‘ভারতীয় বা পাকিস্তানি নয়, সন্তানকে ভালো মানুষ বানাতে চাই’
স্পোর্টস ডেস্ক: ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে সেরা টেনিস তারকা সানিয়া মির্জা। ২০০৩ সালে ক্যারিয়ার শুরুর পর দেশটির টেনিসকে নিয়ে গেছেন অনন্য পর্যায়ে। ২০১৩ সাল পর্যন্ত ওয়ার্ল্ড টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের (ডব্লিউটিএ) র্যাংকিংয়ে দেশটির হয়ে সেরা সিঙ্গেলস ও ডাবলসের সবার উপরেই ছিলেন। ২০১৫ সালে সুইস তারকা মার্টিনা হিঙ্গিসকে নিয়ে ডাবলসের র্যাংকিংয়ে সেরা হয়েছিলেন সানিয়া।
২০১০ সালে পাকিস্তানের ক্রিকেটার শোয়েব মালিকের সঙ্গে বিয়ে হয়। বেশ কয়েকদিন ধরেই টেনিস কোর্ট থেকে দূরে সানিয়া। কারণ অন্তঃসত্ত্বা তিনি।
তবে সন্তানসম্ভবা এই তারকা জানিয়ে দিয়েছেন, টেনিস থেকে আপাতত দূরে থাকলেও শিগগিরই কোর্টে ফিরছেন ৩১ বছর বয়সী এই খেলোয়াড়।
সম্প্রতি গালফ নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন এই টেনিস কুইন। সেখানে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এখনই শেষ নয়। যেহেতু টেনিসের কারণে বিশ্বজুড়ে খ্যাতি মিলেছে। তাই এর মাধ্যমেই ভক্তদের কাছে চিরকাল থাকতে চান।
সন্তান ভূমিষ্ঠ করার পর দ্রুতই কোর্টে ফিরতে চান। তাই পছন্দের খাবার থেকে নিজেকে রেখেছেন দূরে। তিনি বলেন, ছোট থেকে খেলায় ছিলাম। তাই অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় অন্যদের তুলনায় শারীরিকভাবে বেশ সুস্থই আছি। নারী হিসেবে আমার কাছে এটা স্বপ্নের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থা চলছে। এটা জীবনের নতুন অধ্যায় হিসেবে শুরু হচ্ছে। চকোলেট, মসলাদার খাবার বন্ধ করে দিয়েছি। ভেলপুরি থেকে মাংস পর্যন্ত সব কিছু থেকে নিজেকে দূরে রাখছি। আর এই অভ্যাসটাও মা হওয়ার পর কোর্টে ফিরে বদলাবো না আর। ওজনটা কম রাখতেই হবে।
ছোট থেকে নিজেকে পেশাদার টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে তুলেছেন। হয়েছেন তারকা। ডাবলস-মিক্সড ডাবলসে ছয়টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছেন। টেনিসের সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন উইম্বলডন চ্যাম্পিয়নও হয়েছেন। ভারতের অন্য দশজন নারীর থেকে সানিয়ার জীবন-যাপন ভিন্ন হলেও মা হবার স্বপ্ন যে সব সময় ছিল তা স্পষ্ট করেছেন তিনি।
সানিয়া বলেন, অন্যদের মতো রান্না করতে জানি না। কিন্তু আমারও সংসার করার, মা হবার ইচ্ছে আর পাঁচটা সাধারণ মেয়ের মতোই ছিল। আজ সেটা বাস্তব। এটাই আমার জয়। আমার স্বামী (শোয়েব মালিক) এ ব্যাপারে আমাকে সমস্ত রকম সাহায্য করেছে। তিনি নিজেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। আর তাই ব্যাপারটা আরও ভাল বোঝে। এ জন্য আমি গর্বিত।
শোয়েবের সঙ্গে বিয়েকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়। আবার অনেকেই ভারত-পাকিস্তানের দুই তারকার বিয়েকে ইতিবাচক হিসেবেও নেন। সেসময় সাধুবাদ জানিয়ে নতুন দ্বার উন্মোচন হচ্ছে বলেও জানায় অনেকেই। তবে এবার প্রশ্ন উঠেছে সন্তান কোন দেশের নাগরিক হবেন।
তার মতে, সন্তান ছেলে হোক বা মেয়ে, তার নাগরিকত্ব নিয়ে আমার কোনও পছন্দের ব্যাপার নেই। বাবার পাকিস্তানি নাগরিকত্ব কিংবা মায়ের ভারতীয় নাগরিকত্ব যেটাই হবে তাতেই আমি খুশি। আমার সন্তান ভালো ও বড় মানুষ হয়ে উঠুক সেটাই প্রত্যাশা।