g কিছু শরণার্থী ফেরানোর প্রক্রিয়া যেকোনো সময় : সু চি | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

শনিবার, ৩০শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ইং ১৫ই আশ্বিন, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

কিছু শরণার্থী ফেরানোর প্রক্রিয়া যেকোনো সময় : সু চি

AmaderBrahmanbaria.COM
সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৭

---

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া কিছু রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য যাচাই প্রক্রিয়া শুরু করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি।

জাপানের নিকেই এশিয়ান রিভিউকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘‘যেকোনো সময়’ এই প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। তিনি আরও বলেন, প্রতিবেশী বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের পালিয়ে যাওয়ার কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।’’

রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার এক দিন পরেই নিকেই এশিয়ানকে এই সাক্ষাৎকার দেন সু চি। রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় বিশ্বব্যাপী কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চি। এমনকি তার নোবেল পুরস্কার কেড়ে নেওয়ারও দাবি তোলেন অনেকে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে দীর্ঘ সময় নীরব থাকার পর টেলিভিশনে যে ভাষণ দেন সু চি, তাতেও তিনি মিথ্যাচার করেন বলে অভিযোগ রয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে।

জাতিসংঘসহ বিশ্বনেতারা সু চির বিরুদ্ধে জাতিগত নির্মূলীকরণে সমর্থন দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। সমালোচকেরা বলছেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযান বন্ধে সু চি ইচ্ছুক নন। এ প্রসঙ্গে সাক্ষাৎকারটিতে সু চি বলেন, ‘আসলে কোনো কিছুই বিস্ময়কর নয়। কারণ, মতামত বদলে যায়, আর অন্য যেকোনো মতামতের মতো বৈশ্বিক মতামতও বদলায়। যেসব দেশ পরিবর্তনের প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে গেছে তারা অন্যদের তুলনায় বিষয়টি ভালো বুঝবে।’

সু চি আরো বলেন, ‘আমরা দ্রুতই শুরু (রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া) করতে পারি। তার মানে এই না যে, এটা দ্রুতই সম্পন্ন হবে…আমরা যেকোনো সময় শুরু করতে পারি, কারণ, এটা নতুন কিছু না। এটা কখন শুরু হবে তা নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকার আমাদের সঙ্গে থাকার ওপর। কেননা বাংলাদেশ না চাইলে আমরা তাদের দেশে গিয়ে কিছু শুরু করতে পারি না।’

সু চি ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যকার চুক্তি অনুযায়ী যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার কথা উল্লেখ করেন এবং বাংলাদেশ এতে সম্মত আছে বলেও দাবি করেন।

তিনি আরো বলেন, রাখাইনের সংকট মিয়ানমারের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রভাব ফেলতে পারে। মিয়ানমার সরকার অর্থনৈতিক সংস্কারে পদক্ষেপ নিচ্ছে। বিশেষ করে কৃষি ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে জোর দিচ্ছে। দারিদ্র্য দূর করতে এ ধরনের আর্থিক সংস্কার প্রয়োজন। কেননা দারিদ্র্যের কারণেই চরমপন্থার সৃষ্টি হয়।

মিয়ানমারের কূটনৈতিক কমিউনিটিকে রাখাইনের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাসমূহ পরিদর্শনের প্রস্তাব দিলেও চলতি বছরের শুরুর দিকে জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের দেওয়া প্রস্তাব অনুযায়ী রাখাইনের প্রকৃত তথ্য অনুসন্ধানে একটি দলকে সেখানে প্রবেশের অনুমতি প্রদানের বিষয়টি আবারও নাকচ করেন সু চি। জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সু চি দাবি করেন, ৫ সেপ্টেম্বরের পর থেকে রাখাইনে আর কোনো অভিযান হয়নি। এরপরও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশে আসার ব্যাপারে জানতে চাইলে সু চি বলেন, এত বিপুল রোহিঙ্গা শরণার্থী কেন আসছে, তার কারণ খোঁজার চেষ্টা করছে মিয়ানমার সরকার।

প্রসঙ্গত, গত ২৪ আগস্ট রাখাইনে পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে- এ অভিযোগে পরদিন থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী অভিযান শুরু করে। রোহিঙ্গাদের হত্যা-নির্যাতন ও তাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। নিজেদের বাঁচাতে রোহিঙ্গারা সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে ঢোকে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, ২৫ আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় সোয়া চার লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।

পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বলছে, বিদ্রোহীদের দমনের নামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা মুসলমানদের হত্যা, নির্যাতন ও ধর্ষণ করছে এবং তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছে। এ অবস্থায় জাতিসংঘ বলছে, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ‘জাতিগতভাবে নির্মূল’ করছে মিয়ানমার।

এ জাতীয় আরও খবর