মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি নারীর খণ্ডিত লাশ, অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে
নিউজ ডেস্ক: মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশি এক নারীর কয়েক টুকরা করা লাশ উদ্ধার করেছে স্থানীয় পুলিশ। দুটি ব্যাগের মধ্যে টুকরাগুলো ভরা ছিল। তার নাম সাজেদা ই বুলবুল (পাসপোর্ট নম্বর BA0732570)। নিহতের পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন, সাজেদার স্বামী শাহজাদা সাজু এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। হত্যার পর লাশ গুম করে ব্যাগে ঢুকিয়ে নদীর পাশে ফেলে দিতে চেয়েছিল সে।
গত ৫ জুলাই কুয়ালালামপুরের একটি ব্রিজের কাছ থেকে দুটি ব্যাগ থেকে ছয় টুকরা করা মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পরিত্যক্ত অবস্থায় দুটি ব্যাগ দেখতে পেয়ে এক নারী পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ব্যাগ দুটি থেকে ৩০-৪০ বছর বয়সী এক নারীর খণ্ডিত মৃতদেহ উদ্ধার করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পটুয়াখালী সদরের পুরাতন আদালতপাড়ার আনিস হাওলাদারের ছোট মেয়ে সাজেদা ই বুলবুল। ২০০৪ সালের ২৪ এপ্রিল একই জেলার মির্জাগঞ্জের সুবিদখালীর ঘটকের আন্দুয়া এলাকার সোহরাব ফকিরের ছেলে শাহজাদা সাজুর সঙ্গে বিয়ে হয় তার। ২০১৬ সালের ৩ ডিসেম্বর উচ্চশিক্ষার জন্য স্ত্রীকে মালয়েশিয়ায় নিয়ে যায় শাহজাদা।
বিয়ের পর থেকে শাহজাদা সাজু ও তার পরিবারের সদস্যরা সাজেদার ওপর নির্যাতন করতো বলে অভিযোগ করেছেন তার বোন উপমা ফারহান। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার বোনকে হত্যার পর গুম করতে চেয়েছিল তার স্বামী শাহজাদা। কিন্তু তা করতে পারেনি। ভাগ্যক্রমে তার লাশটা উদ্ধার হয়েছে। আমার বোনকে বিয়ের পর থেকে নির্যাতন করতো সে। নেশা করে প্রায় প্রতিনিয়ত আমার বোনকে মারধর করতো। সবশেষ সে আমার বোনকে মেরে ফেলেছে। আমরা এর বিচার চাই। আমার বোনের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে চাই।’
কুয়ালালামপুর পুলিশ প্রধান দাতুক সেরি মাজলান লাজিম স্থানীয় গণমাধ্যম ‘নিউ স্ট্রেইট টাইমস’কে জানান, দুটি ব্যাগের মধ্য থেকে ছয় টুকরা করা মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ‘আল্লাহ’ লেখা কানের দুল, নেকলেস ও একটি চাবি রিং পাওয়া গেছে। নিহতের পরিচয় নিশ্চিতের চেষ্টা চলছে।
তদন্তকারীরা পরিচয় নিশ্চিত ও ঘটনা সম্পর্কে জানতে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করছেন।
মালয়েশিয়ায় বাঙালি কমিউনিটির সহায়তায় নিহতের পরিচয় নিশ্চিত করেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই কুয়ালালামপুরে থাকা শাহজাদা ও বাংলাদেশে থাকা তার পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে বলে জানান নিহতের বোন উপমা ফারহান।
তিনি বলেন, শাহজাদাকে মালয়েশিয়ান পুলিশ খুঁজছে। তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে পটুয়াখালীতে থাকা তার পরিবারের সদস্যরাও পালিয়েছে। আমার বোনের সাত বছর বয়সী একটা মেয়ে আছে। তার কোনও সন্ধানও আমরা পাচ্ছি না।’
উপমা বলেন, ‘আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। আমার বোনের লাশ ও তার মেয়েকে দেশে ফিরিয়ে আনতে চাই। সরকার এ বিষয়ে আমাদের সহায়তা করবে আশা করি।’