কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দী ২ লক্ষাধিক মানুষ
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তাসহ সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৩২ সেন্টিমিটার ও সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্লাবিত হয়ে পড়েছে নতুন নতুন এলাকা।
চিলমারী, উলিপুর, কুড়িগ্রাম সদর, রৌমারী, রাজিবপুরসহ জেলার ৭ উপজেলার ৪০ ইউনিয়নের চরশ ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ৩৭ হাজার পরিবারের প্রায় দুই লাখ মানুষ। অনেক পরিবার বাড়ি-ঘর ছেড়ে উচুঁ জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে। এসব এলাকায় খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে একশ ৪৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
গত ছয় দিন ধরে পানিবন্দী পরিবারগুলোতে খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। অনেক পরিবার বাড়ি-ঘর ছেড়ে উচুঁ স্থানে আশ্রয় নিলেও হাতে কাজ না থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে অতি কষ্টে দিন পার করছে। সরকারিভাবে সামান্য ত্রাণ তৎপরতা শুরু হলেও অনেকের ভাগ্যেই তা জুটছে না।
উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেন জানান, এ পর্যন্ত মাত্র চার মেট্রিক টন চাল পেয়েছি যা মাত্র চারশ পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা সম্ভব। অথচ আমার ইউনিয়নে পানিবন্দী মানুষের সংখ্যা প্রায় তিন হাজার মানুষ। এসব চাল নিয়ে চরে যাচ্ছি বিতরণ করতে।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান বলেন, বন্যার্তদের জন্য দুইশ ৫০ মেট্রিকটন চাল ও পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে জেলার ৯ উপজেলায় সাতশ ৭১ হেক্টর জমির আউশ ধান, সবজি, বীজতলা, আখ ও পাটসহ বিভিন্ন ফসল বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ১২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৩২ সেন্টিমিটার ও সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি ১৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বেড়েছে তিস্তাসহ অন্যান্য নদীর পানি।