১২ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ইং, সোমবার ২৮শে ভাদ্র, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ


সবার জন্য ঈদ উৎসব


Amaderbrahmanbaria.com : - ০৯.০৯.২০১৬

র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী : পবিত্র ঈদুল আজহা সমাগত। ঈদ উদ্যাপনে চলছে প্রস্তুতি। ঈদুল আজহা উৎসব মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবের একটি। ত্যাগ ও কোরবানির মহিমা নিয়ে প্রতিবছরই আমাদের মাঝে আসে ঈদুল আজহা। এ উৎসব ধনী-গরিব সবার জন্য। তবে এতিম, গরিবদের মাঝেও এ উৎসব ছড়িয়ে দেওয়ার দায়িত্ব সমাজের বিত্তশালী মানুষদের। কোরবানির সামর্থ যাদের নেই তাদের নিজেদের ঈদ উৎসবে শামিল করা সামর্থবানদের কর্তব্য। না হয়ে কোরবানির মূল তাৎপর্য ব্যাহত হয়।
মহান আল্লাহ তায়ালার আদেশে হযরত ইবরাহিম (আ.) এর নিজ পুত্র হযরত ইসমাইল (আ.) কে আল্লাহর জন্য কোরবানিকরার ইচ্ছা ও ত্যাগের কারণে সারা বিশ্বের মুসলমানেরা আল্লাহর কাছে নিজেদের কোরবানি সোপর্দ করে দেওয়ার লক্ষ্যে পবিত্র হজের পরদিন ঈদুল আজহা উদ্যাপন ও পশু কোরবানি করে থাকে। তবে আল্লাহর কাছে সোপর্দ মানে এ নয় কোরবানি করে শুধুমাত্র কোরবানিদাতারাই কোরবানির গোশত ভাগ করে নিয়ে যাবে। কোরবানিতে গরিবদের প্রাপ্যটুকু সঠিকভাবে বিলিয়ে দেওয়ার নামই আল্লাহর সন্তুষ্টুতিতে কোরবানি সোপর্দ করা।
মহান আল্লাহ তায়ালা সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন, ‘আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য কোরবানির এক বিশেষ রীতি-পদ্ধতি নির্ধারণ করে দিয়েছি, যেন (সে উম্মতের) লোকেরা সে পশুদের ওপর আল্লাহর নাম নিতে পারে যেসব আল্লাহ তাদেরকে দান করেছেন।’ (সূরা হজ : ৩৪)
কোরবানির তাৎপর্য সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর কোরবানির পশুসমূহকে আমরা তোমাদের জন্য আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত করেছি। এর মধ্যে তোমাদের জন্য কল্যাণ রয়েছে।’ (সূরা হজ: ৩৬)
হাদিসে বলা হয়েছে, কোরবানির দিনে মানবসন্তানের কোনো নেক আমলই আল্লাহ তায়ালার নিকট এত প্রিয় নয়, যত প্রিয় কোরবানি করা। কোরবানির পশুর শিং, পশম ও ক্ষুর কিয়ামতের দিন (মানুষের নেক আমলনামায়) এনে দেওয়া হবে। কোরবানির পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই তা আল্লাহর দরবারে পৌঁছে যায়। সুতরাং তোমরা আনন্দচিত্তে কোরবানি কর।’ (তিরমিজি)
কোরবানি হলো চিত্তশুদ্ধির এবং পবিত্রতার মাধ্যম। এটি সামাজিক রীতি হলেও আল্লাহর জন্যই এ রীতি প্রবর্তিত হয়েছে। তিনিই একমাত্র বিধাতা প্রতি মুহূর্তেই যার করুণা লাভের জন্য মানুষ প্রত্যাশী। আমাদের বিত্ত, সংসার এবং সমাজ তার উদ্দেশেই নিবেদিত এবং কোরবানি হচ্ছে সেই নিবেদনের একটি প্রতীক। কোরবানির মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর জন্য তার সবচেয়ে প্রিয় জিনিস ত্যাগ করতে রাজি আছে কিনা সেটিই পরীক্ষার বিষয়। কোরবানি আমাদেরকে সেই পরীক্ষার কথাই বারবার স্মরণ করিয়ে দেয়। ইবরাহিম আ. এর কাছে আল্লাহর পরীক্ষাও ছিল তাই। আমাদেরকে এখন আর পুত্র কোরবানি দেওয়ার মতো কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয় না। একটি ‘মুসান্নাহ’ হালাল পশু কোরবানি করেই আমরা সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারি। তবে শুধু পশু কোরবানিই কিন্তু লক্ষ্য নয়। এই ত্যাগের মাধম্যে অসহায়-গরিবদের পাশে দাঁড়ানোও উচিত। সঙ্গে সঙ্গে মনের ভেতরের পশুটাকেও দমন করা চাই। মনে যত সব কালিমা হিংসা বিদ্বেষ, নিষ্ঠুরতা ও কপটাতামুক্ত হওয়াও কোরবানির আবেদন। সেই সঙ্গে মনে মায়া মমতা ও নিষ্ঠা স্থাপন খুবই জরুরি। ু
ঈমানের এসব কঠিন পরীক্ষায় যারা যতবেশি নম্বর অর্জন করতে পারেন তারাই হন ততবড় খোদাপ্রেমিক ও ততই সফল মানুষ এবং আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে ততই সফল। ঈদের প্রকৃত আধ্যাত্মিক আনন্দ তারা ঠিক ততটাই উপভোগ করতে পারেন যতটা তারা এ জাতীয় পরীক্ষায় সফল হন।
লেখক: সংসদ সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা, সভাপতি, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি





Loading...


প্রকাশকঃ মোঃ আশ্রাফুর রহমান রাসেল
সম্পাদক : বিশ্বজিত পাল বাবু
চেয়ারম্যান : আলহাজ্ব নুরুজ্জামান
ঠিকানা : ৬০৩ ফুলবাড়িয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
email : [email protected] (news)
Phone: +880851 62307
+8801963094563


close