ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাওরে পানি আছে মাছ নাই
তৌহিদুর রহমান নিটল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলার হাওর বেষ্টিত নবীনগর, নাসিরনগর ও বাঞ্ছারামপুরসহ অঞ্চলে এই ভরা বর্ষা মৌসুমে হাওরে পানিতে ধই-ধই করলেও বাস্তবে হাওরে মাছ নেই বললেই চলে। যেখানে বিগত কয়েকবছর আগে পাচঁ/সাত জন জেলে নৌকাপ্রতি তিন/চার হাজার টাকা মাছ পেত সেখানে এখন বাস্তবে হাওর অঞ্চলের জেলেরা সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত টানাজাল, বেড়জাল পানিতে ফেলে দেড়/দু’হাজার মাছও পায়না। নদী আর হাওরে ভরা বর্ষার মৌসুমে পানি আছে ঠিকই কিন্তু জেলেরা মাছে পাচ্ছেনা আর যতটুকুই পাচ্ছে তা না পাওয়ার মত।
” দাদা হাওরে পানি আছে মাছ নেই আর ওহন আগের মত জাতের মাছও পাইনা কেচকি, টিতপুটি আর বাল্লারা ছোট পোনা ছাড়া আর কিছু নাই পানিতে নেই এডাও কোন দিনপাই আবার খালি ডুলা লইয়া বাড়িতে ফিরৎত আই”” এভাবে আবেগে নিয়ে কথা গুলো বলছিলেন সরাইল এলাকার কয়েকজন জেলে যারা নাসিরনগর আকাশি বিলে রাত জেগে মাছ ধরেন। তারা বলেন সারা রাত জেগে এখন জনপ্রতি দুইশত টাকার মাছও পাওয়া যায়না। আগের কত ভাল জাতের মাছ পাইতাম এখন কোন ভাল জাতের মাছ এখন বর্ষার পানিতে নেই বল্লেই চলে।
নবীনগরের নদী আর হাওরে মাছ ধরেন কথা হয় এমন কয়েকজনের জেলের সাথে গোর্কণঘাট বাজারে তারা বলেন, “সারাদিন হাওরে-বিলে মাছ মাইরা পেডের কালা দূর হয়না ” আগে বিলে বর্ষার পানিতে রুই, কাতলা, বোয়াল, কালিভাউসসহ অনেক রংঙের মাছ পাওয়া যেত বর্তমানে ইছারপুনা, ছোটপুটি আর চান্দার গুড়া ছাড়া কিছুই পাইনা। দিনে দিনে ভাসমান পানি থেকে মাছ অনেকটাই বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আমরা বাপ-দাদার এই জেলে পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছি। এখন আর বাচঁবার কোন উপায় নেই।
শহর সহ আশেপাশের বেশ কয়েকটি বাজারে ঘুরে দেখা যায়, এই ভরা বর্ষা মৌসুমে পুকুরের চাষ করা পাঙ্গাশ,কই,সিং ও তিলাপিয়া ছাড়া চোখেঁ পড়ার মত কোন ভাল জাতের মাছ নেই। এগুলো এখন বাজারের প্রধান মাছ। আর দু-একটা জাতের মাছ থাকলে তা সাধারণ ও নিম্ন আয়ের ক্রেতাদের একেবারেই নাগালের বাইরে।
বাজারে কয়েকজন মাছ বিক্রেতা বলেন, মাছ পানিতে থাকব কিভাবে। নদীতে, বিলে, হাওরে পানিতে কোন মাছ ছাড়া হয়না। আর কারেন্ট জালের কারণে ছোট থাকলে মাছ গুলো মারা পরার কারণে দিনে দিনে দেশিয় জাতের মাছ বিলুপ্ত হতে চলেছে।আমরা মাছ ভাল মাছ কিনতে পাই তাহলে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতে পারতাম।