রোহিঙ্গা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ঢাকা আসছেন কফি আনান কমিশন
বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরেজমিনে দেখতে কফি আনান কমিশনের একটি প্রতিনিধি দল ও জাতিসংঘের বিশেষ র্যা পোর্টিয়ার ইয়াংহি লি বাংলাদেশ সফর করবেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, রাখাইন প্রদেশের রোহিঙ্গাসহ সব মানুষের কল্যাণের জন্য গত সেপ্টেম্বরে কফি আনানের নেতৃত্বে নয় সদস্যের কমিশন গঠিত হয়। মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে নতুন করে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা ও আগে থেকেই বাংলাদেশে অবস্থিত প্রায় সাড়ে তিন লাখ রোহিঙ্গাদের অবস্থা দেখার জন্য এই কমিশনের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা জানান, প্রতিনিধি দলে রয়েছেন দুই মিয়ানমার নাগরিক উইন ম্রা ও আই লুইন এবং লেবানিজ নাগরিক ঘাসান সালামে। এই প্রতিনিধি দল ২৮ জানুয়ারি দিবাগত রাতে ঢাকা আসবেন। তারা ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি কক্সবাজার পরিদর্শন করবেন এবং ৩১ তারিখ ঢাকায় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। কমিশনের ম্যান্ডেট অনুযায়ী তারা ২০১৭ সালের দ্বিতীয়ার্ধে তাদের রিপোর্ট প্রকাশ করবেন। রোহিঙ্গা বিষয়ে আন্তর্জাতিক যেকোনও প্রতিনিধি দলকে বাংলাদেশ স্বাগত জানাবে বলে জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা।
এদিকে, আজ বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হকের সঙ্গে মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি রবার্ট ওয়াটকিনস। ওই বৈঠকের পর ওয়াটকিনস সাংবাদিকদের জানান, জাতিসংঘের বিশেষ র্যা পোর্টিয়ার ইয়াংহি লি বাংলাদেশ সফর করবেন।
এর আগে চলতি মাসে লি ১২ দিন মিয়ানমার সফর করেছেন এবং সফর শেষে এক বিবৃতিতে তিনি রোহিঙ্গা বিষয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন।
লি কবে বাংলাদেশে আসবেন জানতে চাইলে ওয়াটকিনস বলেন, ‘তার এই সফরের তারিখ এখনও নির্ধারিত হয়নি। তবে খুব শিগগিরই, সম্ভবত ফেব্রুয়ারি মাসেই তিনি বাংলাদেশে আসবেন।’
ওয়াটকিনস সাংবাদিকদের জানান, চলতি জানুয়ারি মাসে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের একটি প্রতিনিধি দল ১২ দিন বাংলাদেশে সফর করেছে এবং তথ্য সংগ্রহ করেছে।
প্রসঙ্গত, গত ৯ অক্টোবরের পর মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী রাখাইন প্রদেশে মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা শুরু করে। এর ফলে শতাধিক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে ও হাজার হাজার রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু হয়েছে। দেশটিতে শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সুচির গণতান্ত্রিক সরকারের সামরিক সরকারের মতো আচরণের তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়েছে সারাবিশ্ব। জাতিসংঘ, ইসলামিক দেশগুলোর সংস্থা ও অনেক দেশ ধর্মের কারণে মুসলিম নিধন ও নিপীড়ন বন্ধের আহবান জানায়।
বাংলা ট্রিবিউন