আ’লীগ নেতার স্ত্রীর মর্যাদা চেয়ে লাঞ্ছিত হয়ে ছাত্রলীগ নেত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টা
স্ত্রীর মর্যাদা চাইতে গিয়ে ঝালকাঠি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার মো. শাহ-আলম ও তার স্ত্রীর হাতে নির্যাতিত হয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফারজানা ববি নাদিরা (২৫)।
আজ বুধবার দুপুরে ঝালকাঠি জেলা পরিষদে নাদিরার উপর এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে বলা জানা যায়। নাদিরাকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফারজানা ববি নাদিরা ঝালকাঠি জেলা পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কাজ করছেন। এরই সুবাদে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার মো. শাহ-আলম (৭২) এর সাথে নাদিরার বিশেষ সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে জানা যায়।
নাদিরার অভিযোগ, সরদার মো. শাহ-আলম গত তিন বছর যাবৎ তাকে স্ত্রীর মতো ব্যবহার করলেও তিনি তাকে আইনগতভাবে স্ত্রীর মর্যাদা দিচ্ছিলেন না। গত কয়েকদিন যাবৎ নাদিরা সরদার মো. শাহ-আলমকে তাকে বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা দেয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল।
বুধবার দুপর ১২টায় নাদিরা জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান সরদার শাহ-আলমের কক্ষে অবস্থান নিয়ে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে। এক পর্যায় খবর পেয়ে বিকাল তিনটার দিকে জেলা পরিষদে হাজির হন সরদার শাহ-আলমের স্ত্রী জেলা মহিলা পরিষদের সভানেত্রী শাহানা আলম। তিনি সরদার শাহ-আলমের কক্ষে ঢুকেই নাদিরাকে দেখে তার ওপর চড়াও হয়ে চড় থাপ্পর মারেন। এক পর্যায় তাকে মারতে মারতে রুম থেকে বের করা হয়।
এ সময় বেশ কিছু ছাত্র ও যুবলীগের নেতাকর্মী ও সাংবাদিকরা উপস্থিত হন। সরদার শাহ-আলম ও শাহানা আলম গাড়িতে উঠে জেলা পরিষদ ত্যাগ করতে চাইলে নাদিরাও জোড়পূর্বক তাদের গাড়িতে উঠতে চায়।
এ সময় নাদিরাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলে জেলা পরিষদের দ্বিতীয় তলার ছাদে উঠে সেখান থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। স্থানীয় কিছু যুবক ও কয়েকজন যুবলীগ নেতা নাদিরাকে ধরে ফেলেন এবং তাকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
সদর হাসপাতালের কেবিনে চিকিৎসাধীন ফারজানা ববি নাদিরা বলেন, আসলে আমরা মেয়েরা কারো কাছে নিরাপদ নয়। মনে করেছিলাম এই বয়েস্ক লোকটার কাছে আমি নিরাপদ থাকবো কিন্তু তিনিও আমাকে ভোগের সামগ্রী বানালেন। সরদার শাহ আলমের স্ত্রীর মর্যাদা পাওয়ার জন্য আমি প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নেব।
প্রসঙ্গত, নাদিরা সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাইব্রেরি স্ইান্সে মাস্টার্স শেষ করে ঝালকাঠির আকলিমা মোয়াজ্জেম হোসেন ডিগ্রি কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে।
এ ব্যাপারে সরদার মো. শাহ-আলমের বক্তব্য জানার জন্য তার সেলফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ ব্যপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন ‘এ ধরনের একটি খবর আমি শুনেছি। নাদিরা সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।’
এ ব্যপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট খান সাইফুল্লাহ পনির বলেন, ‘সরদার শাহ আলমের সাথে জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফারজানা ববি নাদিরার বিষয়টি আমি শুনেছি। এটা তার ব্যক্তিগত ব্যপার। আমি বরিশাল সিটি নির্বাচনে আছি। ঝালকাঠি এসে বিষয়টি নিয়ে দেখব।’