এটি সাধারণ ঘরের তাপমাত্রাতেই তৈরি করা যায়। ইটভাটাতে ইট তৈরি করতে ১৪০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ব্যবহার করা হয়।