‘এটাই আমার জীবনের শেষ নির্বাচন’
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় নেওয়াই নিজের শেষ ইচ্ছা বলে জানিয়েছেন দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি এটাও বলেছেন এই নির্বাচন তার জীবনের শেষ নির্বাচন। এ কারণে তিনি ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেবেন বলেও জানান।
শনিবার সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মিলিত জাতীয় জোটের মহাসমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘জীবনের শেষ সময়ে এসে পড়েছি। এই নির্বাচন আমার জীবনের শেষ নির্বাচন। এখন আমার শুধু একটাই ইচ্ছা, মৃত্যুর আগে আমি জাতীয় পার্টিকে আবারও ক্ষমতায় দেখতে চাই। আমি দেখে যেতে চাই, জাতীয় পার্টি জনগণের দল হয়েছে, তারা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে।’
‘আমি মরার আগে দেখে যেতে চাই, জাতীয় পার্টি শৃঙ্খলমুক্ত হয়েছে। দেখে যেতে চাই, জাতীয় পার্টি আবারও জেগে উঠেছে। এটাই আমার শেষ ইচ্ছা।’
এসময় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ারও ঘোষণা দেন এরশাদ। বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করছি। এখন থেকেই যাত্রা শুরু হোক। আমরা ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবো। আমরা ৩০০ আসনেই নির্বাচন করতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টি সবসময় নির্বাচন করেছে। আজও আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। তবে আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। অবাধ নির্বাচন চাই। নিশ্চয়তা চাই, আমরা যারা সংসদে আছি সকলের সমন্বয়ে নির্বাচনকালীর সরকার গঠন করতে হবে।’
সমাবেশে এরশাদ আরও বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করছি। এখন থেকেই যাত্রা শুরু হোক। আমরা ৩০০ আসনে মনোনয়ন দেবো। নির্বাচন যারা করতে চাও, এগিয়ে আসো। এ মাসের মধ্যেই পার্লামেন্টারি বোর্ড গঠন করা হবে। তৃণমূলের সমর্থনে মনোনয়ন দেওয়া হবে।’
সাধারণ জনগণের উন্নয়নের জন্য যা যা করা লাগে জাতীয় পার্টি তা করবে উল্লেখ করে দলটির চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘শেষ কথা, নির্বাচনের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। আমি নতুন করে ১৮ দফা কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। আমরা নির্বাচনের পদ্ধতি পরিবর্তন করতে চাই। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা চাই। শিক্ষা পদ্ধতি সংস্কার চাই। স্বাস্থ্যসেবার সম্প্রসারণ চাই। শান্তির রাজনীতি চাই। সড়ক নিরাপত্তা চাই।’
এরশাদ বলেন, এত লোক হয়েছে, আশা করিনি। সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
এসময় সমাবেশে নেতাকর্মীরা পোস্টার ফেস্টুন উঁচু করে স্লোগান দিতে থাকেন। তখন এরশাদ তাদের পোস্টার ফেস্টুন নিচে নামাতে বলেন। কিন্তু কেউ পোস্টার ফেস্টুন নিচে না নামালে এরশাদ ক্ষোভের সাথে বলেন, কেউ কথা শোনে না। অনেক কথা বলার ছিল।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন হয়ত আমার জীবনের শেষ নির্বাচন। নির্বাচন নিয়ে অনেক সংশয় আছে। হবে কিনা জানি না। একটা দল ৭ দফা দফা দিয়েছে, এগুলো এই সংবিধান অনুয়ায়ী মানা সম্ভব না। তবে আমরাও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। সবার অংশগ্রহণে নির্বাচনকালীন সরকার চাই। ৩০০ আসনে প্রার্থী দেব।
এরশাদ বলেন, নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কার, স্বাধীন বিচার বিভাগ চাই, শিক্ষা পদ্ধতির সংস্করণ চাই, এ পদ্ধতি ধ্বংস হয়ে গেছে। সড়কে নিরাপত্তা চাই।
সম্মিলিত জাতীয় জোটের এ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, জাতীয় পার্টির কো চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য সালমা ইসলাম, ফয়সল চিশতী, আবু হোসেন বাবলা, খেলাফত মজলিশের জোবায়ের আহমদ আনসারী, ইসলামিক ফ্রন্টের এমএ মান্নান, আবু সুফিয়ান, বিএনএর সেকান্দর আলী প্রমুখ।
আরও উপস্থিত ছিলেন, জাপার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জিয়াউদ্দিন বাবলু, কাজী ফিরোজ রশিদ, খেলাফত মজলিশের মাওলানা মাহফুজুল হকসহ জোটের শীর্ষ নেতারা।