‘ক্রিকেট খেলি শুনে বিয়ের কথা আর সামনে আগায় না’
বাংলাদেশে নারী ক্রিকেট দল দিন দিন ভাল ক্রিকেট খেলছে । জাতীয় নারী ক্রিকেটাদের মধ্যে অন্যতম রুমানা । অঅজ তার জীবনের চিত্র আপনাদের সামনে তুলে ধরবো। বাবা মারা গেছেন, মায়ের কাছেই মানুষ বাংলাদেশ নারী ওয়ানডে দলের অধিনায়ক রুমানা আহমেদ। ১০ বছর ধরে খেলে ক্রিকেটের সঙ্গেই বেঁধেছেন ঘর সংসার। কিন্তু একটি দিনের জন্যও পাননি মায়ের সমর্থন।
এখন দেশের তারকা হয়ে গেলেও মায়ের দাবি ক্রিকেট ছেড়ে দাও। কিন্তু ভাই আর বোনদের সমর্থনেই ২২ গজ আঁকড়ে পড়ে আছেন এই অলরাউন্ডার। তবে, মায়ের চাওয়াকেও অযৌক্তিক মনে করেন না। তবুও ক্রিকেটে লড়াইয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন বড় লক্ষ্য নিয়ে। দেশের নারী ক্রিকেটের আগ্রযাত্রায় দারুণ ভূমিকা রাখা রুমানা এক সাক্ষাৎকারে তুলে ধরেন নিজের পাওয়া না পাওয়ার গল্প। সেই কথোপকথনের মূল অংশ তুলে ধরা হলো-
মেয়েদের জীবনে খেলা খুব কঠিন মনে হয়?
রুমানা: খেলার সঙ্গে সাধারণ জীবন ও সংসার একেবারেই ভিন্ন। ক্রিকেট খেলে ব্যক্তিগত জীবন পরিচালনা করা খুবই কঠিন। ক্রিকেট মাঠেও কিন্তু দায়িত্ব কম নয়। এখানে দেশের জন্য খেলছি। আর মেয়েদের জন্যতো খেলা ভীষণ কঠিন। কারণ তাদের একদিন না একদিন বিয়ে করতে হয়। তবে, আমি আমার সব কিছুই ঠিক রাখার চেষ্টা করেছি। স্কুলে যখন গেছি মন দিয়ে পড়েছি। এখন খেলছি সেটিতেও শতভাগ মনযোগ। যখন বিয়ে হবে সংসার হবে তখন সেখানেও নিজের দায়িত্ব পালন করবো।
নারী ও পুরুষ ক্রিকেটের মধ্যে এখনো কি পার্থক্য দেখেন?
রুমানা: সত্যি কথা বলতে নারী ও পুরুষ ক্রিকেটে পার্থক্য আমার চোখে শুধু দুটি। একটি হলো তারা খেলেন ৭০ গজে আর আমরা ৬৫ গজে। আরেকটা হলো পারিশ্রমিক। তাদের পরিশ্রমিক, ম্যাচ ফি’র সঙ্গে অনেক পার্থক্য আমাদের। আর বাকি সবতো সমান। তারা যে ধরনের বল ও ব্যাটে খেলে আমরাও তা দিয়ে খেলি। তারাও ২২ গজের ক্রিজে খেলে আমরাও খেলি। তাদের যে কষ্ট করতে হয় আমরাও করি। আমি রুমানা যখন অনুশীলন করি আমার কিন্তু ঘামে চারটি টি-শার্ট ভিজে যায়। আমাদের পরিশ্রম কিন্তু অনেকেই দেখে না।
ক্রিকেটের পাশাপাশি বিয়ে কেন সম্ভব নয়? সম্ভব নয়, তা না। আমাদের শুকতারা আছে, পিংকি আছে। শুকতারার স্বামী ক্রিকেট ট্রেনার। পিংকির শ্বশুর বাড়িতেও খেলা নিয়ে আপত্তি নেই। বাংলাদেশের বেশিরভাগ পরিবারই চায় মেয়ে রান্না-বান্না করুক, সংসারি হোক। তারা খেলাধুলা করে এমন মেয়ে বউ করে নিতে চায় না। সে কারণেই একটু কঠিন এখানে মেয়ে ক্রিকেটারের জন্য খেলা ও সংসার একই সঙ্গে চালিয়ে যাওয়া।ক্রিকেট খেলি শুনে বিয়ের কথা আর সামনে আগায় না’আমাদের ।