সন্তান প্রসবের কষ্ট সম্পর্কে ইসলাম যা বলে
সন্তান জন্মদানের মাধ্যমেই প্রতিটি নারী জীবনে পূর্ণতা লাভ করে। সন্তান মহান প্রভুর একান্ত রহমত। চাইলেই কেউ সন্তান তৈরি করতে পারে না। আবার সন্তান জন্মদানে গর্ভবর্তী মায়েদের দীর্ঘদিন ধরে কষ্ট স্বীকার করতে হয়।
সন্তান ভূমিষ্টকালীন সময়ে নারীদের জীবনে থাকে অনেক ঝুঁকি। অনেক নারী প্রসবকালীন সময়ে মৃত্যুবরণ করে। নারীদের কষ্ট এখানেই শেষ নয়।
সন্তান ভূমিষ্টের পর দীর্ঘ ২/৩ বছর যাবত অনেক কষ্ট করতে হয়। এ সবের বিনিময়ে রয়েছে অনেক সাওয়াব। আর সন্তানের জন্য গর্ভধারিণী মায়েদের প্রতি রয়েছে অনেক হক বা অধিকার। এ কারণে আল্লাহ তাআলা মায়ের জাতিকে করেছেন সম্মানিত। হাদিসে পাকে এ ব্যাপারে এসেছে-
হজরত আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ছেলে ইবরাহিমের পরিচর্যাকারী হজরত সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, হে আল্লাহর রাসুল! শুধু পুরুষদের উত্তম উত্তম সুসংবাদ দেন কিন্তু নারীদের কেন সুসংবাদ দেন না?
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমার সাথীরা এ কারণে (নারীরা কারণ জানার জন্য) তোমাকে পাঠিয়েছে?
তিনি বললেন, হ্যাঁ, তারাই আমাকে উৎসাহ দিয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (নারীদের জন্য সুসংবাদ) ঘোষণা ইরশাদ করেন-
– ‘তোমাদের কেউ কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, যখন তোমাদের স্বামী তোমাদের প্রতি সন্তুষ্ট থাকা অবস্থায় তোমরা স্বামীর পক্ষ থেকে গর্ভধারীনী হও, তখন তোমরা আল্লাহর পথে রোযাদারের সমান সওয়াবের অধিকারী হও।
– আর যখন প্রসব বেদনা শুরু হয়, তখন আসমান ও জমিনের অধিবাসী কেউ জানে না, তার জন্য চক্ষু শীতলকারী কি পুরস্কার (ছেলে/মেয়ে) লুকায়িত থাকে।
– আর যখন প্রসব হয়ে যায়, তখন নবজাতকের দুধপানের প্রতিটি ঢোক এবং প্রতিটি চোষণের বিনিময়ে একটি করে নেকী লেখা হয়।
– আর যদি নবজাকতের কারণে (কোনো নারীকে রাত) জেগে থাকতে হয়, তাহলে প্রতিটি রাতের বিনিময়ে সত্তরটি ক্রীতদাস আল্লাহর রাস্তায় মুক্ত করার সওয়াব দেয়া হয়।’ (তাবারানি)
সন্তান প্রসবের পর দুগ্ধদানকারীনী নারীদের প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মর্যাদা ও সাওয়াবের বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি বলেন-
হজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘নারীরা গর্ভধারণ থেকে নিয়ে (সন্তানকে) দুধ ছাড়ানো সময় পর্যন্ত আল্লাহর রাস্তায় পাহারাদারের ন্যায় সওয়াব পেতে থাকে। আর (এ নারী) যদি এ অবস্থায় মারা যায়, তাহলে শহীদের সওয়াব লাভ করবে।’ (তাবারানি)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব নারীদেরকে সন্তান জন্মদানের তাওফিক দান করুন। সন্তান প্রসব পরবর্তী সময়ে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত সন্তানকে বুকের দুধ পান করানোর তাওফিক দান করুন। হাদিসে ঘোষিত ফজিলত ও মর্যাদা দান করুন। আমিন।