মঙ্গলবার, ১৩ই জুন, ২০১৭ ইং ৩০শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

রমজানে আরো বাড়লো নিত্যপণ্যের দাম

AmaderBrahmanbaria.COM
জুন ২, ২০১৭

---

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : রমজানকে কেন্দ্র করে প্রতিবারের মতো এবারো বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। শুক্রবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার, নিউমার্কেট, হাতিরপুলসহ বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এ চিত্র উঠে এসেছে। পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে অসুবিধায় পড়েছেন ক্রেতাসাধারণ।

রাজধানীতে চলতি সপ্তাহে আরেক দফা বেড়েছে চালের দাম। প্রায় সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা হারে। খুচরা বাজারে এখন মোটা চালের দাম কেজিপ্রতি ৪৫-৪৮ টাকা। কিছুদিন আগেও যা কেজিতে এক দুই টাকা কম ছিল। এছাড়া মানভেদে মিনিকেট চাল কেজিপ্রতি ৫৮ থেকে ৬২ টাকা, নাজির ৫২ থেকে ৫৮, আতপ চাল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে মানভেদে কেজিপ্রতি ৯০ থেকে ১২০ টাকা।

বাজার ঘুরে দেখা যায় অন্যান্য নিত্য পণ্যও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়, ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়। যা গত সপ্তাহের তুলনায় বেশি দামে বিকি্র হচ্ছে। একইভাবে বিভিন্ন ডাল জাতীয় পণ্যও গত সপ্তাহের তুলনায় বেশি দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা ও বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকা। এছাড়া মুড়ি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে।

চলতি সপ্তাহে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে রসুনের দাম। দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। যা গত সপ্তাহের তুলনায় ১৫ থেকে ২০ টাকা হারে বেড়েছে। এছাড়া আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। যা এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি বেড়েছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। তবে পেয়াজের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

চলতি সপ্তাহে বাজারে বিভিন্ন সবজির দামও বেশি। সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে বেগুন। এ সপ্তাহে বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ধুন্দল, চিচিঙ্গা, ঢেঁড়স, করলা ও ঝিঙে আগের থেকে বেশি দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

এছাড়া বাজারে লালশাক, পু্ঁইশাক, কলমিশাক, পালংশাক, কুমড়াশাক ও লাউশাক পাওয়া যাচ্ছে। তবে শাকের আঁটি আগের দামেই সাইজভেদে ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলুও আগের মতো ১৮ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

চলতি সপ্তাহে মাংশের দামও বেশি। গরুর মাংস ৫০০ থেকে ৫২০ টাকা, খাসির মাংস ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে রোজায় বিক্রির জন্য প্রতি কেজি গরুর মাংস ৪৭৫ এবং খাসির মাংস ৭২৫ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। কিন্তু বাজারে এই দামে কোথাও মাংস বিক্রি হতে দেখা যায়নি।

এছাড়া ব্রয়লার মুরগিও কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, লেয়ার ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, দেশি মুরগি ৩৫০ থেকে ৩৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতাদের অভিযোগের তীর ব্যবসায়ীদের দিকে। রাজধানীর নিউমার্কেটে বাজার করছে আসা ঢাকা কলেজের ছাত্র সেলিম পারভেজ বিবার্তাকে বলেন, বিক্রেতারা রোজার সময় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সব কিছুর দাম বাড়িয়েছেন। কারণ রোজার দুই এক দিন আগে ও পরের বাজার পরিস্থিতি দেখলে সব কিছু স্পষ্ট হয়। এছাড়া বাজারের অসাধু ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার আশায় বিশাল মজুদ গড়ে তুলেছেন।

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেন ব্যবসায়ীরা। দাম বৃদ্ধির বিষয়ে রাজধানীর নিউ মার্কেট কাচা বাজারের পাইকারী ব্যবসায়ীরা ফয়সাল মাহমুদ বিবার্তাকে জানান, প্রায় প্রতি দিনই আমাদের পণ্য কিনে বিক্রি করতে হয়। রমজানে প্রতি বছরই পণ্যের দাম কিছুটা বাড়ে। কারণ এ সময় চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সাপ্লাই দেয়া হয়ে ওঠে না। তাই দামটা একটু বেড়ে যায়। ক্রেতারা বিষয়টা না বুঝেই অভিযোগ গুলো করেন বলে জানান তিনি।

এ জাতীয় আরও খবর