দাদার পাশেই দাফন ছোট্ট মুক্তামনির
নিজস্ব প্রতিবেদক : রক্তনালীর টিউমারে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া সাতক্ষীরার শিশু মুক্তামণিকে দাফন করা হবে আজ বুধবার বাদ জোহর। ছোট্ট শিশুটিকে চিরশায়িত করার প্রস্তুতিই চলছে তাদের সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কামারবায়সা গ্রামের নিজ বাড়িতে। বাদ জোহর নামাজে জানাযা শেষে দাদার কবরের পাশে দাফন করা হবে ছোট্ট মুক্তামনিকে। সকাল ৮টার কিছুক্ষণ আগে মুক্তামনির মৃত্যুর খবরে পুরো কামারবায়সা গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে। মুক্তামনিকে শেষবারের মতো দেখতে তাদের বাড়িতে আসছেন পড়শী ও আত্মীয়-স্বজনরা। প্রাণপ্রিয় মেয়ের মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না মুক্তামনির বাবা ইব্রাহিম হোসেন ও তার মা আসমা খাতুন। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন আত্মীয়-স্বজনসহ প্রতিবেশীরা। তাদের আর্তনাদে কামারবায়সা গ্রামের আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।
মুক্তামনির বাবা জানিয়েছেন, গত কয়েকদিন ধরেই জ্বরে আক্রান্ত ছিল সে। কথা বলতেও পারছিলো না মেয়েটি। তার অস্ত্রোপচার হওয়া ডান হাতটি ফুলে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিলো। ক্ষতস্থানে নতুন করে পচনও ধরেছিলো। ডান হাত থেকে বেরিয়ে আসছিল সাদা পোকা আর রক্ত। মেয়ের মৃত্যুর পর এখন আর কিছুই চাওয়ার নেই উল্লেখ করে ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ওর জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত চেষ্টা করেছেন। এমন কোনো কিছু নেই যা সরকার করেনি। আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। এখন মুক্তামনির মাগফিরাত কামনা ছাড়া আমার আর কিছুই চাওয়ার নেই।
গত ২০১৭ সালের ১০ জুলাই তাকে ঢাকায় ভর্তি করার পর থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের দুই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. আবুল কালাম আজাদ ও ডা. সামন্তলাল সেনের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল টিম ছয় মাস ধরে তাকে চিকিৎসা দেয়। এ সময় তার দেহে কয়েক দফা অস্ত্রোপচার করা হয়। চিকিৎসায় তার স্বাস্থ্যের আশানুরূপ উন্নতি হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও মুক্তামণির চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। তিনি সরকারি খরচে তার চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এদিকে ঢাকায় টানা ছয় মাস চিকিৎসা শেষে এক মাসের ছুটিতে মুক্তামণি ২০১৭ সালের ২২ ডিসেম্বর বাড়ি ফিরে যায়। এর পর থেকে ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী বাড়িতে রেখে তার চিকিৎসা চলতে থাকে। এরই মধ্যে তার অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে।