হাসপাতাল থেকে নবজাতকসহ মায়ের মৃত্যু ঘটনায় যে ছবি কাঁদাচ্ছে সবাইকে
তৌহিদুর রহমান নিটল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : মা শব্দটি অনেক বিশালকার। যার সাথে এই ভুবনে কোনকিছুর তুলনা হয় না।সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকে মায়ের কোল সন্তানের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়স্থল। নিজের সবটুকু দিয়ে একজন মা তার সন্তানকে লালন-পালন করেন। তবে সেই মা-ই যখন সন্তানের মৃত্যুর কারণ হয় তখন নানা রকম প্রশ্নই উঁকি দেয় সবার মনে। শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে এমনই এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। মাত্র চারদিন বয়সী নিজের সন্তানকে পাঁচতলা বিশিষ্ট একটি বেসরকারি ক্লিনিকের ছাদ থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে হত্যা করেছে তার মা সীমা আক্তার।পরে নিজেও লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে।
সীমা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের ফুলচং গ্রামের মনির মিয়ার স্ত্রী। মনির লেবানন প্রবাসী। গত এক বছর আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। মা-সন্তানের এমন মর্মান্তিক মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউই। সীমার এমন পাষণ্ডের মতো আচরণের কারণ খুঁজছে পুলিশও।
নিহত সীমার লাশ তাঁর বাবার বাড়ি আখাউড়া (দ:) ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামে পারিবারিক কবর স্হানে নবজাতকসহ দাফন করা হয়। সে ঔগ্রামের সামায়ন মিয়ার মেয়ে। সীমার পরিবার কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেন। বিলাপ করে পরিবার লোকজন বলছেন, কারজন্য -কিকারণে আমাদের মেয়ে এঘটনা ঘটালো । আমরা দোষীদের বিচার চাই। এঘটনায় সমস্ত গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এদিকে ঘটনার পর ফেসবুকে সীমার শিশু সন্তানের একটি ছবি ভাইরাল হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন গ্রুপের মাধ্যমে ছবিটি ছড়িয়ে পড়েছে সবখানে। ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে- হাসপাতালের সামনের সড়কে পড়ে আছে শিশুটির নিথর দেহ। প্রাণহীন ওই শিশুর দেহ ঘিরে উৎসুক জনতা। হৃদয় বিদারক ওই ছবি দাগ কেটেছে সবার মনে। ছবিটি যেন কাঁদাচ্ছে গোটা জেলার মানুষকে। অনেকেই শিশুটির ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে আবেগাপ্লুত হচ্ছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর থানার (ওসি) মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, অভিমান করে নাকি অন্য কোন কারণে এ ঘটনা ঘটেছে আমরা তদন্ত করছি। এ ঘটনায় হাসপাতালের ব্যবস্হাপনা পরিচালক দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করে।
এর আগে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পৌরশহরের পুরাতন জেল রোডস্থ একটি বেসরকারি হাসপাতালের ছাদ থেকে নিজের শিশু সন্তানকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে হত্যা করেন সীমা। পরে তিনি নিজেও লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন। গত ১৬ অক্টোবর প্রসব বেদনা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন সীমা। এদিন রাতেই সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে ছেলে সন্তান প্রসব করেন। শুক্রবার সকালে সীমা ও তার সন্তানের হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার কথা ছিল।