ষোড়শ সংশোধনীর রায় বিপক্ষে যাওয়ায় ফরহাদ মজহারকে অপহরণ : ফখরুল
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীতে আদালতের রায় সরকারের বিরুদ্ধে যাওয়ায় ফরহাদ মজহারকে অপহরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, যখনই সরকারের বিরুদ্ধে কোনো কিছু যায় তখনই এমন ঘটনা ঘটে। ষোড়শ সংশোধনীর রায়টি দেয়ার পরই এ ঘটনাটি ঘটেছে। এটি একটি ড্রাইভার্সন। মজার কথা হচ্ছে, ফরহাদ মজহারকে আজকে যদি না পাওয়া যেত আমরা কি করতাম? কি করার ছিল? কারণ পুলিশ যেভাবে কথা বলছে, তাতে করে বোঝা যাচ্ছে অপরাধ ফরহাদ মজহারেরই।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ফরহাদ মজহারের কোনো দোষ এখনও আমরা পাইনি এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, হোয়াট ডাস ইউ মিন ইট দ্যাট? তারা কি বুঝাতে যান? আমি অবাক হয়ে যাই। সরকার কোনো ঘটনারই কোনো প্রকৃত তথ্য তুলে ধরে না।
ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা সব সময় বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলছি। আমরাই সবচেয়ে বড় ভিকটিম। বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার যে অবস্থা তাতে আমরা যারা বিরোধী দল করি তারা এটার বড় ভোগান্তি পোহাচ্ছি। ষোড়শ সংশোধনীর ব্যাপারটা যখন এল এবং পার্লামেন্টকেই তারা ক্ষমতা দিল। তখন আমরা আতঙ্কিত হয়ে উঠেছিলাম। কারণ বিচারকরা সঠিক বিচার করতে পারবে কি না সন্দেহ থাকবে। সেদিক থেকে আমি মনে করি এটি একটি নন স্টেপ ফরওয়ার্ড। এখন বিচারপতিরা আইনগতভাবে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে। তাদের মধ্যে ভীতি থাকবে না। কিন্তু আমাদের এটি দেখতে হবে যে পূর্ণাঙ্গ রায়ে কি আসে।
তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের কিছুটা আসলেও নিম্ন আদালতের অবস্থা আরও খারাপ। আমরা যারা প্রতিনিয়ত কোর্টে যাচ্ছি তারা জানি সরকার কীভাবে নিম্ন আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার করছে।
সরকারের নির্বাচনী প্রচারণার সমালোচনা করে তিনি বলেন, সরকার মুখে নির্বাচনের ধোঁয়া তোলার চেষ্টা করছে। একটা আবহ তৈরি করতে চাচ্ছে। কিন্তু অন্যদিকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিরোধী দলকে সুযোগ সুবিধা ভোগ করার যে অধিকার দিতে হবে তার কোনো লক্ষণই দেখছি না। উপরন্তু আমরা দেখছি যারা ভিন্ন মত পোষণ করছে, সরকারের কাজের সমালোচনা করে তাদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন আরও বেড়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা কখনও চিন্তাও করিনি যে কবি ফরহাদ মজহারের মত একজন মানুষকে অপহরণ করা হবে। এটি একটি অবিশ্বাস্য বিষয়। কিন্তু আসলে এটি অবিশ্বাস্য নয়। কারণ সরকার আমাদের অনেক নেতাকেই গুম করছে। আমাদের সিনিয়র নেতা থেকে শুরু করে ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, যুবদলের নেতাকর্মীদের গুম করছে।
নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, শিগগিরই নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জনগণের সামনে আসবেন। আসা করছি সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। তারা এটিকে মেনে নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন দেবেন।
ফখরুল বলেন, স্বাভাবিকভাবে নির্বাচন হলে তারা ক্ষমতায় আসবে না এটা তারা বিভিন্ন মাধ্যমে জেনেছে। আর ক্ষমতায় না আসতে পারলে কি হবে তা তাদের সাধারণ সম্পাদক বলে দিয়েছেন। আমি আর বলতে চাই না। সেজন্যই তারা আবারও অবৈধভাবে নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসতে চান।