বাসায় রোজ একটি করে তেজপাতা পুড়িয়েই দেখুন!
কখনো কি শুনেছেন? বাসায় তেজপাতা পোড়াতে বলছে কেউ! আবার তাতে শারীরিক উপকারও পাওয়া যায়! হয়তো না বলবেন। আসলে তেজপাতাকে এভাবেও কাজে লাগনো যায়। কিন্তু তেজপাতা পোড়ালে ঠিক কী হয়?
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, তেজ পাতায় থাকা একাধিক উপকারী উপাদান, পাতাটি পোড়ানোর সময়ে বাতাসে মিশতে শুরু করে। তারপর শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে সেই বাতাস যখন আমাদের শরীরে প্রবেশ করে, তখন দেহে একাধিক পরিবর্তন হতে শুরু করে। ফলে বেশ কিছু রোগ ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে আরও নানা উপকার পাওয়া যায়।
ক্লান্তি দূর হয় : অফিসে একের পর এক কাজ করতে করতে কী হাঁপিয়ে পরেছেন? তাহলে বাড়িতে এসে ১-২টি তেজপাতা পোরাতে ভুলবেন না যেন! কারণ এমনটা করলে দেখবেন নিমেষে ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে। এই প্রকৃতিক উপাদানটিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় পিনাইন, সিনেওল এবং এলিমেসিনের মতো উপাদান, যা ধোঁয়ার মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে নার্ভের ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে। সেই সঙ্গে এনার্জির ঘাটতিও দূর হয়। ফলে শরীর চাঙ্গা হয়ে উঠতে সময় লাগে না।
তেলাপোকা এবং পোকা-মাকড়ের উপদ্রব কমায় : তেজপাতা পোড়ানোর সময় যে ধোঁয়া বেরোয়, তার চোটে তেলাপোকাসহ একাধিক পোকামাকড় বাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। ফলে এই সব প্রাণীর শরীরে থেকে ক্ষতিকর জীবাণু ছড়িয়ে পরে নানাবিধ রোগের প্রকোপ বৃদ্ধির আশঙ্কা হ্রাস পায়।
ব্রেন পাওয়ার বাড়ে : তেজপাতার পোড়ানোর সময় তা থেকে বেরনো ধোঁয়া যদি কম করে ১০ মিনিট ইনহেল করা যায়, তাহলে ব্রেন সেলের কর্মক্ষমতা এতটা মাত্রায় বৃদ্ধি পায় যে মনোযোগ বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে কগনিটিভ অ্যাকটিভিটিও বাড়তে থাকে। তেজপাতার পিনেইন, সিনেওল এবং এলিমিসিন নামক একাধিক কেমিকেল শরীর এবং মস্তিষ্কের ক্লান্তি দূর করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই সার্বিকভাবে শরীরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
অ্যাংজাইটি এবং মানসিক অবসাদের প্রকোপ কমে : তেজপাতা পোড়ানোর সময় সেই ধোঁয়া শরীরে প্রবেশ করলে মস্তষ্কে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে অ্যাংজাইটি, টেনশন এবং মানসিক চাপ কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ক্লান্তিও দূর হয়। আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব নার্স অ্যানেস্থেসিস্ট-এর প্রতিনিধিদের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, তেজপাতার গন্ধ নাকে গেলে ব্রেন অ্যাকটিভিটিও বাড়তে শুরু করে।
শরীরের ভেতরের প্রদাহ কমায় : তেজপাতায় থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটারি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার দেহের ভেতরে থাকা প্রদাহ কমাতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই জয়েন্ট পেইন কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে যে কোনও ধরনের যন্ত্রণাও কমে যায়। তেজপাতার ইগুয়েনাল নামে একটি উপাদান থাকে, যা এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
রেসপিরেটরি সিস্টেমের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায় : বুকে জমে থাকা কফ দূর করতে তেজপাতার কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে। সেই সঙ্গে বায়ু দূষণের কারণে যাতে ফসুফসের কোনও ক্ষতি না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে এই প্রকৃতিক উপাদনটি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ফুসফুসের স্বাস্থ্য়ের উন্নতি ঘটে। এক্ষেত্রে তেজপাতা না পুড়িয়ে পরিস্কার গরম পানিতে কয়েকটি তেজপাতা ফেলে ভাপ নিন। দেখবেন নিমেষে সর্দি-কাশি তো কমবেই। সেই সঙ্গে ফুসফুসও তরতাজা হয়ে উঠবে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে : তেজপাতায় থাকা ইগুয়েনাল নাম উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর শরীরের কর্মক্ষমতা যেমন বাড়িয়ে তোলে, তেমনি রোগ প্রতিরোধ ব্য়বস্থাকে এতটা শক্তিশালী করে তোলে যে ছাট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। আসন্ন শীতকালে সুস্থ থাকতে আজ থেকেই প্রতিদিন তেজপাতা পোড়াতে শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে।
ইন্টারনেট থেকে