ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ২০ কিলোমিটার অংশের গর্ত, খানাখন্দে মরণফাঁদ (ভিডিও)
---
সড়ক সেতু মন্ত্রী ১০ দিনের মধ্যে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক সংস্কারের নির্দেশ দিলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়িত হয়নি।
দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করার কারণে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশের প্রায় ২০ কিলোমিটার রাস্তার বেহাল দশা। সড়কটির মধ্যে বড় বড় গর্ত হওয়ায় বর্তমানে এই মহাসড়ক দিয়ে যান চলাচলে ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পরিবহনের যাত্রী এবং চালকরা।
এ অবস্থায় সড়ক বিভাগ বলছে, পরিকল্পিতভাবে মহাসড়কের পুনর্নির্মাণ ছাড়া আর কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নেই। সরেজমিন দেখা গেছে, কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের সরাইল উপজেলার বিশ্বরোড মোড় থেকে সদর উপজেলার উজানিসার পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার মহাসড়ক এখন খানাখন্দে ভরপুর। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় সড়কের মাঝখানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে বর্তমানে বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এই বেহাল মহাসড়ক দিয়ে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার গাড়িগুলো ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে। এতে করে যানবাহনের যাত্রীরা খুবই কষ্ট করছে। পবিত্র ঈদুল আজহার আগে যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে সড়কটির সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ জেলার বিশিষ্টজনেরা।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ২৫ হাজার যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু মহাসড়কের সরাইল উপজেলার বিশ্বরোডের মোড় থেকে সদর উপজেলার উজানিসার পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার রাস্তা ভাঙাচুরা থাকায় প্রায় যানবাহন বিকল হচ্ছে। ভেঙে যাচ্ছে যানবাহনের মূল্যবান যন্ত্রপাতি। তা ছাড়া প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে এই সড়ক দিয়ে যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করে। তারা বলেন, দ্রুত রাস্তাটির সংস্কার করা না হলে এই মহাসড়কের দুর্ঘটনার পরিমাণ বেড়ে যাবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে ১৫টি জেলার প্রায় অন্তত ১৮ হাজার যানবাহন চলাচল করে। কর্তৃপক্ষের দাবি আগে রাস্তার সংস্কার না করায় ও বৃষ্টির জন্য সড়কটির নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় সড়কটির উন্নয়ন করা যাচ্ছে না। সড়ক বিভাগ কর্তৃপক্ষের দাবি ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষ যেন ভোগান্তিতে না পরে সে লক্ষ্য তারা কাজ করছেন।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি জেসমিন খানম বলেন, কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশের ২০ কিলোমিটার সড়ককে দেখলে সড়কই মনে হয় না। তিনি বলেন, খানাখন্দে ভরপুর এই সড়ক দিয়ে যাত্রীরা বিভিন্ন যানবাহনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে। তিনি জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে সড়ক সেতু মন্ত্রীকে সড়কটি পরিদর্শন করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনের সংসদ সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, সড়ক সেতু মন্ত্রী ১০ দিনের মধ্যে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক সংস্কারের নির্দেশ দেয়ার পর তিনি কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশের ২০ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের পদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে বলেছেন। কিন্তু এখনো রাস্তার সংস্কার কাজ শুরু হয়নি। তিনি বলেন, বর্তমানে ঝুঁকি নিয়ে এই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করে। এতে করে যাত্রীদের সীমাহীন ভোগান্তি হচ্ছে। তিনি এ ব্যাপারে সড়ক ও সেতু মন্ত্রীর সাথে আবারো কথা বলবেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী আবু এহতেশাম রাশেদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির সংস্কার না হওয়ায় বর্তমানে এর বেহাল দশা। তিনি বলেন, ঈদুল আজহার আগে ঘরমুখো মানুষ ও ঈদের পরে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের যাতায়াত নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সড়ক ও জনপথের কর্মীরা মহাসড়কের বড় বড় গর্তগুলো ইট, বালি, সুরকি দিয়ে ভরাট করার কাজ করছেন। তবে ঈদের পরবর্তী সময়ে সড়কের কাউতলী থেকে রামরাইল পর্যন্ত সড়কটি ভেঙে নতুন করে তৈরি করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, এই সময়ের মধ্যে সড়কে যাতে যানজটের সৃষ্টি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে।