কৃষক খান্না মিয়ার ৬ মেয়ে। কোনো ছেলে সন্তান নেই। তাইতো নিজের সন্তানের মতোই চার বছর ধরে লালন-পালন করছেন এ ষাঁড়টি। মেয়েরা ভালোবেসে যার নাম দিয়েছেন লক্ষ্মীসোনা।
লক্ষ্মীসোনার ওজন প্রায় ১ হাজার ৪০০ কেজি। খান্না মিয়া তার দাম হাঁকছেন ২০ লাখ টাকা। অস্ট্রেলিয়ান জাতের কালো রংয়ের বিশালাকৃতির গরুটি একনজর দেখতে প্রতিদিন খান্না মিয়ার বাড়ি ভিড় করছে শত শত মানুষ।
খান্না মিয়ার বাড়ি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম ইউনিয়নের দেলুয়া গ্রামে। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে, পরম যত্নে গরুটি লালন-পালন করেছেন তিনি। ৯ ফুট লম্বা ও সাড়ে ৫ ফুট উচ্চতার ষাঁড়টি খুবই শান্ত স্বভাবের। খান্না মিয়ার দাবি, লক্ষ্মীসোনাই জেলার সবচেয়ে বড় গরু।
খান্না মিয়ার স্ত্রী পরিষ্কার বেগম জানান, তার ছয় মেয়ে ভাইকে (লক্ষ্মীসোনা) না খাইয়ে কিছু মুখে দেয় না। শান্ত স্বভাবের গরুটি রেগে গেলে শরীরে ঠাণ্ডা পানি ছিটিয়ে দিলেই লক্ষ্মীর মতো ঠাণ্ডা হয়ে যায়। তার প্রতিদিনের খাদ্যের তালিকাও লম্বা। তিনটি বৈদ্যুতিক পাখা দিয়ে তাকে সার্বক্ষণিক বাতাস করা হয়।
মেয়ে ইতি আক্তার জানায়, বোনেরা মিলে প্রতিদিন টিউবওয়েল চেপে পানি তুলে ১০ প্যাকেট শ্যাম্পু দিয়ে লক্ষ্মীকে গোসল করাই। একটা আইসক্রিম বা বিস্কুট খেলে লক্ষ্মীকে দিয়ে খাই। গরু হলেও সে আমাদের আদর ভালোবাসা বোঝে।
গরুর যত্ন নিতে এবং চুরি ঠেকাতে কয়েক মাস ধরে গোয়ালেই রাত কাটাচ্ছেন খান্না মিয়া। তিনি জানান, তার বাড়িতে পাঁচটি গরু রয়েছে। কুরবানির সময় বিক্রি করতে লক্ষ্মীসোনাকে বিশেষ যত্নে লালন-পালন করা হয়। এটি মোটাতাজা করা হয়েছে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে। গত বছর বেপারীরা গরুটি সাত লাখ টাকা দাম করেছিল।
চার বছরে এর পেছনে প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। উপযুক্ত দাম পেলে বাড়ি থেকেই লক্ষ্মীকে বিক্রি করতো চান তিনি। না হলে ঢাকার যে কোনো একটি পশুর হাটে তোলা হবে লক্ষ্মীসোনাকে।
তিনি আরো জানান, প্রতিদিন বেপারীরা এসে গরুটির দর দাম করছে। তবে পরিবারের ইচ্ছা সরাসরি কোনো ব্যক্তির কাছে বিক্রি করার।
সাটুরিয়া উপজেলা পশু চিকিৎসক শাহজাহান আলী জানান, খান্না মিয়া তাদের পরামর্শ নিয়েই স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে গরুটি মোটাতাজা করেছেন। তার দেখা উপজেলার এটি সবচয়ে বড় গরু।