মঙ্গলবার, ১৩ই জুন, ২০১৭ ইং ৩০শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

রমজানে সুস্থ থাকুক ত্বক

AmaderBrahmanbaria.COM
মে ৩১, ২০১৭

---

অনলাইন ডেস্ক : শারীরিক ও মানসিকভাবে নিজেকে সুস্থ ও শুদ্ধ রাখার প্রতিশ্রুতি নিয়ে আমরা পালন করি মাহে রমজান। এই পবিত্র মাসের পর থাকে মুসলমানদের বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। রমজান যেহেতু চলেই এসেছে, সেহেতু আমরা সবাই রোজাকেউপলক্ষ করেই নিজেদের ডেইলি রুটিনের পরিকল্পনা করছি। এসময় ত্বকের যত্ন বিষয়ে জানাচ্ছেন ডার্মাটোলজিস্ট ডা. তাওহীদা রহমান ইরিন।

এ বছর রোজা শুরু হয়েছে গ্রীষ্ম ও বর্ষার মাসে। রোজা ও আবহাওয়ার এ পরিবর্তন ত্বকে নানা ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। হেলদি ডায়েট ও ডেইলি স্কিন কেয়ার রুটিন- এ দুটি বিষয়ে একটু খেয়াল রাখলেই পুরো রমজানে তো স্বাস্থ্যোজ্জ্বল থাকবেই আর এর সঙ্গে আসন্ন ঈদ উৎসবে নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব হবে।

ডেইলি স্কিন কেয়ারে আছে দুই-চারটি টিপস। যেমন- ক্লিনিং টোনিং, আর্দ্রতা ও সুরক্ষা। দীর্ঘ সময় পানি পান না করার কারণে ত্বক স্বাভাবিকভাবেই একটু শুষ্ক হয়ে যায়। আর যাদের স্কিন ড্রাই অথবা অ্যাটপিক ডার্মাটাইটিস বা ইকথাইওসিসে ভুগছেন তাদের জন্য এ শুষ্কতা সমস্যা হয়ে দেখা দেয়। তাই এ সময় ক্ষারযুক্ত সাবানের পরিবর্তে মাইল্ড সোপ বা ক্লিনজার ব্যবহার করা ভালো। শুধু মুখ, হাত, পা নয় শরীরের অন্যান্য অংশের জন্যও তা প্রযোজ্য। আর টোনার বা ত্বকের সজীবতা ধরে রাখার জন্য গোলাপজল বা ঠাণ্ডা পানির বিকল্প নেই।

ফ্রিজে একটি স্প্রে বোতলে রোজ ওয়াটার ও পানি মিশিয়ে রাখুন। কয়েকবার মুখে স্প্রে করুন, ত্বকে মুহূর্তেই সতেজ ভাব এনে দেবে। ওজুর মাধ্যমে ত্বক স্বাভাবিকভাবে পরিষ্কার থাকে। বাড়তি কিছু করার প্রয়োজন নেই। তাই প্রতিবার মুখ ধোয়ার পর ওয়াটার বেজড ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারে ত্বকের আর্দ্রতা হারানোর ভয় থাকে না। আমাদের চোখ ও ঠোঁট মুখমণ্ডলেরই একটি অংশ। এ দুটি জায়গার যত্নও একটু ভিন্ন হয়ে থাকে। প্রথমে আসি চোখ প্রসঙ্গে। চোখের নিচের ত্বক শরীরে অন্যান্য অংশের তুলনায় একটু বেশি পাতলা ও সংবেদনশীল। আর দেখা যায়, রমজানের শেষদিকে চোখের নিচে কালো দাগ মুখের সৌন্দর্যহানির বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আমার পরামর্শ হলো, রাতে শোবার সময় চোখের চারপাশের নাজুক স্থানে আই ক্রিম ব্যবহারে এই হারিয়ে যাওয়া সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব। আর এই আই ক্রিমটি ফ্রিজে সংরক্ষণ করলে বাড়তি কিছু সুবিধা পাওয়া যায়।

ঠাণ্ডা ক্রিমটি চোখের ত্বক টান টান তো রাখবেই, এ ছাড়া ডার্ক সার্কেল বা ফোলা ভাব ধীরে ধীরে কমিয়ে আনবে। ঠোঁট ফাটা বা চামড়া ওঠা আরেকটি প্রধান সমস্যা। আমরা মনে করি, ঠোঁটে যদি লিপবাস ব্যবহার করি তাহলে রোজা ভেঙে যাওয়ার আশঙ্ক থাকে। আসলে তা নয়, আমরা যদি সুগন্ধিমুক্ত, এসপিএফযুক্ত লিপবাস ব্যবহার করি সতর্কতার সঙ্গে, তাহলেই আর ভয়ের কিছু থাকে না। ছেলেমেয়ে সবাইকে ৫০ এসপিএফযুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। এখন থেকে ওয়াটার বেজড, টিনটেড, ইমালশন বা জেল সানস্ক্রিন ব্যবহারের সুঅভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। হেলদি ডায়েট মেনে চলার সবচেয়ে সুন্দর সময় হচ্ছে রমজান। পুষ্টিকর ও সুস্বাদু খাবার দিয়ে সাজিয়ে ফেলুন খাবারের মেন্যু। পানিশূন্যতা এড়ানোর জন্য ইফতার ও সেহরি মধ্যে ৮ গ্গ্নাস পানি ও সঙ্গে ফলের রস, ডাবের পানি, লেবুর শরবত পান করুন। চা, কফি যতটা সম্ভব এড়ানোর চেষ্টা করুন। খেজুর, বাদাম, ড্রাই ফ্রুটস ইফতারের আকর্ষণীয় উপাদান। তেলে ভাজা খাবারের পরিবর্তে সালাদ, গ্রিল্ড বেকড মাছ বা মুরগি, প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন- ছোলা ও দইয়ের স্থান দিতে হবে খাদ্য তালিকায়।

টায়ার্ড লুক এড়ানোর জন্য দুটি জিনিস খুব বেশি জরুরি। পর্যাপ্ত ঘুম ও নিজেকে দুশ্চিন্তামুক্ত রাখা। সবাই সুস্থ দেহ ও সুন্দর মন নিয়ে পালন করুন আত্মত্যাগ ও আত্মসংযমের মাস, মাহে রমজান।

এ জাতীয় আরও খবর