বিয়ে নিয়ে যা বললেন সেই লাবণী
রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে গত ৩০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয় ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০১৮’ এর গ্র্যান্ড ফিনালে। এবার ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ নির্বাচিত হন পিরোজপুরের জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী।
আর সেখানে ৩০ হাজার প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে ‘মিস বেস্ট বিহেভিয়র’ অ্যাওয়ার্ড পান আফরিন সুলতানা লাবণী।
গত ১০ অক্টোবর দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশের আলোচিত সেই লাবণী বিবাহিত!’ এই শিরোনামে।
কিন্তু বিয়ের কথা অস্বীকার করে আফরিন সুলতানা লাবণী দাবি করেছেন, আতাউর রহমান আতিকের সঙ্গে তার বিয়ে বা বিচ্ছেদ কোনোটিই হয়নি। দুই বছর তার সঙ্গে সংসার করা তো দূরের কথা, এমনকি কখনো জামালপুরে যাওয়া পর্যন্ত হয়নি তার।
তবে আতাউর রহমান আতিক তার পরিচিত বলে জানায় লাবণী।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য কোচিং করতে যখন ঢাকায় আসেন তখন ইডেন কলেজের হোস্টেলে থাকতেন। সেখানে তার রুমমেট ছিলেন সোমা নামে একটি মেয়ে। আর আতিক ছিলেন সোমার পরিচিত। সেই সূত্রে আতিকের সঙ্গে তার পরিচয়।
লাবণী দাবি করেন, আতিক তাকে পছন্দ করতেন এবং সে পছন্দটাই তার (লাবণীর) জীবনে কাল হয়ে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আতিককে আমি বিয়ে করিনি। সে আমার পরিচিত। আমাকে পছন্দ করতো। আমার পিছনে ঘুরতো। তার সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্কও ছিল না। সে যা বলছে তার সবই মিথ্যা।’
আতাউর রহমান আতিকের সঙ্গে ছবি থাকার প্রসঙ্গে লাবণী বলেন, ‘প্রথম যখন ঢাকায় আসি তখন বন্ধুরা মিলে একদিন কার্জন হলের সামনে ঘুরতে গিয়েছিলাম। সেদিন ওর সঙ্গে কিছু ছবি তোলা হয়। এছাড়া সে একদিন বন্ধুদের নিয়ে আমার বাসায় আসে, সেদিন একটি ছবি তোলা হয়। সেই ছবিগুলো দিয়েই এখন সে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করছে। আমাদের বিয়ে হয়েছে বলে গণমাধ্যমে বলে বেড়াচ্ছে।’
লাবণীর দাবি, প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে সাড়া না পেয়ে আতিক তাকে নানা সময় হুমকি দিতেন। ফোন না ধরলে অন্য নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে বিরক্ত করতেন। হুমকি-ধামকিও দিতেন।
এজন্য ২০১৬ সালের ১৬ জুলাই আতিকের বিরুদ্ধে রাজধানীর কোতোয়ালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন লাবণী।
লাবণী অভিযোগ, জীবনে বড় হওয়ার স্বপ্নে পদে পদে কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে আতিক।
এছাড়াও আতিক চারদিকে মিথ্যা কথা ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে দাবি করে লাবণী বলেন, ‘এখন যখন আমি মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ভালো কিছু অর্জন করতে যাচ্ছি, তখন সে আবার আমার পেছনে লেগেছে। বিয়ের মিথ্যা কথা ছড়াচ্ছে।’
লাবণী জানান, এ কারণে গত ১৫ অক্টোবর রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় সামাজিক মর্যাদাহানি ও হেয় প্রতিপন্ন করার অভিযোগে আতিকের বিরুদ্ধে আরেকটি জিডি করেছেন তিনি।
অভিযোগে তিনি বলেন, ‘আতিক আগেও বিয়ে করেছিল। সে ঘরে তার এক মেয়ে ও ছেলে রয়েছে। বউয়ের সঙ্গে তার ডিভোর্স হয়েছে। সে ভালো ছেলে না।’
বিয়ে এবং বিয়ের কাগজপত্র সম্পর্কে লাবণী বলেন, ‘মনের আশা পূরণ না হওয়াতেই আতিক আমার ওপর চড়াও হয়েছে। বিয়ের কথা রটাচ্ছে। প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে আমার নামে মামলা করেছে। সবই করছে আমাকে টেনে নিচে নামানোর জন্য, কিন্তু পারেনি। ওর টাকা আমি কেন আত্মসাৎ করবো? আমি তার পরিবারের কাউকে চিনিও না। অথচ সে আমাকে নিয়ে মিথ্যে গল্প বানিয়েছে। ওর জন্য আমি নেভিতেও পরীক্ষা দিতে পারিনি। নানা সময় আমাকে ভয় দেখায় সে।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী লাবণী জানান, তিনি মাকে নিয়ে ঢাকায় থাকতেন। কিছুদিন আগে তার মা মারা গেছেন। আতিক তার বিরুদ্ধে মামলা করেন জামালপুরে এবং মামলায় জামিনের জন্য তার বাবা একসময় সেখানে গিয়েছিলেন। গণমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার জন্য শিগগিরই আতিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান তিনি।