বৃহস্পতিবার, ৩১শে মে, ২০১৮ ইং ১৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশে মেট্রোরেলে খরচ ভারতের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি কেন?

ভারতের চেন্নাইতে মেট্রোরেলে প্রতি কিলোমিটার খরচ পড়ছে সাড়ে ৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ঢাকায় এ খরচ দ্বিগুণেরও বেশি। গত বছর চেন্নাইতে ওই মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং এ কাজের কিছু অংশ পাতাল রেলের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সহজ ও স্বস্তিদায়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা হিসেবে মেট্রোরেল বিশ্বের অনেক শহরেই বেশ জনপ্রিয়। ঢাকার উত্তরা ও মতিঝিল পর্যন্ত মিরপুর হয়ে ২০.১ কিলোমিটার মেট্রোরেল নির্মাণ শেষ হলে ঘন্টায় ৬০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করতে পারবে। যাইহোক ভারতের চেন্নাই, দিল্লি অথবা মুম্বাইয়ের চেয়ে ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণে দ্বিগুণেরও বেশি খরচ হচ্ছে।

ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লি: (ডিএমটিসিএল) মেট্রোরেল নির্মাণ করছে। ভারতে প্রতি কিলোমিটার মেট্রোরেল নির্মাণ খরচ যেখানে ৫০ থেকে ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সেখানে বাংলাদেশে এ খরচ দ্বিগুণেরও বেশি অর্থাৎ ১৩৫ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ঢাকায় যে ২০.১ কিলোমিটার মেট্রোরেল নির্মাণ হচ্ছে তাতে খরচ পড়ছে ২.৭ বিলিয়ন ডলার বা ২২ হাজার কোটি টাকা।

২০১৪ সালে ভারতের ব্যাঙ্গালুরে ৭২ কিলোমিটার মেট্রোরেল নির্মাণে খরচ হয়েছিল ৪.৭ বিলিয়ন ডলার। প্রতি কিলোমিটারে এ খরচ পড়ে ৬৫.৩ মিলিয়ন ডলার। এর ১৩.৭৯ কিলোমিটার ছিল পাতালে। ৬১টি স্টেশনের মধ্যে ১২টি ছিল পাতালে। পাতালে স্টেশন নির্মাণ খরচ মাটির উপরের চেয়ে তিনগুণ বেশি পড়ে। এ বছর প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ পুরোপুরি শেষ হচ্ছে।

ভারতের জয়পুরে একই বছর ১২ কিলোমিটার মেট্রোরেল নির্মাণ খরচ পড়ে ৫০০ মিলিয়ন ডলার। প্রতিকিলোমিটর খরচ পড়ে ৪১.৭ মিলিয়ন ডলার। এ মেট্রোরেলের ২.৭৮ কিলোমিটার ছিল পাতালে। ১১টি স্টেশনের তিনটি ছিল পাতালে। এ প্রকল্পের দ্বিতীয় ভাগের নির্মাণ কাজ ২০১৬ সালে শুরু হয়। থাকছে কুড়িটি স্টেশন। ১.০২ বিলিয়ন ডলার খরচ হওয়ায় প্রতি কিলোমিটারে খরচ পড়ছে ৪২.৫মিলিয়ন ডলার। ২০২১ সালে এ প্রকল্প শেষ হবে। আার চেন্নাইতে যে ৫৫.৫ মিলিয়ন ডলার খরচ হচ্ছে মেট্রোরেলে তার অধিকাংশই পাতালে।

বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক শামসুল হক বলেন, ভারতের চেয়ে বাংলাদেশে মেট্রোরেল নির্মাণে খরচ হচ্ছে বেশি। দুটি দেশের মেট্রোরেলে পার্থক্য রয়েছে। তাছাড়া দেশটিতে বেশ কয়েকটি এধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ায় তাদের অভিজ্ঞতা রয়েছে।

ঢাকায় মেট্রোরেল প্রকল্পে জাপান ৭৫ ভাগ অর্থায়ন করছে এবং এক্ষেত্রে ঋণের সুদ হচ্ছে শুণ্য দশমিক শুণ্য এক ভাগ। ১০ বছর গ্রেস প্রিয়ড ধরে ৪০ বছরে এ ঋণ শোধ করতে হবে।

ঢাকা ট্রিবিউন

Print Friendly, PDF & Email