যেভাবে দেশ চালাবেন ইমরান খান
দরিদ্র ও এতিমদের জন্য ওয়েলফেয়ার সিস্টেম বা দাতব্যমূলক ব্যবস্থা চালু করবো। যদিও আমাদের সমাজ এটার পুরো বিপরীত বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের একাদশ সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খান।বৃহস্পতিবার (২৬ জুলাই) ইসলামাবাদে নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।ইমরান খান বলেন, যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমি নির্বাচনে এসেছিলাম, তা আমি এখন পূরণ করার সুযোগ পেয়েছি। আমরা সফল। জনগণ আমাদের সমর্থন দিয়েছেন।
পাকিস্তানের হবু প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যদি ভারত সরকার আমাদের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন চায় তাহলে আমরা তাদের সঙ্গে আছি। যদি তারা এক পা অগ্রসর হয় তাহলে আমরা দুই পা অগ্রসর হব। কিন্তু তাদের এক পা এগিয়ে আসতে হবে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন ও দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠা একমাত্র উপায় সংলাপ। এসময় ভাষণে জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে দুই দেশের মধ্যে চলমান সমস্যা সমাধানের জন্য ভারতের সঙ্গে আলোচনারও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সরকারি বাসভবন ব্যবহার করবেন না বলে ঘোষণা দিয়ে পিটিআইপ্রধান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আর গভর্নর বাড়ি হবে পর্যটন স্থান।জাতির উদ্দেশ্যে বিশ্বকাপ জয়ী এই অধিনায়ক আরও বলেন, গরিব ও দুর্বল, যারা সারাদিন কঠোর পরিশ্রমের পরও বাচ্চাদের খাবার দিতে পারে না তাদের জন্য আমি কাজ করব। আমরা মদিনা রাষ্ট্রের আদর্শ অনুযায়ী পাকিস্তান চালাব। পাকিস্তান নিয়ে আমার স্বপ্নপূরণ হতে চলায় আল্লাহকে ধন্যবাদ।
গতকাল বুধবার পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ২৭২টি আসনে সরাসরি ভোট হয়। সরকার গঠনের জন্য দরকার ১৩৭ আসন। এদিকে নির্বাচনে ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই) নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ আসন পেয়ে বিজয়ী হয়েছে।
নির্বাচনের প্রাথমিক বেসরকারি ফলে দেখা যাচ্ছে, পাকিস্তান ইমরান খানের পিটিআই পেয়েছে ১২০টি আসন এবং নওয়াজের পিএমএল-এন পেয়েছে ৬৫টি আসন। এ ছাড়া বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৪৪টি, এমকিউএম ৫টি এবং এমএমএ ৯টি আসন লাভ করেছে। যদিও পিটিআই ছাড়া বাকি সব দলই কারচুপির অভিযোগে নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করেছে।
এবার ১০ কোটি ৬০ লাখ নিবন্ধিত ভোটারের মধ্যে ৫০-৫৫ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নজিরবিহীন নিরাপত্তার মধ্যে রক্ত ঝরিয়ে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়। সেনা, পুলিশ সদস্যসহ নিরাপত্তা বাহিনীর আট লাখের মতো সদস্য মোতায়েনের পরও নির্বাচনী সহিংসতায় ৩৬ প্রাণ ঝরেছে।যদিও অভিযোগ রয়েছে তার দল সামরিক মধ্যস্থতার সুবিধা নিয়েছে। তবে ইমরান খান এই অভিযোগ অস্বীকার করেন।
কে এই ইমরান খান?
একসময়কার এই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ১৯৯২ সালে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে দেশের জন্য বিশ্বকাপ জয় করেছিলেন।ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা করেছেন তিনি। প্লেবয় জীবনধারা এবং তিনটি বিবাহের কারণে গণমাধ্যমের মনোযোগ আকর্ষণ করেছিলেন তিনি।১৯৯৬ সালে পাকিস্তানের তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলটি চালু করেন কিন্তু দীর্ঘদিন তিনি নেতা হিসেবে পেছনের সারিতে ছিলেন। পাকিস্তানের দুর্নীতি এবং বংশীয় রাজনীতির বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়েছেন তিনি।