বৃহস্পতিবার, ৩১শে মে, ২০১৮ ইং ১৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কুমারপাড়ায় বৈশাখেও প্রানের স্পন্দন নেই

চোখে চিন্তার ছাঁপ, এই ভাবে অলস দিন কাটাচ্ছে এক জন বিক্রতা 

বিশেষ প্রতিনিধি : পহেলা বৈশাখ। বৈশাখ মানেই মেলা আর বান্নী। বাংলা নববর্ষের এ দিনটিকে সামনে রেখে এক সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মৃৎশিল্পীরা ব্যস্ত সময় পার করলেও বর্তমানে তার উল্টো চিত্র। মাটির জিনিস পত্রের তেমন চাহিদা না থাকায় স্বল্প পরিসরে মাটির পাত্র তৈরীতেই নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখছে মৃৎশিল্পীরা। এতে করে প্রানহীন হয়ে পড়েছে প্রাচীন এ শিল্পটি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারী পৃষ্টপোষকতা আর সকলের আন্তরিকতাই পারে এ শিল্পটিকে বাঁচিয়ে রাখতে। প্রতি বছরই এ সময়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন স্থানে মেলার হাট বসে। মেলায় বিক্রীর জন্য মাটির তৈরী হাড়ি, পাতিল, কলসি, পুতুল, শিশুদের খেলনাসহ বিভিন্ন ধরনের মাটির পাত্র তৈরীর ধূম লেগে থাকত জেলার কুমাড় পল্লী গুলোতে। প্লাষ্টিক সামগ্রী ব্যবহারের চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি আধুনিক জীবন যাত্রার কারনে ঐতিহ্যবাহী শিল্পটি হুমকীর মুখে পড়েছে। এবারের বৈশাখে মাটির তৈরী জিনিসের চাহিদা অনেকটাই কমে গেছে। আগে মেলা উপলক্ষে দূর-দূরান্ত থেকেও মাটির পাত্রের চাহিদা থাকলেও এবছর তেমন কোন চাহিদা নেই। জেলায় ৬/৭ হাজার নারী-পুরুষ এ শিল্পে কাজ করলেও প্রতিনিয়ত তা কমছে।
সব মিলিয়ে অনেকটাই নির্জীব হয়ে পড়েছে জেলার মৃৎশিল্প। মুলত চৈত্র মাসেই মেলার সামগ্রী তৈরীর প্রস্তুতি শুরু হয়। এবারের চিত্র অন্যরকম। এতে করে এ শিল্পটি এখন প্রায় বিলীন হওয়ার পথে। মৃৎ শিল্পীদের দাবী শিল্পটিকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারসহ সকলেরই আন্তরিকতার প্রয়োজন রয়েছে। মৃৎশিল্পী অনীল পাল জানান, আগে মাটির কাজের খুব চাহিদা ছিল। এখন আর সেই চাহিদা নেই।
এ ব্যাপারে সাহিত্য একাডেমীর সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন বলেন, আগা শুধু বৈশাখেই নয়, সারা বছরই মাটির জিনিসের চাহিদা ছিল। প্লাষ্টিক সামগ্রীর আগ্রাসনে তা এখন অনেক কমে গেছে। জনগন এ বিষয়ে সচেতন হলে এবং সেই সাথে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আবারো ঘুরে দাড়াবে ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পটি। এ শিল্পটিকে লালন করলে বাংলা দেশের জামদানির মত মৃৎশিল্পও বিশ্ব ঐতিহ্যে স্থান করে নিতে পারবে।

Print Friendly, PDF & Email