শুক্রবার, ২৭শে জুলাই, ২০১৮ ইং ১২ই শ্রাবণ, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগই তো এখন আ. লীগের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী, বড় শত্রু

আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী: ঢাকার এক সাংবাদিক বন্ধুর সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ হচ্ছিল। তিনি বললেন, ‘আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি আসুক আর না আসুক, একটা জম্পেশ লড়াই হবে।’ বলেছি, বিএনপি যদি নির্বাচনে না আসে, তাহলে লড়াইটা হবে কাদের মধ্যে? তিনি বললেন, কেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে আওয়ামী লীগের! আওয়ামী লীগই তো এখন আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী, বড় শত্রু। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে কতজন বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড়ায় দেখবেন। আওয়ামী লীগ হাইকমান্ড তাঁদের কড়া ধমক দিয়েও সামলাতে পারছেন না। এখনই তাঁরা পার্টিবিরোধী যে তৎপরতা শুরু করেছে, তাতে ক্ষতি হচ্ছে আওয়ামী লীগের। দলটির ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। টেলিফোনে সব কিছু বলা হয় না। অধিক জানতে চাইলে ঢাকার পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত এ সম্পর্কিত খবরগুলো দেখুন।

ইন্টারনেটে ওই দিন প্রকাশিত একটি খবর পড়লাম। খবরের শিরোনাম : ‘সবাই এমপি হতে চান। অপপ্রচারে নামায় তিন হাজারের বেশি মনোনয়নপ্রত্যাশীর উপর ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড।’ খবরটি কমবেশি আমার জানা ছিল। তবু তাতে একবার চোখ বোলালাম। এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সবাই এমপি হতে চান। কেউ আর কর্মী থাকতে চান না। আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সবাই ছুটছেন। কোনো রাজনৈতিক অতীত নেই, এলাকায় জনসম্পৃক্ততা নেই, নেই কোনো জনপ্রিয়তা—এমন ব্যক্তিরাও এমপি হতে চান। বাবা সেই কোন আমলে এমপি ছিলেন, তার নাম ভাঙিয়ে সন্তানেরা এমপি হতে চান। মাঠের রাজনীতিতে তার ভূমিকা থাক বা না থাক তাতে কিছু আসে যায় না।’

খবরটিতে এই মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সংখ্যা ও তৎপরতার কথাও বলা হয়েছে, ‘আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা তিন হাজারের বেশি। দলের কেন্দ্র ও তৃণমূলের নেতাদের দুয়ারে তাঁরা যত না ছুটছেন, তার চেয়ে বেশি ছুটছেন গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে। জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে হামেশাই প্রার্থী হিসেবে তাঁদের নাম লেখাচ্ছেন, ছবি ছাপাচ্ছেন। তাঁদের অনেকে এমপি হওয়ার জন্য অসুস্থ প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে গিয়ে দলের বিরুদ্ধে দুর্নাম ছড়াচ্ছেন, নিজ দলের নেতাদের ও বর্তমান এমপিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। অসুস্থ প্রতিযোগিতায় নামা এমন তিন হাজারের বেশি মনোনয়নপ্রত্যাশীর অনেকের ওপর চরমভাবে ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড।’

এই খবরটি আওয়ামী লীগের ভেতরের অবস্থার একটি সাধারণ চিত্র। এতে কোনো অতিরঞ্জন নেই। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এই চিত্র সম্পর্কে অবহিত। সম্প্রতি দলের একাধিক বৈঠকে তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচনে মনোনয়ন চাওয়ার অধিকার সবারই আছে। তবে তা পাওয়ার জন্য দলকে দুর্নামে ফেলা হলে এটা কোনো মতেই মেনে নেওয়া যাবে না। কেউ নমিনেশন পাবেন কি পাবেন না, সেটা নির্ভর করছে এলাকায় কে কতটুকু জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন তার ওপর। তাঁরা দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কতটা মূল্যায়ন করছেন তাও আমি বিবেচনা করব।’

শুধু দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা নন, এ ব্যাপারে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও জোর মনিটরিং চালাচ্ছেন। ঢাকার শুধু একটি দৈনিকে নয়, অন্যান্য দৈনিকের খবরেও দেখা যাচ্ছে, জাতীয় সংসদের আসন্ন নির্বাচনে বেশির ভাগ আসনে আওয়ামী লীগের অনেক মনোনয়নপ্রত্যাশী দলের এমপি-নেতাদের বিরুদ্ধে সত্য-মিথ্যা প্রচার চালিয়ে নিজেদেরই মনোনয়ন পাওয়ার যোগ্য ও সৎ প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করাতে চাইছেন। আওয়ামী লীগ হাইকমান্ড তাতে বিরক্ত। স্বয়ং শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের সতর্ক করে দিয়েছেন।

কিন্তু এই সতর্কীকরণে কি কাজ হবে? অতীতের অভিজ্ঞতা বলে, এই সতর্কীকরণে কোনো কাজ হয় না। দরকার হয় দলের ভেতর লার্জ পার্কিংয়ের। নির্বাচনের আর মাত্র চার-পাঁচ মাস বাকি। এত অল্প সময়ে কি দলকে ঝাড়াই-বাছাই করা যাবে? যদি না যায়, তাহলে দল অত্যন্ত কঠিন অবস্থার মধ্যে পড়বে। অতীতে দেখা গেছে, হাইকমান্ড কঠোরভাবে সতর্ক করে দিলেও সব পর্যায়ের নির্বাচনেই দলের মূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে মনোনয়নবঞ্চিত এক বা একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগই জয়ী হতে পারেননি। কিন্তু আওয়ামী লীগের ভোটবাক্সে ভাগ বসিয়েছেন এবং বিএনপি-জামায়াত প্রার্থীর জয়লাভের পথ সহজ করে দিয়েছেন।

এককালে দেশের রাজনীতি প্রকৃত রাজনীতিকদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতো। তাঁদের দলের প্রতি আনুগত্য ছিল প্রশ্নাতীত। এখন রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে নব্যধনী ও বড় ব্যবসায়ীদের হাতে। দলের প্রতি, আদর্শের প্রতি তাঁদের আনুগত্য কম। আনুগত্য অর্থের প্রতি। জনসেবার জন্য তাঁরা রাজনীতি করেন না। করেন সংসদের সদস্য হয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যে আরো প্রসার ঘটানোর জন্য। তাঁদের বেশির ভাগের কাছ থেকে রাজনৈতিক নৈতিকতার আশা করা বৃথা। তাঁদের টাকার জোর আছে। তাঁরা মনে করেন, টাকার জোরে মনোনয়ন কেনা যায়, ভোট কেনা যায়। দল বা আদর্শের প্রতি আনুগত্যের দরকার কী?

এবারের নির্বাচনের আগেও তাই দেখা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুটি দলেই মনোনয়নের জন্য যাঁরা ভিড় করেছেন, তাঁদের বেশির ভাগই হলো নব্যধনী, বড় ব্যবসায়ী, অবসরভোগী বড় আমলা, অথবা বারবার দল বদল করা বিতর্কিত চরিত্রের রাজনীতিক। তাঁদের সম্পর্কে বিএনপি সতর্ক হবে না। কারণ এ দলে নীতি ও আদর্শের কোনো বালাই নেই। এই দলে জন্ম থেকেই সুবিধাবাদী ও সুযোগসন্ধানীদের ভিড়। এই দলে সন্ত্রাসী ও দেশপ্রেমবর্জিত নেতাকর্মীর সংখ্যাই বেশি।

কিন্তু আওয়ামী লীগ এ ধরনের দল নয়। এই দলের জন্ম আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এবং সব ভুলত্রুটি সত্ত্বেও গণতন্ত্রের পতাকা আঁকড়ে আছে। এই দলের শক্তিশালী নেতৃত্ব আছে, পেছনে জনসমর্থনও আছে। এই দলে যদি দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসের গডফাদারদের আবির্ভাব ঘটে, অসাধু নব্যধনী শ্রেণির নিয়ন্ত্রণে দলটি যদি চলে যায়, তাহলে শুধু দলটির জন্য নয়, গোটা দেশের জন্য এক ঘোর অভিশাপ। আরো খবর প্রকাশিত হয়েছে, দেশের জামায়াত-শিবিরের অসংখ্য নেতাকর্মী ভোল পাল্টে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করেছে। এখন যদি মনোনয়ন বাণিজ্যের সাহায্যে সংসদে জনপ্রতিনিধি সেজে তাঁরা ঢোকার সুযোগ পায়, তাহলে জনগণের ভাগ্যে নেমে আসবে চরম দুর্ভোগ।

আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন ও জনহিতকর কাজ সত্ত্বেও দলটির যে এত দুর্নাম, তার বড় কারণ এই অনুপ্রবেশকারী নব্য আওয়ামী লীগাররা। তাঁদের দাপটে আওয়ামী লীগের দীর্ঘকালের ত্যাগী কর্মী ও নেতারা আজ দলে উপেক্ষিত ও কোণঠাসা। দৈনিক ‘কালের কণ্ঠ’ পত্রিকায় ১৭ জুলাই তারিখের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘বিএনপি আমলে ডেমরায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভামঞ্চে যারা আগুন দিয়েছিল, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম-অত্যাচার চালিয়ে, মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠিয়েছিল, তারাই এখন ডেমরায় সর্বময় নিয়ন্ত্রক। এখানকার ব্যবসা-বাণিজ্য, টেন্ডার, বালুমহাল, চাঁদাবাজি একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ করছে তারা। এলাকার স্কুল-কলেজের পরিচালনা পর্ষদ, সামাজিক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে ঠাঁই পেয়েছে তারাই। এদের ডেমরা এলাকায় ক্ষমতার সর্বস্তরে প্রতিষ্ঠিত করেছে স্থানীয় এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লার পরিবার। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীরা ক্ষোভে-দুঃখে-হতাশায় রাজনীতি ছেড়ে ঘরে বসে আছে।’

দেশের সর্বত্রই প্রায় এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। আমি নিজেও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে যে খবর পাই, তাতে জেনেছি, ইউনিয়ন পরিষদ, জেলা পরিষদের নির্বাচনে বহু এলাকায় বিএনপি যে জিতেছে, তার বড় কারণ ওই প্রার্থীর পক্ষে আওয়ামী লীগের কোনো স্থানীয় এমপি বা এমপি পরিবারের লোকজনের সমর্থন, দলীয় প্রার্থীকে তাঁরা সমর্থন দেননি। এই এমপিদের কার্যকলাপ আওয়ামী লীগের সৎ ও জনপ্রিয় সংখ্যাগরিষ্ঠ এমপিদের সুনামেও কালিমা লেপন করছে। কথায় বলে ‘মল খায় পাঙাশ মাছ, সব মাছের ঘাড়ে দোষ পড়ে।’

এই অবস্থায়ই সুযোগ গ্রহণ করছে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী এক শ্রেণির নব্য আওয়ামী লীগার। তাঁদের প্রতিপক্ষ যদি হন আওয়ামী লীগের একজন সৎ ও সিটিং এমপি, তাঁর সম্পর্কেও অসত্য, অর্ধসত্য প্রচার চালিয়ে মূলত আওয়ামী লীগেরই ভাবমূর্তি তাঁরা জনগণের কাছে নষ্ট করছেন। তাঁদের প্রতি আওয়ামী লীগ হাইকমান্ড হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ভালো করেছেন। কিন্তু সেই সঙ্গে যেসব এমপির কার্যকলাপে তাঁর এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ, তাঁদের বিরুদ্ধেও দলের হাইকমান্ডকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তাঁরা যাতে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন না পান, সেদিকে কঠোর দৃষ্টি রাখতে হবে।

শেখ হাসিনা অবশ্য এবার জাতীয় সংসদের নির্বাচনে দলের প্রার্থী মনোনয়নে সতর্ক ও কঠোর হয়েছেন। দলের ‘কালো বিড়ালদের’ বাছাই করার ব্যাপারে বিভিন্ন সরকারি সংস্থার সাহায্য গ্রহণ ছাড়াও ডা. দীপু মনির নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেছেন। ভারতে নেহরু প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে এ ধরনের একটি কমিটি গঠন করেছিলেন। নাম ছিল কামরাজ কমিটি। এই কমিটি কংগ্রেসের অনেক মন্ত্রী, এমপি ও নেতা সম্পর্কে কঠোর তদন্ত চালিয়েছিল। তাতে কংগ্রেসের অনেক প্রার্থী ও জাঁদরেল নেতাকেও দল থেকে বাদ পড়তে হয়েছিল।

বাংলাদেশে এবারের নির্বাচনের আগেও দীপু মনি কমিটিকে এ ধরনের কঠোর তদন্ত চালাতে হবে এবং দলের যাঁরা সুনাম নষ্ট করছেন সেই নেতা-মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধেও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং তা অবিলম্বে। নির্বাচনের আগে কমিটির হাতে সময় খুবই কম। নির্বাচনী রাজনীতিকে কিভাবে মনোনয়ন বাণিজ্য থেকে মুক্ত করা যায়, দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে সেদিকে নজর দিতে হবে। এই মনোনয়ন বাণিজ্য থেকে রাজনীতিকে মুক্ত করা গেলে বিভিন্ন দলে, বিশেষ করে বড় দুটি দলে ‘কাউয়াদের’ প্রভাব ও প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা পাবে না। আরেকটি কথা, দুটি বড় দলেই আছে নেতৃত্বের কোটারি এবং তাদের নিজস্ব গ্রুপ। এই গ্রুপগুলোর বা সিন্ডিকেটগুলোর চরিত্র অনেকটা মাফিয়া ধরনের। এলাকার ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের ওপর উত্পীড়ন এবং টোলবাজি ও চাঁদাবাজির কাজে এদের ভূমিকা সর্বজনবিদিত।

এই ওপেন সিক্রেটের ব্যাপারে কথা বলার কেউ নেই। মিডিয়ায় যে খবর প্রকাশিত হয় তা অরণ্যে রোদন। শেখ হাসিনা একা কী করবেন। তাঁর দলের হাইকমান্ডকে এ ব্যাপারে শক্ত অবস্থান নিতে হবে। তবে সরিষার মধ্যেই যদি ভূত ঢোকে, তার প্রতিকার কে করবে? মনোনয়ন বাণিজ্য না থাকলে যেকোনো দলের পক্ষে সঠিক ও যোগ্য প্রার্থী মনোনয়ন সহজ হয় এবং নির্বাচনে টাকার খেলাও বন্ধ করা যায়। শেখ হাসিনার উচিত হবে শুধু দলের কোনো সিন্ডিকেটের পছন্দ দ্বারা নয়, এলাকার জনগণের পছন্দের প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া। প্রার্থীদের অতীতের রাজনীতি ও বর্তমানের ভূমিকাও যাচাই-বাছাই করা আবশ্যক।

নির্বাচনে টাকার খেলা কিভাবে বন্ধ করা যায়, তা ভালোভাবে বিচার-বিবেচনা করা জরুরি। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তির নির্বাচন খরচ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ এবং এই নিয়ন্ত্রণ অমান্য করলে তিনি কড়া হলেও তা বাতিল করার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের হাতে আরো বেশি থাকা দরকার। শেখ হাসিনার নির্বাচনকালীন সরকারের সদস্যদের কাজ হবে নির্বাচনে কোনো প্রকার প্রভাব বিস্তারের, প্রশাসনকে ব্যবহারের চেষ্টা না করা। তাতে আর যা-ই হোক, নির্বাচনে কারচুপি সম্পর্কে বিএনপির গলাবাজি করার সুযোগ থাকবে না।

বিএনপি নির্বাচনে আসবে না—এমন একটি গুজব বাজারে আছে। আমার ধারণা, তারা আসবে। নইলে দলের নির্বাচনমুখী নেতা ও কর্মীদের তারা সামাল দিতে পারবে না। ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার নেতৃত্বে একদল বিএনপি নেতা ও কর্মী আওয়ামী লীগের সঙ্গে সহযোগিতা করতে চাইছেন, বিএনপি নির্বাচনে না এলে দলের ভেতরে আরো বিদ্রোহী উপদল তৈরি হবে। তথাপি বিএনপির হাইকমান্ড যদি সিদ্ধান্ত নেয়, তারা নির্বাচনে অংশ নেবে না, তাতে আওয়ামী লীগ প্রতিদ্বন্দ্বিতামুক্ত হবে না। তীব্র নির্বাচনী লড়াই হবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আওয়ামী লীগেরই; যদি আওয়ামী লীগ কঠোর ব্যবস্থা দ্বারা এই মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থীদের সংখ্যা ও শক্তি কমাতে না পারে। প্রশ্ন হলো, ‘বিড়ালের’ গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে? সূত্রঃ কালের কন্ঠ