‘আবগারি শুল্ক প্রত্যাহার নিয়ে সরকারের উচ্চমহলে চিন্তাভাবনা চলছে’
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্যাংক হিসাবে বাড়তি আবগারি শুল্ক প্রত্যাহারের ইঙ্গিত দিয়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, এই মুহূর্তে বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চমহলে চিন্তাভাবনা চলছে। এ বিষয়ে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান আসবে বলে তিনি আশা করেন।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।এর আগে সরকারি ও বিরোধী দলের বেশ কয়েকজন সাংসদ ব্যাংক হিসাবে বাড়তি আবগারি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, আমাদের নেতৃত্ব যিনি সরকার পরিচালনা করেন, আমাদের অর্থমন্ত্রী এঁরা বোবা কালা নন। এঁরা জনগণের মধ্যে বসবাস করেন। জনসমাজে বসবাস করেন। সংসদের নেতা। এসব কথা শুনে এবং বাইরে জনগণের কথা শুনে আমার বিশ্বাস, এ বিষয়েও আমরা একটা গ্রহণযোগ্য সমাধানে আসতে পারব। আমরা আশ্বস্ত করছি, এ সম্পর্কে এ মুহূর্তে এ বিষয়ে সরকারের উচ্চমহলে চিন্তাভাবনা চলছে। ’
তিনি আরও বলেন, আবগারি শুল্ক আছে ১৯৪৭ সাল থেকে। আগে কম ছিল। বেড়ে বেড়ে ৫০০ টাকা হয়েছে। এটা সব অ্যাকাউন্টে ছিল। এক হাজার টাকার একাউন্টেও ছিল। এক কোটি টাকার অ্যাকাউন্টেও ছিল। সবাই এটা দিয়ে আসছি। বরং এখন বড় অ্যাকাউন্টে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা করা হয়েছে। এখানেও ন্যায্যতা মূলনীতি কল্যাণ সেটা ঠিকই আছে।
এম এ মান্নান বলেন, সাংসদেরা যেসব প্রস্তাব দিচ্ছেন, সেগুলো অর্থ মন্ত্রণালয় গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবে। বাজেট যখন পাস হবে তখন প্রতিটি বিষয় আবার পর্যালোচনা করা হবে।
১৫ শতাংশ ভ্যাটের বিষয়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভ্যাট নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। সবার প্রতি সম্মান রেখে কয়েকটি কথা বলতে চাই। ভ্যাট সারা বিশ্বে এই মুহূর্তে ১৬৯টি দেশে প্রচলিত আছে। সারা বিশ্বে এটা স্বীকৃত, বৈজ্ঞানিক। এটা সবাই গ্রহণ করেছেন। সারা বিশ্বে ভ্যাটের গড় ১৪ দশমিক শূন্য ৮। আমরা সেখানে ১৫–তে আছি। এটা নিয়ে আলোচনা চলতে পারে। কিন্তু ভ্যাটের ন্যায্যতা সাম্যতা নিয়ে প্রশ্ন নেই। ’
এম এ মান্নান বলেন, ‘নিম্ন আয়ের মানুষ, ৬০-৭০ ভাগ। তাঁদের সব নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে। চাল, ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, তেল, লুঙ্গি, গামছা কোনো কিছু ভ্যাটের আওতায় নেই। বাসের ভাড়া, ট্রেনের ইকোনমি ক্লাস, লঞ্চের ভাড়া ভ্যাটের আওতায় নেই। তাহলে আমরা কীভাবে অকল্যাণমূলক কাজ করলাম? বৃহদাংশ মানুষের কল্যাণে এটা আমরা করলাম। ’
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর সাফাই গেয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এই ব্যাংকগুলোর মালিক জনগণ। যে টাকা আমরা এদেরকে দিচ্ছি, সেটা জনগণের টাকা আমরা স্বীকার করি। একজন গৃহস্থ যখন তাঁর কোনো সদস্য একটা সমস্যায় পড়ে রোগাক্রান্ত হন, তখন তাঁর পুঁজি দিয়ে খরচ করে। ঠিক সেভাবে আমরা আমাদের ব্যাংকগুলোকে সুযোগ করে দিচ্ছি। আমরা ব্যাংকগুলোর আইন পরিবর্তন করেছি। করপোরেট আইন করেছি। বোর্ড পুনর্গঠন করেছি। বোর্ডে রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অভিজ্ঞ আমলাদের নিয়ে এসেছি। ব্যাংক ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। ’
তিনি বলেন, ব্যাংক খাত নিয়ে কিছু প্রশ্ন আছে জনগণের। ব্যাংকিং খাত নিয়ে বলা হয় যে এখানে বিশাল বিশাল অপচয় হয়েছে। ডাকাতি পর্যন্ত বলা হয়।
এ সময় প্রতিমন্ত্রী ব্যাংকগুলোর পক্ষে বলেন, ‘এই ব্যাংকগুলো আমাদের পূর্বপুরুষেরা জনগণের কল্যাণের জন্য করেছিল। গ্রামাঞ্চলে যখন কোনো বাইরের ব্যাংক যেতে চায় না, তখন গ্রামেগঞ্জে, হাটবাজারে ছোট অনুদানগুলো তারা বিতরণ করছে। ’