নবীনগরে মেয়রের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের
---
তৌহিদুর রহমান নিটল , ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিনের বিরুদ্ধে সকল কাউন্সিলররা একত্রিত হয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন। গত ১১ মে বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কাছে মেয়রের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দেন কাউন্সিলররা।
লিখিত অভিযোগকারীরা হলেন, পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোঃ কবির হোসেন, কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেন, রমজান আলী, দ্বীন ইসলাম, যদুনাথ ঋষি, জাহাঙ্গীর আলম, রশিদা বেগম, আবু ছায়েদ, রেহেনা খাতুন ও আবু হানিফ।
জেলা প্রশাসকের কাছে দেওয়া লিখিত অভিযোগে পৌরসভার ১২ কাউন্সিলরদের মধ্যে ১০ কাউন্সিলররা মেয়র মাঈন উদ্দিনের বিরুদ্ধে পৌরসভার অর্থ আত্মসাৎসহ স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ আনেন। এছাড়া পৌরসভার আইনের তোয়াক্কা না করেই মেয়র মাঈন উদ্দিন ক্ষমতার অপব্যবহার করে ব্যাপক আর্থিক অনিয়মের মাধ্যমে পৌরসভার তহবিল শূন্যের কোঠায় নামিয়ে এনেছেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২০ অক্টোবর পৌরসভার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে প্রায় আড়াই বছরে দুর্নীতির মাধ্যমে মেয়র মাঈন উদ্দিন কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এর মধ্যে স্থানীয় সাংসদের ব্যক্তিগত অর্থায়নে বাস্তবায়িত পৌর সভার ৫নং ওয়ার্ডের মাঝিকাড়া গ্রামের ইদন মিয়ার বাড়ি থেকে আলীয়াবাদ পশ্চিমপাড়া পর্যন্ত মাটির রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পটি পৌর কাউন্সিলরদের না জানিয়েই কথিত টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ৩০ লাখ ৯৫ হাজার ৭৫৯টাকা আত্মসাৎ করেন।
কাউন্সিলরদের অভিযোগে আরও বলা হয়, পৌরসভার নিজস্ব দুটি রোলার মেশিনের ভাড়া বাবদ ৩৬ লাখ টাকা পৌর তহবিলে জমা না দিয়ে মেয়র নিজেই সেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন। রাজস্ব তহবিল থেকেও বিভিন্ন ওয়ার্ডের ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকার ১৩টি প্রকল্পের বিপরীতে ৬২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগও করেন মেয়রের বিরুদ্ধে।
এদিকে পৌরসভার ৯টি কসাইখানা থেকে আদায়কৃত রাজস্বের ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং সম্পূর্ণ বে-আইনিভাবে ১৭ কর্মচারীকে মাস্টার রোলে নিয়োগ দেখিয়ে তাদের মাসিক বেতন ৯৮ হাজার টাকা পৌর মেয়র আত্মসাৎ করছেন।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক রেজওয়ানুর রহমান বলেন, মেয়রের বিরুদ্ধে কাউন্সিলররা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ তদন্ত করে আমরা দেখব ।
নবীনগর পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন বলেন, আমার বিরুদ্ধে দেওয়া কাউন্সিলরদের সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। কেন তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্য অভিযোগ দিয়েছেন সেটিও আমি বুঝতে পারছি না। কারন কাউন্সিলরদের সঙ্গে রেখেই আমি টেন্ডার কমিটি থেকে শুরু করে সবকিছু বাস্তবায়ন করি তাদের সাথে আমার সম্পর্ক ভাল, কোনো মনোমালিন্য নেই।
তিনি আরো বলেন, যেহেতু কাউন্সিলররা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন, সেহেতু অভিযোগ তদন্ত করে সত্যতা প্রমাণিত হলে আমার বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নেয়া হবে সেটি আমি মেনে নেব।