g বাংলা ভাইয়ের ‘ভাগ্নে হাসানই’ জেএমবির সোহেল মাহফুজ | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

মঙ্গলবার, ১৮ই জুলাই, ২০১৭ ইং ৩রা শ্রাবণ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

বাংলা ভাইয়ের ‘ভাগ্নে হাসানই’ জেএমবির সোহেল মাহফুজ

AmaderBrahmanbaria.COM
জুলাই ১১, ২০১৭

---

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল রাজশাহীর বাগমারায় ২০-২৫ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র নিয়ে সর্বহারা নিধনের অভিযানে নামে। তারা গ্রামে ঢুকে পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির আঞ্চলিক নেতা মনোয়ার হোসেন বাবুকে ধরে এনে স্থানীয় স্কুল মাঠে প্রকাশ্যে গলা কেটে হত্যা করে। সর্বহারা নিধনের অভিযানে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা তাদের হাতে থাকা অস্ত্রে বাবুর রক্ত মেখে নেয়। সেই অস্ত্র নিয়েই তারা বাগমারা এলাকায় মিছিল করে। এই অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাই। আর বাংলা ভাইকে মোটর সাইকেলে করে বাগমারা এলাকায় ঘুরে বেড়াতেন এক যুবক। বাংলা ভাই তাকে ‘ভাগ্নে হাসান’ বলে ডাকতেন। এই ভাগ্নে হাসানই গত শুক্রবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে গ্রেফতার হওয়া জঙ্গি সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা মাহফুজ।

জেএমবির ২০০৪ সালের এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত ৯০ দিনের বেশিরভাগ অভিযানে সহযোগী ছিলেন ভাগ্নে হাসান। তার কাজ ছিল বাংলা ভাইকে বাগমারার বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যাওয়া। সর্বহারা নিধনের নামে জেএমবির জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ (জেএমজেবি) নামের ব্যানারে তাদের অভিযান শুরু হয়। এই অভিযানে ওসমান বাবু, দীপংকর, শহীদুল, আব্দুল কাইয়ুম বাদশা, খেজুর আলীসহ ৭ জনকে হত্যা করা হয়। অভিযান চলাকালে শায়খ আবদুর রহমান ভারতীয় চর সন্দেহে দুইজনকে প্রকাশ্যে জবাই করে হত্যা করে। ওই দুই ভারতীয় বাগমারা এলাকায় পাগল বেশে ঘোরাফেরা করছিল। তারা হিন্দীতে কথা বলতো। বাংলায় কথা বলতে পারতো না বলে তাদের প্রতি জেএমবি’র সন্দেহ হয়। অভিযান চলাকালে রাজশাহীর তত্কালীন এসপি মাসুদ মিয়া, নওগাঁর তত্কালীন এসপি ফজলুর রহমান ও নাটোরের তত্কালীন এসপি সরাসরি তাদের সহযোগিতা করেছিলেন।

২০০৪ সালের ১ মে বাগমারার গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে বাংলা ভাইয়ের সঙ্গে সাংবাদিকদের একটি গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সাংবাদিকরা রাজশাহীর পুঠিয়া এলাকা দিয়ে বাগমারায় প্রবেশের সময় তাহেরপুর এলাকায় বাংলা ভাই সাংবাদিকদের স্বাগত জানায়। ওই সময় বাংলা ভাইয়ের নির্দেশ ছাড়া বাগমারা এলাকায় বাইরে থেকে কেউ প্রবেশ করতে পারতো না। তাহেরপুর এলাকায় ভাগ্নে হাসান মোটর সাইকেলে করে বাংলা ভাইকে সঙ্গে আনেন। মারিয়া গ্রামে জাহাঙ্গীর চেয়ারম্যানের বাড়িতে সাংবাদিকদের সঙ্গে বাংলা ভাইয়ের গোপন বৈঠকের সময় ভাগ্নে হাসান সাংবাদিকদের আপ্যায়নে ব্যস্ত ছিলেন। ২০০৬ সালের ১০ ডিসেম্বর জাহাঙ্গীর চেয়ারম্যানকে জেএমবি ও সর্বহারার সমন্বয়ে গঠিত একটি গ্রুপ গলা কেটে হত্যা করে।

সোহেল মাহফুজের একটি দুর্ধর্ষ অপারেশন ছিল ২০০৪ সালের মে’ মাসের শেষের দিকে। বাগমারার শ্রীপুর ইউনিয়নের খয়রাবিল গ্রামে এক রাতে পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির এক গ্রুপের সঙ্গে বাংলা ভাইয়ের ক্যাডারদের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। জেএমবির ওই গ্রুপে নেতৃত্ব দেয় ভাগ্নে হাসান ওরফে সোহেল মাহফুজ। দুই পক্ষে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। প্রায় অর্ধশত ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। এক পর্যায়ে চরমপন্থী গ্রুপের ১০-১২ জন সদস্য জেএমবি’র হাতে ধরা পড়ে। এই অভিযানের পর ভাগ্নে হাসান বাংলা ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হন। এর পুরষ্কার হিসেবে সোহেল মাহফুজকে জেএমবি’র কর্মী থেকে এহসার সদস্য পদে পদোন্নতি দেয়া হয়।

সোহেল ও রাজীব গান্ধীকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে:

রাজধানীর ধানমন্ডি থানার এক মামলায় গুলশানের হলি আর্টিজান হামলার অন্যতম আসামি জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধীকে ছয় দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকা মহানগর হাকিম আব্দুল্লাহ আল মাসুদ রিমান্ডের এ আদেশ দেন। এর আগে ধানমন্ডি থানার সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য দশ দিন রিমান্ড নেওয়ার আবেদন করেন পুলিশের কাউন্টার টেররিজমের উপ-পরিদর্শক রফিক উদ্দিন। এর আগে রবিবার জেএমবি নেতা সোহেল মাহফুজকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। সোহেল মাহফুজের বিরুদ্ধে হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় ব্যবহূত গ্রেনেড সরবরাহের অভিযোগ রয়েছে। রাজীব গান্ধী ও সোহেল মাহফুজকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে।

এ জাতীয় আরও খবর