মঙ্গলবার, ৩০শে মে, ২০১৭ ইং ১৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

অস্ট্রিয়া যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

AmaderBrahmanbaria.COM
মে ২৮, ২০১৭
news-image

---

আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা- আইএইএ’র ৬০ বছর পূর্তিতে এক সম্মেলনে যোগ দিতে সোমবার অস্ট্রিয়া যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দুই দিনের এই সরকারি সফরে তিনি অস্ট্রিয়ার ফেডারেল প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ভ্যান ডের ব্যালেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন এবং চ্যান্সেলর ক্রিস্টিয়ান কার্নের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেবেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আইএইএ সম্মেলনে অংশগ্রহণ বিশ্বশান্তি রক্ষা এবং পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধে বাংলাদেশের দৃঢ় অবস্থানের বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করবে। তাতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে, কেননা বাংলাদেশ সবসময় পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের পক্ষে কথা বলেছে।

প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা সোমবার সকাল ৯টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে ভিয়েনার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন।

ভিয়েনায় শেখ হাসিনা উঠবেন হোটেল ইম্পেরিয়ালে। প্রথম দিনই তিনি ইউরোপপ্রবাসী বাংলাদেশিদের একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মঙ্গলবার সকালে ভিয়েনা ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে আইএইএ’র ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সম্মেলনের উদ্বোধনে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

আফ্রিকা, এশিয়া, ইউরোপ, দক্ষিণ আমেরিকা ও ক্যারিবিয়া অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের নেতারাও ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন দ্য আইএইএ টেকনিক্যাল কো-অপারেশন প্রোগ্রাম: সিক্সটি ইয়ারস অ্যান্ড বিয়ন্ড- কন্ট্রিবিউটিং টু ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক দুই দিনের এই সম্মেলনে অংশ নেবেন।

পরে সেখানেই আইএইএ’র মহাপরিচালক ইউকিয়া আমানোর সঙ্গে বৈঠক করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

স্বাধীন হওয়ার পরপরই ১৯৭২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থার সদস্য হয় বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার স্বামী প্রয়াত পরমাণু বিজ্ঞানী এম এ ওয়াজেদ মিয়া সে সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইএইএ’র কারিগরি সহযোগিতা কীভাবে বাংলাদেশকে পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের সক্ষমতা অর্জন এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে তা প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় তুলে ধরবেন।

মঙ্গলবার দুপুরে অস্ট্রিয়ার ফেডারেল চ্যান্সেলরের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগে দুই নেতার একান্ত বৈঠক হবে।

মাহমুদ আলী জানান, দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে কৃষি ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে সহযোগিতা, দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু, কূটনৈতিক পর্যায়ে নিয়মিত আলোচনার মত বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে।

পাশাপাশি বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ, অভিবাসন, উদ্বাস্তু সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ব্রেক্সিট পরবর্তী ইউরোপের পরিস্থিতি নিয়ে তাদের মধ্যে কথা হবে।

নিয়মিত কূটনৈতিক আলোচনার আয়োজন করতে একটি সমঝোতা স্মারকও সই হওয়ার কথা রয়েছে দুই দেশের মধ্যে।

এই সফর অস্ট্রিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও মজবুত করবে বলে আশা প্রকাশ করেন মাহমুদ আলী।

তিনি জানান, সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে ১৯৭২ সালে যে ক’টি ইউরোপীয় দেশ স্বীকৃতি দিয়েছিল, তার মধ্যে অস্ট্রিয়া একটি। বাংলাদেশ ২০১৪ সালে ভিয়েনায় দূতাবাস স্থাপন করে।

বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে অস্ট্রিয়ার তখনকার চ্যান্সেলর ব্রুনো ক্রিয়েস্কির ভূমিকার কথা স্মরণ করে ২০১২ সালে তাকে ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা’ দেয় বাংলাদেশ।

সফরের শেষ কর্মসূচি হিসাবে মঙ্গলবার অস্ট্রিয়ার ফেডারেল প্রেসিডেন্টের সাথে বৈঠক করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

ভিয়েনা থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে বুধবার সকালে শেখ হাসিনার ঢাকা পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান ভিয়েনা সফরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গী হচ্ছেন।

এ জাতীয় আরও খবর