“ভালোবেসে সর্বস্ব দিয়েছিলাম তাকে” – অন্যরকম শিক্ষণীয় গল্প
একটা মেয়ে তার বয়ফ্রেন্ডকে এতটাই ভালবাসত যে, বয়ফ্রেন্ডের আবদার রক্ষা করতে গিয়ে তার সাথে শারিরিক সম্পর্ক করে। একবার করলে তো সুযোগ হয়ে যায়, তাই নিজের স্বামীর মত মনে করে এভাবে বারবার করতে থাকে।
এক সময় মেয়েটা প্রেগন্যান্ট হয়ে যায়। মেয়েটা মনে মনে চিন্তা করছে যে যদি বিয়ের আগে এরকম কিছু হয় তাহলে এভোরশন করবে।
কিন্তু দূভাগ্যক্রমে মেয়েটার প্রেগন্যান্সি ৬ মাস হয়ে যায়, যার ফলে ডাক্তাররা এভোরশন করছেনা কারন মেয়েটি মারা যেতে পারে। এদিকে তার বয়ফ্রেন্ড ডাক্তারকে পায়ে ধরতেছে যেন এভোরশন করে, তার কথা হল রিক্স নিয়ে এভোরশন করাক।
তারপর ও ডাক্তার রাজি হলনা।তো মেয়েটা তাকে বলল বিয়ে করার কথা। ছেলেটি স্পষ্ট বলে দিল সে বিয়ে করতে পারবেনা কারন সে এখনো ছাত্র। তার পরিবার মানবেনা। তারপর ছেলেটি যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় মেয়েটির সাথে।
মেয়েটি ফোন করলে তাকে বিভিন্ন খারাপ ভাষায় গালি দেয়, এমনকি পতিতা পর্যন্ত ডাকে। মেয়েটি বিশ্বাস করতে পারছেনা। যে ছেলেটি কোনদিন বাবুনি,জান, কলিজা ইত্যাদি বলা ছাড়া কথা বলত না সে ছেলেটি আজ তাকে বেশ্যা আর পতিতা ছাড়া কথা বলেনা।
মেয়েটি চিন্তায় পড়ে গেলে কি করবে। সে তার এক বান্ধবীর পরামর্শে একটা মেয়েদের মেসে উঠল। পরিবারকে বুঝালো তার পরীক্ষার চাপ। বিভিন্ন নোট করতে হবে তাই বান্ধবীদের সাথে কয়েকমাস থাকতে হবে।
সেখানে মেয়েরা তার সাথে যথেষ্ট ভাল আচরন করে। সে চিন্তা করল আমার এই বিপদের সময় এই কয়েকটা মেয়েই আজ তার পাশে। মেয়েটি মনে মনে চিন্তা করল বাচ্চাটি হওয়ার পর মেরে ফেলবে।
এমন অভিশপ্ত ভালবাসার চিহ্ন সে রাখতে চাইনা। ওই ছেলেটির অবৈধ সন্তান সে কেন লালন করবে। মেসে একটা মেয়ে ছিল অত্যান্ত ধার্মিক ও পর্দাশীল। সে গরমের মধ্যে বাইরে গেলে ও হাত মোজা, পা মোজা পড়ে বের হত।
তাকে মেয়েটি জিজ্ঞেস করল তোমার কি গরম লাগেনা, এ গরমে এভাবে বোরকা,হাত, পা মোজা নেকাব, খিমার পড়ে কেমনে থাক। সে বলল আমি আল্লাহ্ তায়ালাকে ভালবাসি, তিনি এমন স্বত্তা যাকে ভালবাসলে কোনদিন বঞ্চিত হবনা।
ভালবাসা শব্দটি শুনে মেয়েটির মনে পড়ল তার ভালবাসার কথা। মেয়েটি চিন্তা করল মানুষ ভালবাসার জন্য কত কিছু করে। আমি তো ভালবাসার জন্য নিজের শরীর বিলিয়ে দিয়েছি,যার ফলে পেয়েছি অবৈধ সন্তান, অবহেলা আর অপমান। আর আল্লাহ্কে ভালবেসে বোরকা পড়া তা তো কোন ব্যাপার না।
মেয়েটা আল্লাহর কাছে তওবা করল। নামায পড়া শুরু করল। পর্দা করা শুরু করল। রাতে ইবাদত করা শুরু করল। তার চোখে পানি। সে খুবই অনুতপ্ত। সে চিন্তা করল আমার গর্ভে যে সন্তান আছে সেটা যার হোক, সৃষ্টি তো আল্লাহর।
আমি আল্লাহর সৃষ্টিকে হত্যা করে কোন পাপ করতে চাইনা। তাই মেয়েটি অনাগত বাচ্চার জন্য সবকিছু কিনে আনল। একদিন এরমধ্যে ওই ছেলেটি ফোন করল। ফোন করে বলে বাচ্চা জন্ম দেয়ার পর বাচ্চাটি এতিম খানায় দিয়ে আসবে অথবা কোথাও ফেলে দিবে।
সে মানুষ ঠিক করছে। আরো বলে আমাদের মধ্যে এসবের চিহৃ রাখতে চাইনা। মেয়েটির খুব রাগ হল, মেয়েটি বলল আমি তোমার থেকে কোন এ্যাডভাইস চাইনা। তারপর কল কেটে দিল। এর মধ্যে বাচ্চা ডেলিভারীর সময় হয়ে গেল।
মেয়েটি কোন পুরুষ ডাক্তারের কাছে যাবেনা তাকে মহিলা ডাক্তারের কাছে নিতে হবে। মেসের মেয়েরা অনেক খোজাখুজি করে মহিলা ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেল। কিন্তু অত্যান্ত দুঃখের বিষয় মেয়েটি জানতে পারল যে তার বাচ্চাটি মৃত হয়েছে। মেয়েটি খুব কষ্ট পেল।
সে আল্লাহর সিদ্ধান্ত কেইই মনে প্রানে মেনে নিল। সে তার বাচ্চাটিকে হুজুর দ্বারা দাফন করল। মেডিকেল থেকে দু সপ্তাহ পর মেয়েটি তার বাসায় ফিরে গেল। তার মা বাবা তার পরিবর্তন দেখে বিস্মিত হল।
ছেলেটি জানতে পারল যে মেয়েটি মৃত বাচ্চা জন্ম দিছে। ফোন করে মেয়েটির কাছে কান্নাকাটি করছে। সে সবকিছু মেকআপ করতে চাই। মেয়েটি বুঝতে পারল এসব ছেলে গুলো আবার দেহের মজা নিতে চাই। মেয়েটি এখন শুধু আল্লাহ্কে ভালবাসে।
বিঃদ্রঃ মানুষ ভুল করবে, পাপ করবে। মানুষ পাপী, তাদের মধ্যে উত্তম হচ্ছে তাওবাকারী। মেয়েটি তাওবা করে আল্লাহর দিকে ফিরে আসার কারনে আল্লাহ্ তাকে অপমানিত করেননি। তার পাপকে গোপন রেখেছে।
কিন্তু সে যাকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসত, নিজের সবকিছু যাকে দিয়ে দিয়েছে সে ছেড়ে যেতে মূহুর্ত দেরি করেনি। তাই আমাদের উচিত আল্লাহ্কে ভালবাসা ও তার বিধান মত চলা। এর থেকে সবার শিক্ষা নেয়া উচিত।