চলচ্চিত্রের দুই যোদ্ধা
একজন পর্দার পেছনের মানুষ, আরেকজন পর্দার সামনে থাকা কাঁপানো মানুষ। স্টার সিনেপ্লেক্সের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান রুহেল অপরজন এ সময়ের ঢাকাই সিনেমার সবচেয়ে ব্যস্ততম চিত্রনায়ক। যার বিচরণ সীমানা পেরিয়ে ওপারেও।
রুহেলের বাবা বাবা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য ও সরকারের গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী। রাজনৈতিক অঙ্গনে তিনি দেশের প্রাচীনতম ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী পদ প্রেসিডিয়াম সদস্য। রুহেল স্বাভাবিকভাবেই বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করতে পারতেন। জড়িয়ে পড়তে পারতেন সক্রিয় রাজনীতিতে।
কিন্তু সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রতি আগ্রহী রুহেল চলচ্চিত্রের প্রতি ঝুকে পড়েন। আজ থেকে ১৪ বছর আগে দেশে সর্বপ্রথম মাল্টিপ্লেক্স চেইঞ্জ নিয়ে আসেন। রাজধানীর বসুন্ধরা সিটির ৮ তলায় গড়ে তোলেন স্টার সিনেপ্লেক্স। যা আজ সগৌরবে চলছে। রুহেল এখন স্বপ্ন দেখছেন সিনেপ্লেক্সের মতো থিয়েটার তৈরি করে সারাদেশে বিনোদনের উপকরণ হিসেবে তরুণ সমাজের মাঝে চলচ্চিত্রকে ছড়িয়ে দিতে।
অন্যদিকে, শাকিব খান বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন প্রায় একাই। উপমহাদেশ থেকে যখন বাংলাদেশের এই সময়ের অভিনেতাদের কথা তোলা হয় তখন শাকিব ছাড়া আসে না আর কারো নাম। শাকিব খানের অবাধ পদচারণা পশ্চিবঙ্গেও। শিকারি,নবাবসহ একাধিক ব্যবসাসফল ছবি উপহার দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের চলচ্চিত্রপ্রেমীদের।
সম্প্রতি শাকিব খান আমন্ত্রিত হয়েছিলেন স্টার সিনেপ্লেক্সের ১৪ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে। সেখানে তিনি জানান, বাংলা চলচ্চিত্রে তার অক্লান্ত পরিশ্রমের কথা। চলচ্চিত্রকে টেনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা। শাকিব খান সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, সারাদেশে প্রতিটি জেলায় সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করা হোক। বিশেষ করে বিভাগীয় শহরগুলোতে একাধিক সিনেপ্লেক্স তৈরি করা হোক।
শাকিবের কথার সাথে রুহেলের বলে যাওয়া কথার মধ্যে পার্থক্য ছিল না। উভয়ের কথার সুরে চলচ্চিত্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, সারাদেশে সিনেপ্লেক্স নির্মাণের কথা। হলের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার কথা-ই ছিল। মাহবুবুর রহমান রুহেলও মনে করেন সারাদেশে অন্তত তিন হাজার স্ক্রিন থাকা প্রয়োজন।
চলচ্চিত্রের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আলোকপাত করতে গিয়ে রুহেল বলেন, সৌদি আরব বুঝতে পেরেছে যে বিনোদন যদি উন্মুক্ত করে দেয়া না হয় তাহলে তরুণ সমাজ রিভোল্ট করবে। সৌদি যুবরাজ বুঝতে পেরেছেন যে তরুণদের বিনোদন দরকার। তাদেরকে বিনোদিত করার জন্য, দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত না হ ওয়ার জন্যই সিনেমা হল খুলে দিতে বাধ্য হয়েছে তারা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা সিনেমা হল বাড়াতে পারছি না।
অন্যদিকে শাকিবের লড়াইটা মানসম্মত সিনেমা দিয়ে দর্শকদের হলে ফিরিয়ে আনা। শাকিব বলেন, এত বছরের ক্যারিয়ারে আমি যতটুকু শিখেছি অভিনয়, লুক চেঞ্জ, ফিটনেস সবদিক দিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি আমার ইন্ডাস্ট্রির সম্মান রক্ষার জন্য।
ধানমন্ডিতে আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে সিনেপ্লেক্স চালু হতে যাচ্ছে। মহাখালীর রাওয়া ক্লাবে নির্মিত হতে যাচ্ছে আরও একটি সিনেপ্লেক্স। উত্তরায় মৌখিক আলাপ হয়েছে সিনেপ্লেক্স নির্মাণের বিষয়ে। পরিকল্পনা রয়েছে পূর্বাচলে। এছাড়া ঢাকার বাইরেও সিনপ্লেক্স নির্মাণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে স্টার সিনেপ্লেক্স। পাশাপাশি সিনেমা প্রযোজনাতেও নামছে সিনপ্লেক্স- জানালেন রুহেল।