শুক্রবার, ১২ই অক্টোবর, ২০১৮ ইং ২৭শে আশ্বিন, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

‘আমি বোধহয় বনির ৪১তম গার্লফ্রেন্ড…’

পুজোয় মুক্তি পেতে চলেছে ‘হইচই আনলিমিটেড’। এই প্রথম দেবের সঙ্গে কাজ করলেন কৌশানী মুখোপাধ্যায়। অন্যদিকে রিয়েল লাইফ বয়ফ্রেন্ড বনির সঙ্গেও তাঁর নতুন ছবি ‘গার্লফ্রেন্ড’ মুক্তির অপেক্ষায়। দুই ছবি নিয়ে নায়িকার সঙ্গে আড্ডা দিয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদক। এ সময় অভিনেত্রীর সাথে কথা হয় নানান বিষয় নিয়ে।

প্রথমেই অভিনেত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয় ‘আপনি বনির কত নম্বর গার্লফ্রেন্ড’?

(হাসি) বনির ইন্টারভিউতে শুনে যা বুঝলাম, আমি বোধহয় ৪১তম গার্লফ্রেন্ড…।

তাই?

হ্যাঁ… খুচরো খাচরা মিলিয়ে আগে নাকি ওর ৪০টা গার্লফ্রেন্ড ছিল।

এই ইনফরমেশনটা আপনার কাছে প্রথম থেকেই ছিল?

(একটু ভেবে) না, আমি এটা জানতাম না। তবে ৪০ অবধিও সংখ্যাটা যায়নি আমি শিওর। আমার মনে হয় না, ৪০টা মেয়ে ওর জন্য টাইম ওয়েস্ট করেছে।

কৌশানী মুখোপাধ্যায়।

আর বনি আপনার কত নম্বর বয়ফ্রেন্ড?

ও আমার সেকেন্ড বয়ফ্রেন্ড। আই অ্যাম ওয়ান ম্যান উওম্যান। দেখুন, সবাইকে তো চান্স দিইনি। আমাকে দেখে সবাই বলে খুব অ্যাটিটিউড আছে। কিন্তু আসলে সেটা নয়। আমি মানুষের সঙ্গে মিশতে ভালবাসি। আমি ডাউন টু আর্থ। এক্সট্রোভার্ট। জানেন, আমার মুড অফ হলে, ডিপ্রেশন হলে আমার চারপাশের লোকেরা আপসেট হয়ে পড়ে। আমার মনে হয় অন্যের জীবনে আমি রং আনতে পারি। সেই পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে বলতে পারি আমি অ্যাটেনশন ভালবাসি। ছোট থেকে বহু ছেলে অ্যাটেনশন দিয়েছে। প্রোপোজ করেছে। কিন্তু বয়ফ্রেন্ড কথাটা একজনের জন্যই ইউজ করব। যার সঙ্গে রেস্ট অফ দ্য লাইফ কাটাবো বলে প্ল্যান করেছিলাম। তাই জন্য বনি দু’নম্বর। তবে হেলদি ফ্লার্ট প্রচুর ছিল। আমার সঙ্গে একটা অদ্ভুত জিনিস হত। বলব?

প্লিজ…

(সামান্য উত্তেজিত) সুন্দরীদের সঙ্গে হয় বোধ হয় এটা। ধরুন, কোনও ছেলের সঙ্গে কথা বললাম এক রকম ভাবে, আর সে নিয়ে নিল অন্য ভাবে। ভাবল আমিও ইন্টারেস্টিড। কিন্তু অ্যাকচুয়ালি সেটা না।

বনির যে এতজন গার্লফ্রেন্ড ছিলেন, তাতে আপনার কোনও প্রবলেম নেই নিশ্চয়ই…

আমি যবে থেকে বনির জীবনে এসেছি, আমার মনে হয় না ও আর কিছুতে ইন্টারেস্টেড। দেখুন, কারও সঙ্গে কথা বলল বা ছুঁকছুঁকানি যদি থাকেও আমার সমস্যা নেই। আমি ওপেন মাইন্ডেড। কিন্তু আমাকে যেন সব কিছু ইনফর্ম করে দেয়।

আপনি বেশ ডমিনেটিং মনে হচ্ছে?

ব্যাপারটা সেটা নয়। বনির কিছু খবর আমার কানে এসেছে। কিন্তু সেটা খবরই। আসলে আমাদের বিশ্বাসের জায়গাটা খুব স্ট্রং। আমার মতো গার্লফ্রেন্ড কারও জীবনে থাকলে তার আর অন্য কারও কাছে যাওয়ার দরকার পড়ে না। কারণ ওর আর আমার লাইফে যা যা মিসিং ছিল, সেগুলো ব্যালেন্স হয়েছে বলেই আমরা একসঙ্গে রয়েছি।

এতক্ষণ ‘গার্লফ্রেন্ড’ নিয়ে আমরা এত কথা বলছি। কারণ আপনার এবং বনির নতুন ছবি…

ইয়েস ‘গার্লফ্রেন্ড’।

পুজোতে রিলিজ করবে?

ডেট এখনও জানি না আমি।

পুজোতে তো আপনার অন্য একটা ছবি ‘হইচই আনলিমিটেড’ রিলিজ করছে?

ইয়েস। দেবের সঙ্গে আমার প্রথম কাজ।

আর যদি দু’টোই রিলিজ করে?

আমি তো বলব গার্লফ্রেন্ডকে সঙ্গে নিয়ে আনলিমিটেড হইচই করুন। এটাই এ বছরের পুজো স্লোগান (হাসি)। কারণ আমি মাঝখানে পড়ে গিয়েছি। দু’টোই আমার ছবি। আমার দায়িত্ব। দুটো ছবি কিন্তু নর্থ পোল, সাউথ পোল। দুটোর দর্শকের মাইন্ড সেটও আলাদা হবে।

দেবের সঙ্গে প্রথম কাজ করে কেমন লাগল?

দেবের ইউএসপি হল ও লাইভলি মানুষ। ওর চারপাশে যারা থাকে তারা কিছু নিয়ে আপসেট হলেও ও হতে দেবে না। প্রচণ্ড ঠান্ডা মাথায় সব কিছু সামলায়। আমরা উজবেকিস্তানে ভার্জিন লোকেশনে শুট করেছি। আন্তর্জাতিক বাজারে ওই জায়গাটা এখনও দেখানো হয়নি। ফলে ওখানকার লোক শুটিং ফ্রেন্ডলি নয়। শুটিংয়ের কনসেপ্ট কী, তারা জানে না। তাদের শুটিং বোঝানো, এখান থেকে ৬৫ জনের টিম গিয়েছিল। সেটার একটা চাপ। তার পর লোকেশন থেকে প্রতিদিন কিছু রিকোয়ারমেন্ট থাকে। ক্যামেরা, লাইট, লোকজন— অ্যাজ আ প্রোডিউসারসেগুলো জোগাড় করাটাই দেবের কাছে একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। শুটিংয়ের মধ্যেই আমরা যেটুকু সময় পেয়েছি একটু ঘুরে দেখেছি। ও কিন্তু হিসেবপত্র, পরের দিনের শুটিং…সে সব টেনশন নিয়েই বসে থাকত। ওর জন্যই কাজটা এত ভাল করে ফিরেছি কলকাতায়।

দেবের মতো সুপারস্টারের সঙ্গে কাজ করার সুবিধে, অসুবিধে কী?

দেখুন, ও তো সুপারস্টার। ফলে ও স্ক্রিনে থাকলে ওর দিকে চোখ বেশি যাবেই। এটা ডিসঅ্যাডভানটেজ। আর অ্যাডভানটেজ হল, এই ছবিতে সব অ্যাক্টরদের ইক্যুয়াল প্রায়োরিটি দিয়েছে। প্রত্যেকটা পোস্টারে চারটে ছেলেকেই দেখা যাচ্ছে। ও কিন্তু একা নিজেকে প্রায়োরিটি দেয়নি।

আর ‘গার্লফ্রেন্ড’এ আপনার চরিত্র কেমন?

গার্লফ্রেন্ডে আমার চরিত্রের সঙ্গে বাস্তবের আমার কোনও মিল নেই। এই ছবিটায় আমার ডায়লগ কম, এক্সপ্রেশন বেশি। ডাল লাইফ মেয়েটার। অর্থোডক্স ফ্যামিলি। সেখান থেকে বনির সঙ্গে দেখা হওয়া। প্রেম। ফ্যামিলি ডিফারেন্স, স্টেটাস- এ সব পেরিয়ে কী করে প্রেম হয় সেই জার্নিটা রয়েছে ছবিতে। আদৌ হ্যাপি এন্ডিং হয় কিনা সেটাই গার্লফ্রেন্ডে দেখতে হবে।

আপনার বয়ফ্রেন্ড অর্থাৎ বনির সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করাটা কি কোথাও অন্যদের তুলনায় বেশি স্পেশ্যাল?

দেখুন, বনি ইজ মাই ইমোশন। কিন্তু কাজের মধ্যে রিলেশন আসে না। ছবি যদি বলেন, সেটা আমার কাজ। যে কোনও হিরোই ইক্যুয়াল প্রায়োরিটি পায়। তবে বনির সঙ্গে কাজেরও সুবিধে, অসুবিধে আছে।

সুবিধেটা কী?

কো অ্যাক্টর চেনা না হলে, তার সঙ্গে রোম্যান্স করাটা চ্যালেঞ্জিং। তবে সেটাই আমাদের কাজ। প্রতিদিন সেটাই শিখছি। আর সেটাই যদি যে মানুষটাকে ভালবাসি, তার বিপরীতে হয়, তা হলে সেই কমফর্ট জোনটা বড় ইউএসপি। দু’জনের মুড ভাল বা মুড খারাপ খুব সহজে বোঝা যায়।

আর অসুবিধে?

অসুবিধে হল, ধরুন অন্য কেউ থাকলে যদি রিঅ্যাক্ট করি, তা হলে অন্য হিরো থাকলে ভাবল হিরোইন কোনও কারণে রিঅ্যাক্ট করছে। সেটা নিয়ে আর ভাববে না। কিন্তু বনি সেটা ক্যাচ করবে। হয়তো বলবে, তুমি এটা মিন করলে আমায়…।