জাতীয় সংসদ নির্বাচন : বাঞ্ছারামপুর এর হালচাল
সালমা আহমেদ,বাঞ্ছারামপুর : ব্রাহ্মণবাড়িয়া-০৬,বাঞ্ছারামপুর উপজেলা।এক সময় ছিলো বিএনপির ঘাটি।মূলত বাঞ্ছারামপুরে বিএনপির গোরাপত্তন করেন ১৯৯১সালে সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম এটিএম ওয়ালী আশরাফ এমপি হয়ে।তিনি আকষ্মিকভাবে মারা গেলে উপ-নির্বাচনে এমপি হয়ে আসেন ঢাকসুর তুখোড় ছাত্রনেতা ও সাবেক মরহুম এমপি শাহজাহান হাওলাদার সুজন।মাঝখানে হাল ধরেন লিব্রা ফার্মাসিটিক্যালসের চেয়ারম্যান ড.রওশন আলম।২০০১ সালে ঝোঁপ বুঝে কূপ মারেন পুলিশের সাবেক এআইজি মো.এম এ খালেক।সেই ঘাটিকে ২০০৮সালে লাখো ভোটের ব্যবধান ও বিপুলভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্যা.এবি তাজুল ইসলাম এমপি।এরপর,পরপর একাধারে ৩ বারের সফল এমপি ক্যা.তাজ এমপি।দায়িত্ব পান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে।মন্ত্রী হয়েই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সব উপজেলা সহ তার নির্বাচনী আসন বাঞ্ছারামপুর উপজেলাকে তিনি ধীরে ধীরে বদলে দিতে থাকেন।
পিছিয়ে থাকা হাওরবেষ্টিত উপজেলা বাঞ্ছারামপুরকে নিয়ে যান অনন্য উচ্চতায়।এশিয়ার বৃহত্তম ও বাংলাদেশে প্রথম ওয়াই (ত্রিমুখী সেতু)ব্রীজ করেন ১ শত ২৭ কোটি টাকায়।ঘড়ে ঘড়ে বিদ্যুৎ,উপজেলার ১২৬টি গ্রামের মধ্যে পারস্পরিক সংযোগ সড়ক নির্মান করেন প্রতিকূল ব্যবস্থার মধ্যেও।ঢাকার সাথে ফেরী যোগাযোগ স্থাপিত হয়।যা এখন ভুলতা-আড়াইহাজার-বাঞ্ছারামপুর প্রায় ২ দশমিক ৮ কি:মি: ৩য় মেঘনা সেতু হিসেবে তৈরীর জন্য একনেক অনুমোদন দিয়ে ইতোমধ্যে সম্ভ্যাব্যতা যাচাই প্রকল্পের জন্য ৪০ কোটি টাকা ছাড়ও করে দিয়েছে সরকারের সেতু বিভাগ। প্রায় ৪ লক্ষাধিক জনসংখ্যা অধ্যুষিত বাঞ্ছারামপুর উপজেলা দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশনা মেনে না চলার কারনে বাঞ্ছারামপুরে বিএনপির নীরব ভোট ব্যাংক থাকলেও কেবল বলিষ্ঠ নের্তৃত্বের অভাবে দলটি বার বার পিছিয়ে পরছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন বর্তমানে ২০১৮ সালে জাতীয়তাবাদী দলটির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া যখন কারাগারে,ঠিক তখন পাদ-প্রদীপ এবং সীমানার শেষ প্রান্তে শেষ আশার আলোর বিন্দু হয়ে আলোকবর্তিকা হয়ে এসেছেন বিশিষ্ট কৃষিবিদ ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের তুখোড় ছাত্রনেতা মেহেদী হাসান পলাশ।তরুন এই নেতা রীতিমতো ভেল্কিবাজির মতো চমক দেখাতে শুরু করেছেন দেশের বিরুপ রাজনৈতিক পরিস্থিতিতেও।অনেকে মনে করছেন আগামী নির্বাচনে ক্যা.তাজ/মহি/বাবু বনাম কৃষিবিদ পলাশের সাথে লড়াই হলে-বিষ্মিত হওয়ার কিছু থাকবে না।তবে,সাবেক এমপি এম.এ খালেক,ছাত্রনেতা রফিক শিকদার,এডভোকেট জিয়াউদ্দিন তো মনোনয়ন চাইবেনই।ধারনা সূচকে,বিএনপি হতে এম.এ খালেক অথবা পলাশ-এদের যে কেউ একজন মনোনয়ন পাবার সম্ভাবনাই বেশী।
তবে,এলাকাবাসী মনে করেন-খালেক বা পলাশ যে-ই মনোনয়ন পাক,নের্তৃত্বে ক্যা.তাজের কাছে সব নস্যি।কারন,তিনি উন্নয়নের রুপকার হিসেবে এলাকায় খ্যাতি অর্জন করে ভোটারদের মন জয় করে নিয়েছেন।এদিকে কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মহি আরেক রাজনৈতিক কারিগর হিসেবে মনে করেন এলাকাবাসী।শেখ হাসিনা যদি নতুন মুখের কথা ভাবেন তাহলে এলাকায় তুমুল জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব মহিউদ্দিন মহির নাম আসবে সবার আগে।কারন বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি একজন সংসদ সদস্যের চেয়ে বেশী ভোট পেয়েও পরাজিত দেখানো হয়।
এ ছাড়া-বেশ কিছুদিন যাবত ঘরে ঘরে এলাকায় নৌকার পক্ষে ভোট চাচ্ছেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাবেক উপ-প্রচার সম্পাদক,শিক্ষাবিদ, সাধাসিদে ও ভদ্র ক্লিন ইমেজের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সাঈদ আহমেদ বাবু।ক্যা.তাজ নির্বাচন না করলে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি গোলাম মোস্তফা কামাল মনোনয়ন চাইবেন বলে জানান।
অভিজ্ঞ রাজনৈতিকবিদরা মনে করছেন নিজের তৈরী করা আওয়ামী ঘরে ক্যা.তাজ আর কাউকে ঢুকতে দিবেন না।আর যদি কোন দৈব কারনে তিনি নির্বাচন না করেন সেক্ষেত্রে মনোনয়ন নিয়ে শুরু হবে তুমুল প্রতিযোগিতা।